সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আইনী কার্যক্রম
, ২১ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৯ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ২৭ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ১২ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) আইন ও জিহাদ
মুসলমানদের চিরশত্রু ইহুদী, নাসারা, হিন্দু, বৌদ্ধসহ সমস্ত কাফির, বেদ্বীন, বদদ্বীনরা ছলে, বলে, কৌশলে মুসলমানদের জাহিরী-বাতিনী তথা সর্বোত ক্ষতি সাধনে তৎপর। যার বাস্তবতা দেখতে পাই আমাদের দেশেও। এদেশ থেকে ইসলামী অনুশাসন, তাহযীব-তামাদ্দুন উঠিয়ে দিয়ে মুসলমানদেরকে কোনঠাসা করার লক্ষ্যে এই কাফির গোষ্ঠী কখনো মিডিয়াকে, কখনো শাসক শ্রেণীকে এবং কখনো আদালতকে ব্যবহার করে তাদের স্বার্থ উদ্ধার করে যাচ্ছে। এমনকি শাসক শ্রেণী কোন বিষয়ে সম্মত না হলে, আনুগত্যতা না দেখালে তাদের পরিবর্তনেও সা¤্রাজ্যবাদীরা দেশের আদালতকে ব্যবহার করছে।
তাই, বর্তমান সময়ের যিনি সম্মানিত ইমাম ও মুজাদ্দিদ, ছহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সুলত্বানুন নাছীর, আল ক্বউইউল আউওয়াল, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বইয়ুমুয্যামান, ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মহাসম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থ বিরোধী কাফির ও মুনাফিকদের যাবতীয় ষড়যন্ত্র ও কূট কৌশল নস্যাৎ করে সত্যিকার অর্থেই ইসলামী অনুশাসন প্রতিষ্ঠায় বহুমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন। সেগুলোর অন্যতম “আইনী কার্যক্রম”। সুবহানাল্লাহ। যা উনার ঐতিহাসিক অভূতপূর্ব আজিমুশ্বান তাজদীদ মুবারক।
এ তাজদীদী কার্যক্রমের সফলতা আজ দিবালোকের চেয়েও সুস্পষ্ট। ফলশ্রুতিতে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থ বিরোধী কাফির ও মুনাফিকদের অনেক ষড়যন্ত্র ও কূট কৌশল নস্যাৎ হয়েছে, হচ্ছে এবং হতেই থাকবে। ইনশাআল্লাহ!
পাঠকের উপলব্ধির স্বার্থে নীচে বিশেষ কিছু আইনী কার্যক্রমের তালিকা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হল।
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
শরীয়ত বহির্ভূত যাকাত সংগ্রহ: ‘বিদ্যানন্দ’র চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাস ও সাধারণ সম্পাদক শিপ্রা দাসকে লিগ্যাল নোটিশ
সম্মানিত শরীয়তে যে সকল খাতে যাকাত দেয়ার কথা বলা হয়েছে সেই সকল খাতের বাইরে মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে যাকাত সংগ্রহ করে ভিন্ন খাতে ব্যয়ের মাধ্যমে শরীয়ত অবমাননা করায় ‘বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের’ চেয়ারম্যান কিশোর কুমার দাস ও সাধারণ সম্পাদক শিপ্রা দাসকে পৃথক লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন দৈনিক আল ইহসান ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত উনার সম্পাদক আল্লামা মুহম্মদ মাহবুবুল আলম। রেজিস্টার্ড ডাকযোগে নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি মুহম্মদ মাসুদুজ্জামান।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন নামের স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠান তাদের ওয়েবসাইটের দ্বারা বাংলাদেশের মুসলিমদের যাকাত সংগ্রহ করে এবং সংগৃহীত যাকাতের অর্থ দিয়ে কৃষকের জন্য সার-বীজ, মহিলাদের জন্য গরু-বাছুর, সেলাই মেশিন ক্রয়, রিকশা ক্রয় ইত্যাদি কাজ করে থাকে।
অথচ যাকাত পবিত্র দ্বীন ইসলামের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ ও একটি পবিত্র ইবাদত। পবিত্র কুরআন মাজীদে “যাকাত” শব্দের উল্লেখ এসেছে ৩২ বার। নামাযের পরে সবচেয়ে বেশি বার “যাকাত” শব্দের উল্লেখ করা হয়েছে। যাকাত যেহেতু একটি পবিত্র ইবাদত, অন্যান্য ইবাদতের মতো এই ইবাদতটিও পবিত্র দ্বীন ইসলামের শরীয়ত তথা কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সম্পন্ন করতে হয়। পবিত্র কুরআন মাজীদ ও হাদীছ শরীফে যাকাত আদায় ও বিতরণ সংক্রান্ত বিস্তারিত বিধিবিধান রয়েছে। যাকাতের একটি অন্যতম প্রধান হুকুম হচ্ছে, যাকাত আদায়কারী ও যাকাত গ্রহীতা উভয়কেই দ্বীনদার মুসলিম হতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ হুকুম হচ্ছে, কোনো রকম শর্ত ছাড়াই যাকাত গ্রহীতাকে যাকাতের পুরো অর্থের মালিকানা প্রদান করতে হবে; যাকাত গ্রহীতা সেই অর্থ কিভাবে খরচ করবেন সেটার ইখতিয়ার মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তিনি পুরোপুরিই যাকাত গ্রহীতাকে প্রদান করেছেন। যাকাত বিতরণকারী নিজে থেকে কোনো শর্ত আরোপ করতে পারবে না।
কিন্তু বিদ্যানন্দ নামক প্রতিষ্ঠানটি তাদের ব্যানারে বাংলাদেশের মুসলিমদের যাকাত সংগ্রহ করছে। অথচ বিদ্যানন্দ নামের প্রতিষ্ঠানটি “শিক্ষা অনুকূল স্বেচ্ছাসেবক সংস্থা (সরকারী নিবন্ধন নম্বর এস-১২২৫৮/২০১৫)” হিসেবে নিবন্ধিত। বাংলাদেশে প্রচলিত The Societies Registration Act, 1860- এর অধীনে কেবল "societies established for the promotion of literature, science, or the fine arts, or for the diffusion of useful knowledge, the diffusion of political education or for charitable purposes" শ্রেণির প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন প্রদান করা হয়। The Societies Registration Act, ১৮৬০-এর অধীনে কোনো ধর্মীয় ইবাদত পালনের লাইসেন্স দেওয়া হয় না। কোনো ধর্মীয় ইবাদত/উপাসনা যথেচ্ছভাবে পালন করা যায় না। প্রত্যেকটি ধর্মের নির্ধারিত সীমারেখার মধ্যেই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে হয়। বাংলাদেশের নাগরিক মাত্রই এই ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রাপ্য। বাংলাদেশের সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা-সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে।
নোটিশে আইনজীবি জানান, আমার মক্কেল একজন দ্বীনদার মুসলিম। মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীনের নাযিলকৃত পবিত্র দ্বীন ইসলামকে তিনি গভীরভাবে ভালোবাসেন। তিনি বাংলাদেশের একজন সম্মানিত নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের সংবিধানে তার দ্বীন পালনের অধিকার স্বীকৃত রয়েছে। আমার মক্কেল আপনাদের কাছে জানতে চান, আপনারা (নোটিশগ্রহীতাগণ) বাংলাদেশের কোন আইনের বলে পবিত্র দ্বীন ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ যাকাত আদায় করছেন? কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ইবাদতকে যথেচ্ছভাবে পালনের লাইসেন্স/এখতিয়ার আপনারা কোথা থেকে পেয়েছেন? মুসলিমদের পবিত্র ইবাদত যাকাত আদায়ের শর্ত [যেমন, মুসলিম হওয়া] আপনারা লঙ্ঘন করতে পারেন কিনা? যাকাত গ্রহীতাকে যাকাতের অর্থ নিজের ইচ্ছামতো খরচ করতে না দিয়ে আপনারা যাকাতের টাকায় রিকশা, সেলাই মেশিন, গরু-বাছুর ইত্যাদি কিনে দিচ্ছেন কোন্ শরীয়ত অনুসরণ করে? যাকাত গ্রহীতা কেন আপনাদের গৃহীত প্রকল্প অনুযায়ী যাকাতের টাকা ভোগ করবেন? অথচ যাকাত গ্রহীতার নিজের বিবেচনামতো যাকাতের অর্থ খরচ করার এখতিয়ার স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যাকাত গ্রহীতাকে প্রদান করেছেন। কিছু কথিত আলেমকে দিয়ে একটি তথাকথিত “বিশেষজ্ঞ” কমিটি বা “উপদেষ্টা” কমিটি গঠন করলেই একটি অবৈধ কাজ বা আইনগত কর্তৃত্ববিহীন কাজ কোনোক্রমেই বৈধ হয়ে যায় না।
নোটিশে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের দ-বিধি, ১৮৬০-এর ২৯৫(ক) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মানুসারীদের কোনো শ্রেণির ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত ও হিংসাকৃতভাবে লিখিত বা উচ্চারিত কথা দ্বারা সে শ্রেণির ধর্মকে বা ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমানিত করে বা অপমানিত করার চেষ্টা করে, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নোটিশগ্রহীতারা কোনো আইনগত এখতিয়ার ও ধর্মীয় যোগ্যতা ছাড়াই পবিত্র দ্বীন ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ ও পবিত্র ইবাদত যাকাতকে শরীয়তবিরোধী পন্থায় সংগ্রহ ও বিতরণ করছেন। আপনাদের ওয়েবসাইটে বর্ণিত যাকাত সংক্রান্ত বিকৃত আয়োজনের মাধ্যমে আপনারা (নোটিশগ্রহীতাগণ) এই নোটিশদাতার দ্বীনি অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছেন।
নোটিশদাতা নোটিশে ৩ দিনের মধ্যে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনকে- সুস্পষ্ট বিবৃতি দিয়ে শরীয়তবিরোধী পন্থায় যাকাত সংগ্রহ ও বিতরণ বন্ধ, দীর্ঘদিন ধরে পবিত্র দ্বীন ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ ও পবিত্র ইবাদত যাকাত সম্বন্ধে অন্যায়, অন্যায্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশনের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনা এবং পবিত্র দ্বীন ইসলামের অবমাননামূলক কর্মকা- ভবিষ্যতে আর করবে না এমন প্রতিশ্রুতি প্রদানের জন্য আহবান জানিয়েছে। অন্যথায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারী প্রদান করা হয়েছে।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)