স্থাপত্য-নিদর্শন
জাপানের টোকিও জামে মসজিদ
, ০২রা জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৮ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ২০ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) স্থাপত্য নিদর্শন
জাপানের টোকিও জামে মসজিদটি সর্বপ্রথম ১৯৩৮ সালে নির্মাণ হয়।
১৯১৭ খৃ: কমিউনিস্ট আগ্রাসনের সময় পূর্ব ইউরোপ ও বলকান অঞ্চলে রুশ কমিউনিষ্টদের অত্যাচারের শিকার হয়ে ঐ অঞ্চলের বহু মুসলমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হিজরত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় কাযান টার্কিশ মুসলমানদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অধিবাসী জাপানের রাজধানী টোকিওতে এসে বসতি স্থাপন করেন। টোকিওর যে অঞ্চলে মুসলমানগণ বসবাস করতেন, সে অঞ্চলের নামকরণ করা হয় ‘ইসলামী-মহল্লা’ যা আজও মেট্রোপলিটন সিটি টোকিওর ‘ইসলামিক ডিষ্ট্রিক্ট’ নামেই পরিচিত ও সরকারীভাবে নিবন্ধিত। পরবর্তীতে সেখানে মুসলমানদের বিশাল জনগোষ্ঠী তৈরি হয়। ১৯৩৮ খৃ: স্থানীয় মুসলমানগণ নিজস্ব উদ্যোগে বর্তমান টোকিও জামে মসজিদের মূল স্থাপনাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি বর্তমানে জাপানের সবচেয়ে বড় মসজিদ। এই মসজিদটির নির্মাণশৈলীতে উসমানীয় স্থাপত্যের প্রভাব রয়েছে। ১৯৮৬ খৃ: মসজিদটি পুননির্মাণ করা হয়।
এরপর ২০০০ খৃ: তুর্কি নকশায় নির্মিত হয় মসজিদটি। দুই হাজার মুসল্লি মসজিদটিতে একসঙ্গে নামায আদায় করতে পারেন। মসজিদের ১ম তলায় তুর্কি-ইসলামি বিভিন্ন জিনিসপত্রের প্রদর্শনী রয়েছে।
টোকিও জামে মসজিদ নির্মাণে জাপান সরকারের পাশাপাশি বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মিতসুবিশিসহ জাপানি অনেক কোম্পানি আর্থিকভাবে খিদমতে শরীক হয়।
মুসলিম জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে ১৯৩০ খৃ: দিকে জাপানিরা প্রথম গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকা গড়ে তোলে এবং প্রথম মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও ১৯৩১ খৃ: ভারতীয় মুসলিম অভিবাসীরা নাগোয়া মসজিদ এবং ১৯৩৫ খৃ: কোবে মসজিদ নির্মাণ করেন।
জাপানের রাজধানী টোকিও জামে মসজিদটি নির্মাণশৈলী ও সূক্ষ্মতার বিচারে একটি চমৎকার দর্শনীয় স্থাপনা। দেশটির রাজধানী টোকিওর ইয়োগি ইউহেরার নিরিবিলি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকে মসজিদটি শান্তির প্রতীক হিসেবে অবস্থান করছে।
মসজিদটির আয়তন প্রায় ৭৩৪ বর্গ মিটার এবং একটি ব্যাসমেন্ট ফ্লোরসহ তিনটি তলা রয়েছে যা মিলে প্রায় ১,৪৭৭ বর্গ মিটার আয়তন হয়। মসজিদটির প্রধান গম্বুজের উচ্চতা প্রায় ২৩.২৫ মিটার এবং ৬টি পিলার গম্বুজটির ভার বহন করে দাঁড়িয়ে আছে। পাশের মিনারের উচ্চতা ৪১.৪৮ মিটার।
উল্লেখ্য যে, মুসলমানদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে উনারা বসতী স্থাপন করেছেন, সেখানেই সর্বপ্রথম উনারা মসজিদ নির্মাণ করেছেন। জাপানের টোকিও মসজিদ ও এর আকাশ ছোঁয়া সুউচ্চ মিনার এই মহৎ বাস্তবতাকে বুকে ধারণ করে স্বগর্বে দাঁড়িয়ে আছে জাপানের রাজধানী টোকিওর প্রাণকেন্দ্রে।
সংকলনে: মুহম্মদ নাইম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৭)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাজীগঞ্জ দুর্গ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৬)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সুনামগঞ্জে কালের সাক্ষী শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী পাগলা বড় মসজিদ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
৫০০ বছরের ঐতিহাসিক নিদর্শন বাঘা শাহী মসজিদ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৫)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৩)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০২)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০১)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৪০০ বছরের আলোচিত প্রাচীন স্থাপত্য তেবাড়িয়া জামে মসজিদ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)