সম্মানিত সারিয়্যাতুল র্কুরা বা বি’রে মাঊনাহ উনার ঘটনা (৫)
, ২৭ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ১০ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২৬ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) আইন ও জিহাদ
ইবনে ওয়ারাকার হত্যা সম্পর্কে বলা হয়। আনাস ইবনে আব্বাস সুলামী ছিল তুয়াইমা ইবনে ’আদী ইবনে নাওফালের মামা। সে বি’রে মাঊনার দিন হযরত নাফি’ ইবনে বুদাইল ইবনে ওয়ারাকা খুযাইয়ী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে শহীদ করেছিল। সেদিন সে নি¤েœর কবিতাটি আবৃত্তি করেছিল-
تَرَكْت ابْنَ وَرْقَاءَ الْخُزَاعِيّ ثَاوِيًا ... بِمُعْتَرَكِ تَسْفِي عَلَيْهِ الْأَعَاصِرُ
আমি ওয়ারাকা খুযাইর সন্তানকে যুদ্ধের ময়দানে ফেলে রেখে এসেছি, যেখানে ধূলা-বালি মিশ্রিত প্রচন্ড বায়ু প্রবাহিত হয়।
ذَكَرْت أَبَا الرّيّانِ لَمّا رَأَيْته ... وَأَيْقَنْت أَنّي عِنْدَ ذَلِكَ ثَائِرُ
উনার এ অবস্থা দেখে আমার আবূ রাইয়ানের কথা মনে পড়ল। আমি ভেবে নিশ্চিত হলাম যে, তার হত্যার প্রতিশোধ নিতে পেরেছি।
আবূ রাইয়ান হচ্ছে, ত্বয়াইমা ইবনে ’আদীর উপনাম।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত নাফি’ ইবনে বুদাইল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার প্রতি শোক প্রকাশ করে বলেন-
رَحِمَ اللهُ حَضْرَتْ نَافِعَ بْنَ بُدَيْلٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ ... رَحْمَةَ الْمُبْتَغِي ثَوَابَ الْجِهَادِ
মহান আল্লাহ পাক তিনি রহমত বর্ষণ করুন হযরত নাফি’ ইবনে বুদাইল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার প্রতি, যেমন রহমত বর্ষিত হয় সম্মানিত জিহাদের ছওয়াব প্রত্যাশী তথা মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের রেজামন্দী-সন্তুষ্টি মুবারক তালাশী ব্যক্তির উপর। সুবহানাল্লাহ!
صَابِرٌ صَادِقٌ وَفِيّ إذَا مَا ... أَكْثَرَ الْقَوْمُ قَالَ قَوْلَ السّدَادِ
তিনি ছিলেন ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, বিশ্বাসী, আর মানুষ যখন আবোল-তাবোল বলতো তখনও তিনি সঠিক ও সত্য কথা বলতেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বি’রে মাঊনাহ উনার মধ্যে সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশকারী হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি শোক জ্ঞাপন করে এই কবিতাটি আবৃত্তি করেন। এতে বিশেষভাবে হযরত মুনযির ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কথা উল্লেখ রয়েছে-
عَلَى قَتْلَى مَعُونَةَ فَاسْتَهِلّي ... بِدَمْعِ الْعَيْنِ سَحّا غَيْرَ نَزْرِ
হে চোখ, অশ্রু বর্ষণ করো বি’রে মাঊনাহ্র শহীদ উনাদের প্রতি অশ্রু বহাও অঝোর ধারায়, সামান্য নয় কিছুতেই।
عَلَى خَيْلِ الرّسُولِ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ غَدَاةَ لَاقَوْا ... مَنَايَاهُمْ وَلَاقَتْهُمْ بِقَدْرِ
কাঁদো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুজাহিদ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়াল আনহুম উনাদের প্রতি, সেদিনের স্মরণে যেদিন উনারা চির বিদায়কে আলিঙ্গন করেছিলেন, আর মউতও উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে বুকে তুলে নিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানা রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
أَصَابَهُمْ الْفَنَاءُ بِعَقْدِ قَوْمٍ ... نُخُوّن عَقْدُ حَبْلِهِمْ بِغَدْرِ
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মুজাহিদ ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কাফির মুশরিকদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে শহীদ হলেন, আর উনারা ছিলেন কাফির মুশরিকদের বিশ্বাসঘাতকতার রশিতে আবদ্ধ। নাউযুবিল্লাহ!
فَيَا لَهْفِي لِمُنْذِرِ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ إذْ تَوَلّى ... وَأَعْنَقَ فِي مَنِيّتِهِ بِصَبْرِ
হায় আফসুস! হযরত মুনযির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি গেলেন আর ফিরে আসলেন না। তিনি ছবর বা ধৈর্যের সাথে দ্রুত সম্মানিত শাহাদাত গ্রহণের দিকে এগিয়ে গেলেন।
وَكَائِنٌ قَدْ أُصِيبَ غَدَاةَ ذَاكُمْ ... مِنْ أَبْيَضِ مَاجِدٍ مِنْ سِرّ عَمْرِو
সেদিন সকালে তিনি সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তিনি ছিলেন সম্মানী ও সুদর্শন পুরুষ এবং আমরের শ্রেষ্ঠ সন্তান। সুবহানাল্লাহ!
হযরত কা’ব ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বি’রে মাঊনাহ উনার ঘটনা প্রসঙ্গে বানূ জা’ফর ইবনে কিলাবের নিন্দায় আবৃত্তি করেন-
تَرَكْتُمْ جَارَكُمْ لِبَنِي سُلَيْمٍ ... مَخَافَةَ حَرْبِهِمْ عَجْزًا وَهُونَا
(হে বানূ জা’ফর!) তোমরা যুদ্ধভয়ে ভীত ও নতজানু হয়ে আপন প্রতিবেশীকে বানূ সুলাইমের হাতে ছেড়ে দিলে।
فَلَوْ حَبْلًا تَنَاوَلَ مِنْ عُقَيْلٍ ... لَمَدّ بِحَبْلِهَا حَبْلًا مَتِينَا
অতঃপর উনারা যদি বানূ উক্বাইল গোত্রের অংশীদারের রশি ধারণ করতেন, তবে তা হতো উনাদের জন্য এক সূদৃঢ় রশি।
أَوْ القرُطَاء مَا إنْ أَسْلَمُوهُ ... وَقِدْمًا مَا وَفَوْا إذْ لَا تَفُونَا
কিংবা উনারা যদি কুরত্বা’ গোত্রে আশ্রয় গ্রহণ করতেন, তবে তারা উনাদেরকে এমনভাবে পরিত্যাগ করত না; কেননা, অঙ্গীকার পূরণে তাদের ঐতিহ্য রয়েছে, যেখানে তোমরা অঙ্গীকার রক্ষা কর না। (সীরাতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি, মাগাযিউল ওয়াক্বিদী, আর রওদ্বূল উন্ফ্) (চলবে)
-আল্লামা সাইয়্যিদ শাবীব আহমদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)