হেক্টরপ্রতি ফল উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম বাংলাদেশ। বাড়ছে দেশি—বিদেশি ফলের উৎপাদন।
অথচ অপ্রত্যাশিতভাবে আমদানি হচ্ছে ১০ হাজার কোটি টাকার বিদেশি ফল। বিদেশি ফলের রাসায়নিক বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। সরকার যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে আমদানির পরিবর্তে ২০ হাজার কোটি টাকার ফলই রফতানি করতে পারবে বাংলাদেশ।
, ১৮ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৯ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ০৮ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মন্তব্য কলাম
গত ১০ বছরে দেশের আমের উৎপাদন বৃষ্টি পেয়েছে দ্বিগুন, পেয়ারা দ্বিগুনেরও বেশি, পেপে আড়াই গুন এবং লিচু উৎপাদন ৫০% বেড়েছে। বাড়ছে ফল চাষের জমির পরিমাণও। বাণিজ্যিকভাবে ফল চাষের পাশাপাশি বাড়ির আঙ্গিনা ও সড়কের পাশে ফল গাছ রোপণ দিন দিন বাড়ছে। বছরে ১০% হারে ফল চাষের জমি বাড়ছে।
শুধু দেশীয় ফলই নয় বিদেশি ফল চাষেও এখন রোলমডেল বাংলাদেশ। বিদেশী ফল হিসেবে পরিচিত স্ট্রবেরি, ড্রাগন ফ্রুট, রাম্বুটান, আনার, আপেল, আঙ্গুর, সৌদি খেজুর প্রভৃতি অতীতে আমাদের দেশে উৎপন্ন হতো না। বর্তমানে সয়েল ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে এসব ফল সফলভাবে দেশেই প্রচুর আবাদ হচ্ছে। আজ হতে প্রায় ৩০ বছর আগে দেশের ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে বিদেশ থেকে আমদানি করা স্ট্রবেরি দুষ্পাপ্য ফল হিসেবে চড়া মূল্যে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হতো। কৃষিবিদদের সফল গবেষণায় প্রায় দুই দশক ধরে বর্তমানে আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফলটির আবাদ হচ্ছে। ড্রাগন ফ্রুট মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া এ দু’টি দেশে ব্যাপকভাবে উৎপন্ন হয়। স্ট্রবেরির মতো অতীতে দেশে মালয়েশিয়া থেকে ড্রাগন ফ্রুট আমদানি করা হতো। ড্রাগন ফ্রুটের ক্ষেত্রেও আমাদের কৃষিবিদরা সফলভাবে উৎপাদনে সক্ষম হওয়ায় বর্তমানে এটি দেশের সর্বত্র আবাদ হচ্ছে এবং জনপ্রিয়তা পেয়েছে। পূর্বে খেজুরের ক্ষেত্রে বিদেশনির্ভরতা থাকলেও বর্তমানে দেশেই আরবের জনপ্রিয় জাতের খেজুরগুলো বাগান আকারে দেশে চাষ হচ্ছে। আগামীতে খেজুরেও স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে বাংলাদেশ।
শুধু উৎপাদনই নয় পাশাপাশি রফতানিতেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বর্তমানে ফল রপ্তানি করে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে বাংলাদেশ। বছরের পর বছর এ আয় দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের মৌসুমি ফল এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য, জার্মান, ইতালি, ফ্রান্স, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, ওমান এবং অন্যান্য দেশে রপ্তানি হচ্ছে। আগামী দিনে চীন, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম এবং নেদারল্যান্ডসসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশি ফল রপ্তানির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, ফল উৎপাদনে এত সাফল্যের পরও প্রতি বছর বিদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার ফল আমদানি করা হচ্ছে। দেশি ফলের বাজারে বছরের বছরের পাঁচ মাস অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি চলে আমদানিকৃত বিদেশি ফল। প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিদেশি ফল বাংলাদেশে আমদানি হয়ে বাংলাদেশের বাজার সয়লাব করে রাখে। বর্তমানে আপেল আমদানিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন সপ্তম এবং ‘ফ্রেশ অরেঞ্জ’ বা মাল্টা আমদানিতে অষ্টম। সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর ও বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ১৫ লাখ ৭৭ হাজার কেজি বিদেশি ফল দেশে ঢুকছে।
ফলে দেশের ফলের বাজারের দাম পড়ে যাচ্ছে। সরকারের উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা না থাকার কারনে দেশীয় ফল ব্যবসায়ী ফলের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিপরীতে নাগরিকরা উচ্চমূল্যের বিদেশি রাসায়নিকযুক্ত ফল খেয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। দেশের ফল উৎপাদনের যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা তার কোনো সুফলই পাচ্ছে দেশ ও দেশের মানুষ।
প্রসঙ্গত, স্বয়ংসম্পূর্ণতার তথা স্বতঃস্ফূর্ততার কদর না করলে একসময় তা ঘাটতির দিকে ধাবিত হয়। দেশে বিপুল পরিমাণ ফল—ফলাদি উৎপাদন হওয়ার পরও যখন তার সুফল দেশের মানুষের কাছে সঠিকভাবে পৌছানো হয় না। ফল চাষীর অধিকার সংরক্ষণ হয়না। তখন এক পর্যায়ে উৎপাদন কমতে থাকবে। যেমনটি হয়েছে ধান, পাটের ক্ষেত্রে।
তাই সরকারের উচিত হবে, বিদেশ থেকে ফল আমদানি কমিয়ে সারাবছর শত শত জাতের সুমিষ্ট এবং তরতাজা ফলের বাজার বিকশিত করা। এজন্য সরকারের উচিত, বিদেশি ফল আমদানির সিন্ডিকেট নিমূর্ল, দেশীয় ফল রফতানিতে প্রণোদনা প্রদান করা। পাশাপাশি ফলের বাগান তৈরীতে বিশেষ ঋণ সরবরাহ করা। যথেষ্ট সংখ্যক হিমাগার করা। বাজার সরবরাহ সহজ এবং সাবলীল করা। পরিবহন খরচ কমানো। বাজার ব্যবস্থা উন্নত করা। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে বছরে ১০ হাজার কোটি টাকার ফল আমদানির পরিবর্তে ২০ হাজার কোটি টাকার ফল রফতানি করা সম্ভব হবে। ইনশাআল্লাহ!
—আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)