ঐতিহাসিক সম্মানিত বদর জিহাদ (পর্ব-৪৭)
, ২৬ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) আইন ও জিহাদ
পূর্ব প্রকাশিতের পর
ঐতিহাসিক বদর ময়দানে কুরাইশ মুশরিকরা মুসলিম বাহিনীকে দ্বিগুণ বহুগুণ দেখেছিল
“তাফসীরে মাযহারী” কিতাবে আরো উল্লেখ আছে, “ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, যুদ্ধের প্রথম দিকে প্রথমে আমরা কুরাইশদেরকে দ্বিগুণ দেখতে পাচ্ছিলাম। পরে দেখলাম, তারা এবং আমরা সমান সংখ্যক। এরপর আমাদের দৃষ্টিতে কুরাইশ কাফিরদের সংখ্যা কমে গেল। তিনি আরো বর্ণনা করেন, “এরপর আমি আমার সামনের জনকে বললাম, আশ্চর্য! আমাদের একজনকে তো সত্তরজন মনে হচ্ছে। একথা শুনে আমার সামনের জন জাওয়াবে আমাকে বললেন, “আমাদের একজনকে তো আমার কাছে একশজন মনে হচ্ছে”। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে ইচ্ছা করেন তাকে নিজ সাহায্য মুবারক দ্বারা শক্তিশালী করেন। সম্মানিত বদর জিহাদই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। কমকে বেশী দেখানো এবং প্রায় নিরস্ত্রদেরকে পূর্ণ সশস্ত্রের উপর বিজয়ী করা মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা মুবারক ও সাহায্যেই সম্ভব। এই ঘটনা মুবারক প্রত্যক্ষকারী যারা একদল অপর দলকে দেখেছে অথবা যারা উভয় দলকে দেখেছে তাদের জন্য নিশ্চিত সুমহান নিদর্শন মুবারক।
ঐতিহাসিক বদর ময়দানে মুসলিম বাহিনীকে মুশরিকদের সংখ্যাকে কম করে দেখানো হয়েছে
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত বদর জিহাদে দুআ মুবারক করতে করতে এক সময় তন্দ্রাভিভূত হয়ে পড়েন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঐতিহাসিক বদর ময়দানে এই অবস্থায় স্বপ্নে দেখেন যে, শত্রুদের লোকবল, অস্ত্রবল নিতান্তই স্বল্প। সেই স্বপ্ন মুবারকের কথাই স্মরণ করার নির্দেশনা এসেছে পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ উনার ৪৩ ও ৪৪ নং আয়াত শরীফে। কেননা পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ উনার ৪৩ ও ৪৪ নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে প্রকৃতির এক অপূর্ব বিস্ময় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যা সম্মানিত বদর ময়দানে এই উদ্দেশ্যে কার্যকর করা হয়, যাতে উভয় বাহিনীর কোন একটিও জিহাদের ময়দান থেকে সরে না যায়। কারণ, এই জিহাদের ফলশ্রুতিতে বস্তুগত দিক দিয়েও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সত্যতার বিকাশ ঘটানো ছিলো নির্ধারিত।
বস্তুত প্রকৃতির সে অপূর্ব বিস্ময়টি ছিলো এই যে, কুরাইশ বাহিনী যদিও তিন গুণ বেশী ছিলো, কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার শুধুমাত্র স্বীয় পরিপূর্ণ ক্ষমা ও কুদরতবলে কুরাইশদের সংখ্যাকে মুসলিম বাহিনীর চোখে কম করে দেখানো হয়েছে, যাতে মুসলিম বাহিনীর মধ্যে কোন দুর্বলতা ও বিরোধ সৃষ্টি না হয়।
আর এ ঘটনা ঘটে দু’বার। একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নযোগে দেখানো হয় এবং তিনি বিষয়টি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে বলেন। তাতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মনোবল বেড়ে যায়। আর দ্বিতীয়বার যখন উভয়পক্ষ সামনা-সামনি হয়, তখন কুরাইশদের সংখ্যাকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের চোখে কম করে দেখানো হয়।
সুতরাং পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ উনার ৪৩ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে স্বপ্নের ঘটনা এবং ৪৪ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে প্রত্যক্ষ জাগ্রত অবস্থার ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। এটা ছিলো মহান আল্লাহ্ পাক উনার সুমহান হিকমত মুবারক।
-আল্লামা মুহম্মদ জাহাঙ্গীর হুসাইন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত বনু কায়নুকার জিহাদ (৪)
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত বনু কায়নুকার জিহাদ (৩)
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত বনু কায়নুকার জিহাদ (২)
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (৯)
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)