মহাসম্মানিত ঐতিহাসিক হুদায়বিয়ার জিহাদ (১৭)
, ২৯ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২২ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) আইন ও জিহাদ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা মতে মহাসম্মানিত ঐতিহাসিক গাযওয়াতুল হুদায়বিয়াহ:
গত পর্বের পর---
قَالَ مَعْمَرٌ فَأَخْبَرَنِي أَيُّوبُ عَنْ عِكْرِمَةَ، أَنَّهُ لَمَّا جَاءَ سُهَيْلُ بْنُ عَمْرٍو قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ "لَقَدْ سَهُلَ لَكُمْ مِنْ أَمْرِكُمْ". قَالَ مَعْمَرٌ قَالَ الزُّهْرِيُّ فِي حَدِيثِهِ فَجَاءَ سُهَيْلُ بْنُ عَمْرٍو فَقَالَ هَاتِ، اكْتُبْ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ كِتَابًا، فَدَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْكَاتِبَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ "بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ". قَالَ سُهَيْلٌ أَمَّا الرَّحْمَنُ فَوَاللَّهِ مَا أَدْرِي مَا هُوَ وَلَكِنِ اكْتُبْ بِاسْمِكَ اللَّهُمَّ. كَمَا كُنْتَ تَكْتُبُ. فَقَالَ الْمُسْلِمُونَ وَاللَّهِ لاَ نَكْتُبُهَا إِلاَّ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ "اكْتُبْ بِاسْمِكَ اللَّهُمَّ". ثُمَّ قَالَ "هَذَا مَا قَاضَى عَلَيْهِ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ". فَقَالَ سُهَيْلٌ وَاللَّهِ لَوْ كُنَّا نَعْلَمُ أَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ مَا صَدَدْنَاكَ عَنِ الْبَيْتِ وَلاَ قَاتَلْنَاكَ، وَلَكِنِ اكْتُبْ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ عَلَيْهِمَا السَّلاَمَ. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ "وَاللهِ إِنِّي لَرَسُولُ اللَّهِ وَإِنْ كَذَّبْتُمُونِي. اكْتُبْ مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ عَلَيْهِمَا السَّلاَمَ". قَالَ الزُّهْرِيُّ وَذَلِكَ لِقَوْلِهِ "لاَ يَسْأَلُونِي خُطَّةً يُعَظِّمُونَ فِيهَا حُرُمَاتِ اللَّهِ إِلاَّ أَعْطَيْتُهُمْ إِيَّاهَا". فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ "عَلَى أَنْ تُخَلُّوا بَيْنَنَا وَبَيْنَ الْبَيْتِ فَنَطُوفَ بِهِ". فَقَالَ سُهَيْلٌ وَاللَّهِ لاَ تَتَحَدَّثُ الْعَرَبُ أَنَّا أُخِذْنَا ضُغْطَةً وَلَكِنْ ذَلِكَ مِنَ الْعَامِ الْمُقْبِلِ فَكَتَبَ. فَقَالَ سُهَيْلٌ وَعَلَى أَنَّهُ لاَ يَأْتِيكَ مِنَّا رَجُلٌ، وَإِنْ كَانَ عَلَى دِينِكَ، إِلاَّ رَدَدْتَهُ إِلَيْنَا. قَالَ الْمُسْلِمُونَ سُبْحَانَ اللَّهِ كَيْفَ يُرَدُّ إِلَى الْمُشْرِكِينَ وَقَدْ جَاءَ مُسْلِمًا فَبَيْنَمَا هُمْ كَذَلِكَ إِذْ دَخَلَ أَبُو جَنْدَلِ بْنُ سُهَيْلِ بْنِ عَمْرٍو يَرْسُفُ فِي قُيُودِهِ، وَقَدْ خَرَجَ مِنْ أَسْفَلِ مَكَّةَ، حَتَّى رَمَى بِنَفْسِهِ بَيْنَ أَظْهُرِ الْمُسْلِمِينَ. فَقَالَ سُهَيْلٌ هَذَا يَا مُحَمَّدُ أَوَّلُ مَا أُقَاضِيكَ عَلَيْهِ أَنْ تَرُدَّهُ إِلَىَّ. فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ "إِنَّا لَمْ نَقْضِ الْكِتَابَ بَعْدُ". قَالَ فَوَاللَّهِ إِذًا لَمْ أُصَالِحْكَ عَلَى شَىْءٍ أَبَدًا. قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ "فَأَجِزْهُ لِي". قَالَ مَا أَنَا بِمُجِيزِهِ لَكَ. قَالَ "بَلَى، فَافْعَلْ". قَالَ مَا أَنَا بِفَاعِلٍ. قَالَ مِكْرَزٌ بَلْ قَدْ أَجَزْنَاهُ لَكَ.
হযরত মা’মার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বর্ণিত হাদীছ শরীফে বলেছেন যে, কুরাইশদের পক্ষ থেকে হযরত সুহাইল ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এসে বললেন, আসুন আমাদের এবং আপনাদের মধ্যে একটি চুক্তিপত্র লিখি। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একজন লেখককে ডাকলেন। এরপর তিনি বললেন, (লিখুন)
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ এতে হযরত সুহাইল ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! রহমান কে? আমরা তা জানি না, বরং পূর্বে আপনি যেমন লিখতেন, লিখুন-
بِاسْمِكَ اللَّهُمَّ
(উল্লেখ্য হযরত সুহাইল ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তখনও পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেননি, পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের পর উনি পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। )
সম্মানিত মুসলমানগণ বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমরাبِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ছাড়া আর কিছু লিখবো না। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, লিখুন-
بِاسْمِكَ اللَّهُمَّ তারপর বললেন, এটা যার উপর চুক্তিবদ্ধ হয়েছে তিনি হলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। তখন হযরত সুহাইল ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমরা যদি আপনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেই বিশ্বাস করতাম, তাহলে আপনাকে পবিত্র কা’বা শরীফ উনার সম্মানিত যিয়ারত মুবারক দেখে বাধা দিতাম না এবং আপনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে উদ্যত হতাম না। বরং আপনি লিখুন, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ (উনার তরফ থেকে)। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, নিশ্চয়ই আমি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কিন্তু তোমরা যদি আমাকে অস্বীকার করো তবে লিখো, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ। ’
হযরত যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এটি এ জন্য যে, তিনি বলেছিলেন, তারা যদি মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র বস্তুগুলোর সম্মান করার কোন কথা দাবি করে তাহলে আমি তাদের সে দাবি মেনে নিবো। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, এ চুক্তি করো যে, তারা আমাদের ও পবিত্র কা’বা শরীফের মধ্যে কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে না, যাতে আমরা ইতমিনানের সাথে সম্মানিত তাওয়াফ করতে পারি। হযরত সুহাইল ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আরববাসীরা যেন এ কথা বলার সুযোগ না পায় যে, এ প্রস্তাব গ্রহণে আমাদের বাধ্য করা হয়েছে। বরং আগামী বছর তা হতে পারে। তারপর লেখা হলো। তিনি বললেন, এই বিষয়টিও লিখা হোক যে, আমাদের কোন লোক যদি আপনার কাছে চলে আসে এবং সে যদিও আপনার দ্বীন গ্রহণ করে থাকে, তবুও তাকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিবেন। তখন মুসলমানগণ বললেন, যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহন করে আমাদের কাছে এসেছে, তাকে কেমন করে মুশরিকদের কাছে ফেরত দেওয়া যেতে পারে? (বুখারী শরীফ, হাদীছ শরীফ: ২৭৩১, ২৭৩২ ও ২৭৩৩)
-মুহম্মদ নাজমুল হুদা ফরাজী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত জিহাদের ময়দানে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বীরত্ব মুবারক (২)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬৩)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত জিহাদ মুসলমানদের একটি বিশেষ ফরয ইবাদত
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬২)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত জিহাদ উনার ময়দানে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমগণ একজন অপরজনকে প্রাধান্য দেয়ার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)