স্থাপত্য-নিদর্শন
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক চুনাখোলা মসজিদ
, ১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) স্থাপত্য নিদর্শন

চুনাখোলা মসজিদ বাগেরহাটের ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় এক মাইল উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। এই ঐতিহাসিক মসজিদটি এক গম্বুজবিশিষ্ট বর্গাকৃতির মসজিদ। চুনাখোলা গ্রামে অবস্থিত বলেই এ মসজিদটির এরূপ নামকরণ হয়েছে। প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক মসজিদটির ব্যাপক মেরামত ও সংস্কার করা হয়েছে।
ইটের তৈরী বর্গাকৃতি মসজিদটির বাইরে প্রতি দিকের দৈর্ঘ্য ১২.৫০ মিটার। ২.১৪ মিটার পুরু দেয়ালের পূর্ব দিকে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে মোট পাঁচটি ধনুকাকৃতির খিলান দরজা রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ দিকের দরজার প্রশস্ততা পূর্ব দেয়ালের মাঝের দরজার সমান। কিবলা দেয়ালের অভ্যন্তরভাগে পূর্ব দিকের প্রবেশপথ বরাবর খিলানযুক্ত তিনটি ধনুকাকৃতির মিহরাব আছে।
প্রসঙ্গত, ইংরেজি অক্ষরের ‘ইউ, কে উল্টো করলে যেরকম ধনুকাকৃতির হয় সেই ধরনের কাঠামোকেই সাধারণত স্থাপত্য পরিভাষায় খিলান বলা হয়। খিলান এক ধরনের বাঁকা কাঠামো যা একটি উঁচু স্থান প্রসারিত করে এবং উচু গম্বুজের আকৃতির স্থানটি এটির উপরে ভার থাকে বা নাও থাকতে পারে। খিলান গুম্বুজের মত দেখতে হলেও, গম্বুজকে ছাদ গঠনের একটি অবিচ্ছিন্ন খিলান হিসাবে গণ্য করা হয়।
আয়তাকার কেন্দ্রীয় মিহরাবটি চিরাচরিত নিয়মে দেয়ালের বাইরে সম্প্রসারিত এবং তা ছাদ পর্যন্ত উঁচু। সম্পূর্ণ ছাদ জুড়ে অর্ধগোলাকৃতির বিশাল গম্বুজটি ভেতরের দিকে স্কুইঞ্চের উপর স্থাপিত। স্কুইঞ্চ হচ্ছে একটি গম্বুজের স্থাপত্যশৈলী যা একটি বর্গাকার কক্ষের উপরের দিকের কোণগুলোকে পূর্ণ করে যাতে তা একটি অষ্টকাকৃতি অথবা গোলাকার গম্বুজধারণের জন্য ভিত্তি তৈরি করতে পারে।
মসজিদের বাইরের চার কোণের চারটি মিনার খান জাহানী রীতি অনুযায়ী গোলাকার এবং নির্দিষ্ট দূরত্বে ঢালাই করা হয়েছে। ইমারতের তিনটি কার্নিশ চিরাচরিত বাংলার স্থাপত্যরীতি অনুযায়ী বাঁকানো।
মসজিদে ব্যবহৃত পোড়ামাটির অলঙ্করণে তেমন কোনো স্বাতন্ত্র্য লক্ষ্য করা যায় না। অলঙ্করণের ক্ষেত্রে জালির কাজ, ফুল ও লতাপাতার ডিজাইন, যুক্ত বৃত্ত, চতুর্ভুজ এবং প্রচলিত ঝুলন্ত নকশা স্থান পেয়েছে। বর্তমানে এ অলঙ্করণগুলি শুধু মিহরাবে, খিলানের উপরে এবং বাঁকানো কার্নিশে লক্ষ করা যায়। সাধারণত ছাঁদ বা দেওয়ালের যে অংশ বাহিরে থাকে, দেয়াল এবং ছাঁদের সংযোগস্থলের কোন এবং খিলান ও গম্বুজের সংযোগস্থলের কোণকেই কার্নিশ বলা হয়। স্থানীয় জনশ্রুতি মতে, মসজিদটি খান জাহান আলী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কোনো কর্মচারী নির্মাণ করেছিলেন। নির্মাণরীতিতেও খান জাহান আলী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মসজিদের স্থাপত্যর মিল পাওয়া যায়। সূত্র: বাংলাপিডিয়া।
-মুহম্মদ নাঈম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
টাইম ম্যাগাজিনের তালিকায় আশুলিয়ার জেবুন নেসা মসজিদ
২১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১৪)
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (৩)
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (২)
০৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (১)
২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১১)
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (৩)
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১০)
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (২)
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (১)
০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
শীতে প্রোটিনের অভাবে হতে পারে যে ক্ষতি
৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘অদৃশ্য আদেশে’ থেকেই সংস্কার হয়েছিল যে ঐতিহাসিক মসজিদের
২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)