তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকগুলো আদৌ ইসলামী নয়। সুদবিহীন ব্যাংক নয়। দ্বীনদার, পরহেজগার মুসলমানের জন্য সুদবিহীন ইসলামী ব্যাংকের সুবিধা ও সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
, ০২ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১১ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০৯ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২৬ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
প্রাপ্ত তথ্য মতে, প্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশীদের মধ্যে ৩৯ দশমিক ৬ শতাংশের ব্যাংক হিসাব রয়েছে। বাংলাদেশে ঋণ ও আমানতের সুদের হারের ব্যবধান ৫ দশমিক ২ শতাংশ। প্রাপ্তবয়স্ক ২ দশমিক ৩ শতাংশ ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের সাড়ে ৪ শতাংশ অর্থাৎ ২৮ লাখ ৪০ হাজার ধর্মপ্রাণ বিত্তশালী লোক দ্বীনি কারণে ব্যাংকে যান না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ০.২ শতাংশ উপজাতির ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকার শুধু তৎপরই নয়; বরং বদ্ধপরিকর। সেক্ষেত্রে যারা দ্বীনি কারণে ব্যাংক সেবা নিচ্ছে না, তাদের সংখ্যা ৪.৫ শতাংশ হওয়ার পরও তাদের ধর্মীয় অনুভুতির প্রতি সরকারের পদক্ষেপ কোথায়?
বলার অপেক্ষা রাখে না, বর্তমানে যে ‘তথাকথিত ইসলামী ব্যাংক’ রয়েছে তা সম্মানিত ইসলামী ভাবধারায় পরিচালিত নয় বিধায় তাকে প্রকৃতপক্ষে ‘ইসলামী ব্যাংক’ বলা যায় না। বরং পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নাম ভাঙ্গিয়ে এখানে সুদের ব্যবস্থা আরো বেশি করা যায় বলে এখন শুধু বাংলাদেশের ধর্মব্যবসায়ীরাই নয়, ইউরোপ-আমেরিকার বিধর্মীরাও তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকিংয়ে নেমেছে।
কুচক্রী ইহুদীদের পরিচালিত কয়েকটি ব্যাংক ‘তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকিং’ চালু করেছে, এটাকে ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কি বলা যেতে পারে? প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি যারা ইসলামী ব্যাংকিং করছে, তারা মানুষের সঙ্গে মারাত্মক প্রতারণা করছে।
বিশেষ করে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে সচল রয়েছে জামাতে মওদুদী পরিচালিত ‘ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড’। এ ব্যাংক ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক বলে দাবি করলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সম্মানিত ইসলামী শরিয়াহ উনার নিয়ম অনুসরণ করছে না। বরং মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে বাণিজ্যিকীকরণ করছে। জানা গেছে, ব্যাংকটির প্রায় ৭০ শতাংশ মালিকানা বিদেশীদের হাতে। আর ওইসব বিদেশীর মধ্যে ইহুদী ও অমুসলিমও রয়েছে। এছাড়া ব্যাংকটির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
‘ইসলামী ব্যাংক বংলাদেশ লিমিটেড’ প্রচলিত সুদী ব্যাংকের চেয়েও বেশি সুদ আদায় করছে- এ অভিযোগ এখন সবার মুখে মুখে। পাশাপাশি সব তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকেরই কার্যত একই অবস্থা। কোনো লোকসানগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের লোকসান তারা মেনে নিয়েছে এমন নজির নেই। বরং ইসলামী খোলসের অন্তরালেই কার্যতঃ চক্রবৃদ্ধিহারে সুদের প্রয়োগ ঠিকই করছে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড সুদের হার উল্লেখ না করলেও সেবা মাস ঘোষণা করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় টাঙানো ব্যানার এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে ‘মুদারাবা মাসিক মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয় কিংবা মুদারাবা আমানত হিসেবে মুনাফা অর্জনের অমিত সম্ভাবনা’ প্রভৃতি স্কীমের ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা চালায়।
উল্লেখ্য যে, শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংক ব্যবস্থার মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- ‘লাভ-লোকসানের ব্যাংকিং’। এই লাভ-লোকসানটা শরীয়াভিত্তিক ব্যাংক ব্যবস্থায় আগেই নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। ‘নিশ্চিত মুনাফা’ সুদেরই নামান্তর। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাউকে ঋণ দিয়ে নির্ধারিত হারে মুনাফা আদায়কে সুদ বলা হয়। তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকগুলো পরোক্ষভাবে এই সুদকে লভ্যাংশ কিংবা মুনাফা বলে দাবি করে।
ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থার মূল উপাদান হলো, প্রচলিত সুদী ব্যবস্থার মতো পূর্বনির্ধারিত সুদ (ওহঃবৎবংঃ) বলে কোনো কিছুই ইসলামী ব্যবস্থায় থাকতে পারবে না। ইসলামী ব্যবস্থায় গ্রাহকদেরকে মুনাফার অংশীদার করতে হয়। এ ধারণা বা বিশ্বাস মুসলমানগণ উনাদের মধ্যে এসেছে সম্মানিত ইসলামী অনুশাসন থেকে- যে ঐশী বিশ্বাস ও অনুশাসন তাদেরকে সুদ নেয়া ও দেয়া থেকে দূরে থাকতে বলেছে। মূলত, ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ধারণা খুবই সহজ ও বাস্তবসম্মত এবং সম্পূর্ণ যুক্তিভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত। ফলে অমুসলিমদের পক্ষেও সুদবিহীন ‘আর্থিক প্রডাক্টস’ তৈরি করতে কোনো অসুবিধা হয়নি। আজকে সুদবিহীন আর্থিক প্রডাক্টসের ক্রেতা বিধর্মীরাও।
কাজেই সুদবিহীন ও পূজিবাদবিরোধী সম্মানিত ইসলামী অর্থনীতির গুরুত্ব রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার দেশ- ‘বাংলাদেশ’কে জোরদারভাবে অনুধাবন করতে হবে। বিশেষ করে যারা দ্বীনদার মুসলমান, যারা সুদকে অত্যন্ত ঘৃণা করেন ও বর্জন করেন, উনাদের জন্য সুদমুক্ত অর্থনীতির ব্যবস্থা রাষ্ট্রীয়ভাবে করতে হবে। ০.২ উপজাতির সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষায় যদি সরকার নিবেদিত হতে পারে, তবে দ্বীনদার মুসলমানগণ উনাদের জন্যও সুদমুক্ত অর্থনীতি তথা ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে সুদমুক্ত অর্থনীতির সুফল পেতে হলে আমাদেরকে অনন্তকালব্যাপী পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ তথা পবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করতে হবে। এ লক্ষ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহিমান্বিত জীবনী মুবারক আলোচনা তথা সুদের ভয়াবহতা ও কঠোরতা সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনারও অনুসরণ করতে হবে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত মুবারক তথা মুবারক ফয়েয, তাওয়াজ্জুহ।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাপবিত্র রওজা শরীফ ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফের পবিত্র ভূমি জাজিরাতুল আরবকে অপবিত্র করে দিন দিন পরিণত করা হচ্ছে অবাধ পাপাচারের পঙ্কিলরাজ্যে নাউযুবিল্লাহ! কা’বা শরীফের আদলে তৈরি মঞ্চে চলছে খোলামেলা পোশাকে ফ্যাশন শো, উদ্দাম কনসার্ট, বিক্রি হয়েছে ৩৬ লাখ কোটি টাকার ভারতীয় সিনেমার টিকিট; পালিত হচ্ছে হ্যালোইনও! নাউযুবিল্লাহ!
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অবশেষে কাশ্মীরীদের আলাদা মর্যাদা ৩৭০ ধরেও বাতিল করল মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপি সরকার কাশ্মীর কি তবে আরেক ফিলিস্তিন হতে চলছে?
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অবশেষে কাশ্মীরীদের আলাদা মর্যাদা ৩৭০ ধরেও বাতিল করল মুসলিম বিদ্বেষী বিজেপি সরকার কাশ্মীর কি তবে আরেক ফিলিস্তিন হতে চলছে?
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ : কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণা ও ক্বিয়ামতের তথ্য
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার অনবদ্য তাজদীদ ‘আত-তাক্বউইমুশ শামসী’ সম্পর্কে জানা ও পালন করা এবং শুকরিয়া আদায় করা মুসলমানদের জন্য ফরয। মুসলমান আর কতকাল গাফিল ও জাহিল থাকবে?
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: ভয়ঙ্কর জেদ, মহা দাম্ভিকতা, চরম সীমালঙ্ঘন, প্রতিহিংসা, ক্ষমতা কুক্ষিগত করা ইত্যাদি কুরিপুর কারণে সরকারের পতন কিন্তু কুরিপুর সংজ্ঞা, প্রতিকার, পরিশুদ্ধির প্রক্রিয়ার বর্ণনা সংবিধানে তথা রাষ্ট্রীয় কোন কিতাবে নেই তাহলে রাষ্ট্রের সংস্কার হবে কীভাবে? নাগরিক সুরক্ষা হবে কেমনে?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভীনদেশী অ্যাপের ফাঁদে পড়ে বিপথে যাচ্ছে দেশের তরুণ প্রজন্ম বাড়ছে নারীপাচার, দেশে বাড়ছে অশ্লীলতা ও পর্ণোগ্রাফির প্রচার কিশোর-কিশোরীদের টার্গেট করেই একটি মহল এসব অপসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসার ঘটাচ্ছে এসব অপসংস্কৃতি নির্মূলে দ্বীন ইসলামই একমাত্র সমাধান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচারণার বিপরীতে রপ্তানি আসলে কতটা চাঙা হবে প্রকৃত রপ্তানি আয় আসলে কত? ১০ বছরে রপ্তানি বেশি দেখানো হয়েছে ৬৫ বিলিয়ন ডলার পেছনে রয়েছে ক্ষমতাসীনদের উন্নয়নের রাজনীতির মিথ্যাবুলি, মহা সাগর চুরি আর অর্থপাচারের নিকৃষ্ট কাহিনী
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আলোকে- সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ উনাদের কতিপয় ফযীলত মুবারক বর্ণনা।
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
১লা জানুয়ারি ২০২৫ থেকে সুইজারল্যান্ডে মুখ ঢেকে রাখলেই প্রায় ১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা (নাউযুবিল্লাহ) বোরকা পড়াকে সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপীয় দেশ পর্দার আড়ালে নারীদের বন্দী, বৈষম্য এবং পিছিয়ে পড়ার অপবাদ দিলেও বাস্তবতা হচ্ছে গোটা ইউরোপ-আমেরিকায় নারীর প্রতি বৈষম্য হয়রানি, সহিংসতা, অত্যাচার আর ব্যভিচারের মাত্রা ভয়াবহ পশ্চিমাদের বোরকা নিষিদ্ধের প্রবনতা শুধুই ইসলাম আর মুসলিম বিদ্বেষ (পর্ব-১)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
১০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চলচ্চিত্র নামক জাহান্নামী সংস্কৃতির ফাঁদে মুসলিম উম্মাহ। নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। সিনেমার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিস্তার ঘটছে ইসলামোফোবিয়ার। পরকালের কথা স্মরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)