সম্মানিত সারিয়্যাতুল র্কুরা বা বি’রে মাঊনাহ উনার ঘটনা (৭)
, ১৫ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩০ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) আইন ও জিহাদ
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ: لَمْ يَقْنُتْ رَسُولُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الصُّبْحِ إِلَّا شَهْرًا، ثُمَّ تَرَكَهُ لَمْ يَقْنُتْ قَبْلَهُ وَلَا بَعْدَهُ.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একমাস ফজর নামাযে কুনূতে নাযিলা পাঠ করেছেন। অতঃপর তিনি উহা পরিত্যাগ করেছেন। এর পূর্বে ও পরে কখনই তিনি আর ফজর নামাযে কুনূতে নাযিলা পাঠ করেননি।” সুবহানাল্লাহ! (শরহু সুনানে ইবনে মাজাহ শরীফ, মিরকাতুল মাফাতীহ শরহে মিশকাতুল মাছাবীহ)
স্মরণীয় যে, আমাদের হানাফী মাযহাব মতে পবিত্র ফজর নামাযে কুনূতে নাযিলা পাঠ করার হুকুম ও আমল মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে। যেমন, এ প্রসঙ্গে বুখারী শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘উমদাতুল কা¡রী’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছে, হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মতে, যখন মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর
لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ
“এ বিষয় আপনার আর কিছু করার প্রয়োজন নেই।” (পবিত্র সূরা আলে-ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১২৮) অর্থাৎ এ পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হওয়ার পর থেকেই ফজর নামাযে কুনূতে নাযিলা পাঠ করা মানসূখ হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে ‘হিদায়া’ কিতাবের শরাহ ‘আইনী’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-
وَلِاَبِىْ حَضْرَتْ حَنِيْفَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَحَضْرَتْ مُحَمَّدِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ )اَنَّهُ( اَىْ اَنَّ الْقُنُوْتَ فِىْ الْفَجْرِ )مَنْسُوْخٌ ( ....... )وَلَامُتَابِعَةٌ فِيْهِ( اَىْ فِى الْمَنْسُوْخِ لِاَنَّ الْاِتِّبَاعَ فِيْهِ لَا يَجُوْزُ.
অর্থ: “হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মতে অর্থাৎ হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূতে নাযিলা পাঠ করার হুকুম মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে। আর মানসূখ বা রহিত বিষয়কে অনুসরণ করা বা এর উপর আমল করা সম্পূর্ণ নাজায়িয বা হারাম। আর মানসূখ হয়ে যাওয়ার কারণেই পরবর্তীতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উনাদের সময়ে বহু জিহাদ ও বালা-মুছীবত সংঘটিত হওয়া সত্ত্বেও নামাযে কুনূতে নাযিলা পাঠ করেননি। (আল বিনায়া ফি শরহিল হিদায়া/৫৯৭ পৃষ্ঠা)
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কুনূতে নাযিলা পাঠ করাকে বিদয়াত বা বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ বলে উল্লেখ করেছেন।
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ إِبْرَاهِيمَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ، أَنَّ حَضْرَتْ اِبْنَ مَسْعُودٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ لَمْ يَقْنُتْ هُوَ وَلَا أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِهِ حَتَّى فَارَقَ الدُّنْيَا يَعْنِي فِي صَلَاةِ الْفَجْرِ.
অর্থ: হযরত ইবরাহীম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সহ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কেউ জীবনে কখনো ফজর নামাযে কুনূতে নাযিলা পাঠ করেননি।” (আল আছার ফি-মুহম্মদ ইবনে হাসান)
কাজেই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ফজর নামাযে কুনূতে নাযিলা পাঠ করেছেন একথা যেরূপ সত্য তদ্রƒপ পরবর্তীতে তা মানসূখ হয়ে যাওয়ায় তিনি তা পরিত্যাগ করেছেন। অর্থাৎ এর পূর্বে ও পরে তিনি এবং উনার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কখনো ফজর নামাযে কুনূত পাঠ করেননি বরং এটাকে বিদয়াত বলে রায় দিয়েছেন- এটাও সত্য। (মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ: ১৩২-১৫২ তম সংখ্যা)
অতএব, হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূতে নাযিলা পাঠ করার হুকুম মানসূখ বা রহিত হয়ে গেছে। আর মানসূখ হওয়া বিষয়ের উপর আমল করা অর্থাৎ ফজর নামাযে কুনূতে নাযিলা পাঠ করা সম্পূর্ণ নাজায়িয ও হারাম।
-আল্লামা সাইয়্যিদ শাবীব আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত জিহাদের ময়দানে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বীরত্ব মুবারক (২)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬৩)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত জিহাদ মুসলমানদের একটি বিশেষ ফরয ইবাদত
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬২)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত জিহাদ উনার ময়দানে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমগণ একজন অপরজনকে প্রাধান্য দেয়ার বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৯)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৭)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)