কৃষিসহ সকল খাতে গবেষণায় সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশী গবেষক ও বিজ্ঞানীরা।
পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে গবেষণার কাঙ্খিত সাফল্য পাচ্ছেনা দেশ। সরকারের উচিত, গবেষণা খাতে উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা করা।
, ১৮ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১১ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১১ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ২৫ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মন্তব্য কলাম
সম্ভাবনা থাকার পরও বাংলাদেশের গবেষণা খাত পুরোপুরিভাবে অবহেলিত। কিন্তু এরপরও গবেষণায় বিশেষ করে কৃষি গবেষণায় অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করছে দেশের গবেষক ও বিজ্ঞানীরা। তবে উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে গবেষণায় যে পরিমাণ সাফল্য অর্জন করার কথা ছিলো তা হচ্ছে না। এতে করে সম্ভাবনা অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে। বিকশিত হচ্ছেনা। এজন্য সরকারের প্রতি গবেষণায় বাজেট বরাদ্দের আহবান জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, সেবাধর্মী নিত্য-নতুন উদ্ভাবনে উপকৃত দেশের প্রান্তিক মানুষ। গবেষকদের এমন সাফল্য দেশের সীমানা ছাড়িয়ে সমাদৃত বিশ্বব্যাপী। বিশ^কে তাক লাগিয়ে দেয়া এমন সফলতা আসছে দেশের কৃষি বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের হাত ধরে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ধানের জিনগত পরিবর্তনে ব্রির বিজ্ঞানীরা এই প্রথম সফলতা পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট গবেষকরা বলছে, এটি মূলত ফসলের জিন পরিবর্তন করার আধুনিক ও বিতর্কমুক্ত একটি প্রযুক্তি। ২০২০ সালের শুরুতে ব্রির ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কীটতত্ত্ববিদ ড. পান্না আলীর নেতৃত্বে দেশের একদল বিজ্ঞানী এ প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা শুরু করে। সম্প্রতি তাঁরা সফলতা পেয়েছে। সুগন্ধি ও পোকা প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য সন্নিবেশ করে তারা সম্ভাব্য নতুন জাতের ধানের ২৪টি গাছ পেয়েছে। এতে উজ্জীবিত হয়ে গবেষণা জোরদার করেছে তারা।
ব্রির বিজ্ঞানীরা বলেছে, ক্রিসপার ক্যাস-৯ পদ্ধতিতে সুগন্ধি বৈশিষ্ট্য এবং মাজরা ও কারেন্ট পোকা (বাদামি ঘাসফড়িং) প্রতিরোধী জিন ঢুকিয়ে ধানের নতুন জাত উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে।
এ নিয়ে গত ৪৬ বছরে ১০০টি ধানের জাত কৃষককে উপহার দিয়েছে জাতীয় এ সংস্থা। নতুন উদ্ভাবিত ধানের বীজ চাষাবাদের জন্য আগামী আমন মৌসুমে কৃষকের হাতে তুলে দেয়া হবে। আমন মৌসুম জুলাইয়ের দিকে শুরু হয়। বিজ্ঞানীরা জানায়, ব্রি এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত ধানের মধ্যে লবণাক্তসহিষ্ণু জাত এনেছে ৯টি। এগুলো হচ্ছে- ব্রি-২৩, ৪০, ৪১, ৪৭, ৫৩, ৫৪, ৬১, ৬৭ ও ৭৩। পানিমগ্নতাসহিষ্ণু জাত- ব্রি-৫১, ৫২ ও ৭৯টি। খরা সহিষ্ণু জাত- ব্রি-৫৬, ৫৭, ৬৬, ৭১। সবই রোপা আমন। এছাড়া ব্রি ঠা-াসহিষ্ণু ৪টি, লবণাক্ততা ও পানিমগ্নতাসহিষ্ণু একটি, জোয়ার-ভাটার ধান ২টি এবং পানিবদ্ধতার ২টি জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে ব্রি-৭১ এক মিটার গভীর পানিতেও ফলন দেয়।
শুধু কৃষিতেই নয় চিকিৎসাক্ষেত্রেও ব্যাপক বিপ্লব ঘটেছে বাংলাদেশে। দেশীয় চিকিৎসকের উদ্ভাবিত নিউমোনিয়া চিকিৎসায় ব্যবহৃত ‘বাবল সিপিএপি পদ্ধতি’ টেক্কা দিতে চলছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার মানকেও। নিউমোনিয়া চিকিৎসায় বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার মান (ডব্লিউএইচও স্ট্যান্ডার্ড) মেনে অক্সিজেন সরবরাহ হলেও শিশু মৃত্যুর হার ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। তবে ড. চিশতীর উদ্ভাবিত নতুন এই পদ্ধতি বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার ওই মানের চেয়েও ৭৫ শতাংশ অধিক শিশুর মৃত্যু রোধ করতে সক্ষম হয়েছে।
দেশে প্রথমবারের মতো ব্লাস্ট প্রতিরোধী গমের জাত উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছে গম গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। জাতটি একই সঙ্গে জিংকসমৃদ্ধও। বারি গম-৩৩ নামের গমের নতুন এই জাতটি আবাদের ফলে কৃষকের উৎপাদন যেমন বাড়াবে তেমনি তা যোগান দেবে জিংকেরও। কৃষকের মাঠ পর্যায়ে আসছে আরও উচ্চফলশীল নতুন জাতের ধান। সবচেয়ে প্রচলিত ও মেগা প্রজাতির জাত ব্রি-২৮’র চেয়েও এর ফলন হবে বেশি। সদ্য অবমুক্ত হওয়া ব্রি ধান-৮১ নামের নতুন এই জাত বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ ১৫ বছরের নিরলস পরিশ্রমে উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে। ব্রি ধান-২৮ রোপণে হেক্টর প্রতি ৬ টন ফলন পাওয়া সম্ভব হলেও নতুন জাতের ব্রি-৮১’র ক্ষেত্রে উৎপাদন হবে সাড়ে ৬ টন করে। আর উপযুক্ত পরিচর্চা পেলে ফলন হতে পারে ৮ টনও।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা কিছুদিন পরপর দেশের নানা খাতে নানা অভাবনীয় সাফল্যময় আবিস্কার দেশকে উপহার দিচ্ছে। তবে বাংলাদেশে গবেষণা খাতে অবহেলা বহুদিনের। যার কারনে বাংলাদেশের গবেষণাখাতে প্রকৃত যে সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে তা সত্যিকার অর্থে বিকশিত হতে পারছে না। প্রতিবছর গড়ে ২০ কোটি টাকাও বাজেট রাখা হচ্ছেনা। বাংলাদেশের গবেষণা খাতের মূল নেয়ামক যে মেধাশক্তি সেই মেধাশক্তির প্রকৃত মূল্যায়ন দেশে করা হচ্ছেনা। নানা রকম আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারনে দেশের গবেষণাভিত্তিক মেধাশক্তি বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে উন্নত গবেষণা অবকাঠামো না থাকার কারণে প্রতি বছর গবেষণায় আগ্রহী প্রায় কয়েক শত শিক্ষার্থী ও গবেষক গবেষণা খাতে উচ্চশিক্ষা এবং প্রকৃত মূল্যায়ন লাভের আশায় দেশত্যাগ করছে। যাকে এককথায় মেধাপাচার বলা যায় এবং সেটা দেশের জন্য উদ্বেগজনক ও ক্ষতিকর। মূলত, এসব শিক্ষার্থী ও গবেষকরা তাদের মেধাকে বিকশিত করার প্ল্যাটফর্ম খুঁজে। দেশে না পেয়ে তারা বিদেশমুখী হয় এবং বিদেশে বিভিন্ন গবেষণাভিত্তিক কোম্পানিগুলো তাদের লুফে নিয়ে তাদের দেশ গবেষণার মাধ্যমে উন্নত করে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশে মেধার অভাব নেই। আর সেদিক বিবেচনা করে যদি সরকার দেশের জন্য অত্যাবশ্যকীয় গবেষণা খাতে উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাহলে তার সাফল্য শুধু ধান, পাট তথা কৃষি এবং চিকিৎসা খাতের ভেতরই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি, ব্লু-ইকোনমি, সফটওয়্যার, উন্নয়ন ও সবুজ জ্বালানিতে উন্নত গবেষণা করে অতি অল্প সময়ে দেশকে কল্পনাতীত উন্নত ও সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রে পরিণত করা যাবে। চীন, জাপান, ইংল্যান্ড, রাশিয়া, আমেরিকা এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত তাদের দেশে গবেষণা খাতে প্রতি বছর ব্যাপক বরাদ্দ রেখে থাকে। এর সুফল তারা পাচ্ছে, চীনের কৃষি বর্তমানে সারাবিশ্বে ২ নম্বর অবস্থান ধরে রেখেছে। বাংলাদেশ সরকারও যদি যথাযথো বাজেট দেয় তাহলে বাংলাদেশ হবে নব নব নানা উদ্ভাবনের আধার। আর এতে করে বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে সবচেয়ে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে। ইনশাআল্লাহ!
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অবশেষে কাশ্মীরীদের আলাদা মর্যাদা ৩৭০ ধরেও বাতিল করল মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপি সরকার কাশ্মীর কি তবে আরেক ফিলিস্তিন হতে চলছে?
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নারিকেল দ্বীপে মানুষের চেয়ে কুকুরের মর্যাদা বেশী দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। মানুষ না খেয়ে মরছে, শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে, চিকিৎসার অভাবে মানুষ মরছে, বিদ্যুতের অভাবে অন্ধকারসহ নানা দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সেদিকে নজর নেই, কার্যক্রম নেই, তৎপরতা নেই কিন্তু কুকুরের জন্য ৫০০০ ডিম ও চিকিৎসক ও চিকিৎসা সরঞ্জমাদী পাঠানো হচ্ছে
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে নাটক-সিনেমা করা ও দেখা হারাম- ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র তা মানে না। ভারতীয় অপরাধমূলক টিভি সিরিজ দেখে হত্যা, ব্যাংক ডাকাতি, পরকিয়ার মতো অপরাধ আয়ত্ত্ব করছে দেশবাসী। কিন্তু নাটক-সিনেমার ভয়াবহ কুফল রাষ্ট্র অস্বীকার করতে পারছে না। ডিশ এন্টেনার প্রসারে হিন্দি সিরিয়ালের কুপ্রভাবে দেশ জাতি বিপর্যস্ত।
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ঢাকা আর কত মারাত্মক দূষিত হলে ও বসবাসের অযোগ্য হলে এবং জনজীবন বিপর্যস্থ হলে বিকেন্দ্রীকরণ করার কথা উঠবে? কাজ শুরু হবে? সেন্টমার্টিন নিয়ে এত হৈচৈ আর ৩ কোটি লোকের জনপদ ঢাকা নিয়ে রহস্যজনক নীরবতা!
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
অবশেষে কাশ্মীরীদের আলাদা মর্যাদা ৩৭০ ধরেও বাতিল করল মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপি সরকার কাশ্মীর কি তবে আরেক ফিলিস্তিন হতে চলছে?
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাপবিত্র রওজা শরীফ ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফের পবিত্র ভূমি জাজিরাতুল আরবকে অপবিত্র করে দিন দিন পরিণত করা হচ্ছে অবাধ পাপাচারের পঙ্কিলরাজ্যে নাউযুবিল্লাহ! কা’বা শরীফের আদলে তৈরি মঞ্চে চলছে খোলামেলা পোশাকে ফ্যাশন শো, উদ্দাম কনসার্ট, বিক্রি হয়েছে ৩৬ লাখ কোটি টাকার ভারতীয় সিনেমার টিকিট; পালিত হচ্ছে হ্যালোইনও! নাউযুবিল্লাহ!
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অবশেষে কাশ্মীরীদের আলাদা মর্যাদা ৩৭০ ধরেও বাতিল করল মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপি সরকার কাশ্মীর কি তবে আরেক ফিলিস্তিন হতে চলছে?
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অবশেষে কাশ্মীরীদের আলাদা মর্যাদা ৩৭০ ধরেও বাতিল করল মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপি সরকার কাশ্মীর কি তবে আরেক ফিলিস্তিন হতে চলছে?
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ : কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণা ও ক্বিয়ামতের তথ্য
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার অনবদ্য তাজদীদ ‘আত-তাক্বউইমুশ শামসী’ সম্পর্কে জানা ও পালন করা এবং শুকরিয়া আদায় করা মুসলমানদের জন্য ফরয। মুসলমান আর কতকাল গাফিল ও জাহিল থাকবে?
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: ভয়ঙ্কর জেদ, মহা দাম্ভিকতা, চরম সীমালঙ্ঘন, প্রতিহিংসা, ক্ষমতা কুক্ষিগত করা ইত্যাদি কুরিপুর কারণে সরকারের পতন কিন্তু কুরিপুর সংজ্ঞা, প্রতিকার, পরিশুদ্ধির প্রক্রিয়ার বর্ণনা সংবিধানে তথা রাষ্ট্রীয় কোন কিতাবে নেই তাহলে রাষ্ট্রের সংস্কার হবে কীভাবে? নাগরিক সুরক্ষা হবে কেমনে?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভীনদেশী অ্যাপের ফাঁদে পড়ে বিপথে যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম বাড়ছে নারীপাচার, দেশে বাড়ছে অশ্লীলতা ও পর্ণোগ্রাফির প্রচার কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করেই একটি মহল এসব অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে এসব অপসংস্কৃতি নির্মূলে দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)