বাদশাহ মুহিউদ্দিন মুহম্মদ আওরঙ্গজেব আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দ্বীন ইসলাম পালন এবং পরহেজগারীতা
, ১১ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৫ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন, ৩রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ২০ই মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) ইতিহাস
বাদশাহ মুহম্মদ আওরঙ্গজেব আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মুঘল শাসকে পরিণত হওয়ার পরপরই শাসন পরিচালনা ও নীতিমালাকে ইসলামী আঙ্গিকে রূপদান করেন। মুসলমানরা যাতে নিজেদের চরিত্র ও নৈতিকতাবোধ অটুট রাখে সেজন্য প্রধান শহরগুলোতে মুহতাসিব বা পরীক্ষা-নিরীক্ষাকারী নিযুক্ত করেন, যারা মানুষকে সম্মানিত শরীয়ত অনুসরণে নিয়োজিত ছিলেন। মদ পান করা বা করানো, জুয়া এবং পতিতাবৃত্তির মতো অশ্লীল কার্যকলাপ ও মানবতাবিরোধী সকল প্রকার অপকর্ম নিষিদ্ধ ঘোষণা করে নির্মূল করে দেন। ইচ্ছাকৃতভাবে যারা পতিতাবৃত্তিতে লিপ্ত ছিলো তাদের তিনি দেশত্যাগের নির্দেশ দেন এবং যারা অনিচ্ছাকৃতভাবে পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়েছে তাদেরকে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে স্বাভাবিক জীবনধারাতে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।
মুদ্রায় পবিত্র কালেমা শরীফ খোদাই বন্ধ করেন যাতে অমুসলিমরা তার অবমাননা না করতে পারে। বাদশাহ আকবর প্রবর্তিত ভ্রান্ত দ্বীনে এলাহী বাতিলের পাশাপাশি এলাহী সনও বাতিল করেন এবং হিজরী সনের পুন:প্রচলন করেন। তিনি সম্মানিত মাজহাব উনার দিক থেকে হানাফী ছিলেন। তাই তিনি বিশ^ বিখ্যাত ফতোয়া গ্রন্থ ‘ফাতাওয়া আলমগীরী হানাফী মাজহাব অনুসারী আলিমগণ উনাদের সরাসরি নেতৃত্বে রচনা ও সংকলন করেন।
তিনি সারাদিন সালতানাতের কর্মকান্ড করার পরও ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাত্র ৩ ঘন্টা ঘুমাতেন। উনার স্মৃতিশক্তি ছিল অতি উচু স্তরের। শাসনকার্যে তিনি সবসময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত খোলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনুসরণ-অনুকরণ করার কোশেশ করতেন।
তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ নকল এবং টুপি সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। রাজকোষ থেকে নিজের জন্য এক কানাকড়িও গ্রহণ করা বৈধ মনে করতেন না। তিনি জনসাধারণের হাল হকিকত সম্পর্কে পরিপূর্ণরূপে অবগত থাকতেন। তিনি উনার বাদশাহীকে মহান আল্লাহ পাক উনার দান এবং সালতানাতের কোষাগারকে আমানত মনে করতেন।
তৎকালীন ঐতিহাসিকরা লিখেছেন, বাদশাহ মুহিউদ্দিন মুহম্মদ আওরঙ্গজেব আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন ইনসাফ ও ন্যায়ের প্রতীক। উনার পঞ্চাশ বছরের শাসনকালে উনার কাছ থেকে জুলুম ও বেইনসাফের কোন একটি কাজও প্রকাশ পায়নি। তিনি নিজের দ্বীনী দায়িত্ব পালনে কখনও ত্রুটি করেননি। যাবতীয় ইবাদত বন্দেগীর প্রতি তিনি সম্মান প্রদর্শন করতেন। ফরয নামায ছাড়াও তিনি নফল ইবাদত করতেন। সুন্নত মুবারক উনার পাবন্দী ছিলেন। পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস ছাড়াও তিনি সারাবছরই নফল রোজা রাখতেন। প্রতি সপ্তাহে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফসহ তিনটি রোজা রাখতেন। উনার দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি অকৃত্রিম মুহব্বত মুবারক এবং পরহেজগারীতার কারণেই তিনি জনসাধারণের কাছে জিন্দাপীর হিসেবে ব্যাপক মশহুর ছিলেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র আযানের জন্য ২২ জন মুসলমানের শহীদ হওয়ার ঈমানদীপ্ত ঘটনা
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুলতান আব্দুল হামিদ ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইহুদীবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে দৃঢ়চিত্ততা (বিস্তারিত)
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যুগে যুগে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের ইতিহাস (২)
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যুগে যুগে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের ইতিহাস (১)
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নেপোলিয়নের সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ এবং ১২ই শরীফ পালন নিয়ে ঐতিহাসিক তথ্য
২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বাংলার ইতিহাসের স্বর্ণপাতায় মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ সংক্রান্ত ঐতিহাসিক একটি ঘটনা
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বাংলাদেশে দ্বীন ইসলাম উনার আগমন ও মুসলিম শাসনের ইতিহাস (৪)
২৯ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বাংলাদেশে দ্বীন ইসলাম উনার আগমন ও মুসলিম শাসনের ইতিহাস (৩)
২৮ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশে দ্বীন ইসলাম উনার আগমন ও মুসলিম শাসনের ইতিহাস (২)
২৭ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বাংলাদেশে দ্বীন ইসলাম উনার আগমনের ইতিহাস (১)
২৪ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৩৮)
২৪ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)