হযরত নূর কুতুবে আলম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামকরণে তৈরী করা হয়েছিলো ভারতের যে মসজিদ: ফিরেজাবাদে যুগের সাক্ষী ঐতিহাসিক নিদর্শন কুতুব শাহি মসজিদ
স্থাপত্য
, ০৫ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) স্থাপত্য নিদর্শন

পান্ডুয়াতে নূর কুতুব আলম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ এবং একলাখি মাজারস্থাপত্য মাঝখানে রয়েছে দেখতে খুবই সুন্দর ঐতিহাসিক কুতুব শাহি মসজিদ। একলাখি স্থাপত্যর পাশে থাকলেও দু’টি স্থাপত্যের নির্মাণকালের ফারাক যথেষ্ঠ - দেড় শতাব্দীর কাছাকাছি। পঞ্চদশ শতকের প্রথমভাগে একলাখি স্থাপত্য গড়ে উঠেছিল। তখন বাংলায় চলছে স্বাধীন সুলতানি শাসন। আর কুতুব শাহি মসজিদ তৈরি হয়েছে ষোড়শ শতকের শেষ দিকে, ১৫৮২ খৃ:। বাংলা ততদিনে মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে। হযরত নূর কুতুব আলম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানার্থেই এই মসজিদ নির্মাণ করিয়েছিলেন উনার বংশধর মুহম্মদ আল-খালিদি এর পুত্র মখদুম শেখ। মখদুম শেখ হযরত নূও কুতুবে আলম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরিদ ছিলেন।
এই ঐতিহাসিক মসদিটিকে সোনা মসজিদ নামেও ডাকা হয়। এই মসজিদের বাইরে সোনালি রঙের আস্তরণ ছিল। সূর্য্যের আলোয় তা সোনার মতো ঝলমল করত। বড়ো সোনা মসজিদ এবং ছোটো সোনা মসজিদেও এরকম সোনালি রং ছিল। কেউ কেউ বলেন, সত্যিকারের সোনায় গিলটি করা ছিল এই মসজিদ।
গৌড়ের বড়ো সোনা মসজিদের সঙ্গে এটির বেশ সাদৃশ্য আছে। তবে কোনো সুলতানের রাজকীয় পৃষ্টপোষকতায় কুতুব শাহি মসজিদ গড়ে ওঠেনি। মুঘল আমলে নির্মিত হলেও এই মসজিদের গড়ন সুলতানি রীতিরই অনুসারী।
এই ঐতিহাসিক মসজিদটি চার কোণায় আটকোণাকার বুরুজ দ্বারা সুরক্ষিত আয়তাকার দুই সারিতে পাঁচটি করে দশটি গম্বুজ দ্বারা আবৃত। মসজিদের পশ্চিম দিকে পাঁচটি অবতল কৌণিক খিলান দ্বারা আবৃত মিহরাব রয়েছে। মসজিদের দেয়ালে পাথরের ব্যবহার দেখা যায়। মসজিদের অভ্যন্তরে প্রবেশের জন্য পাঁচটি খিলানাকৃতি প্রবেশপথ রয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তর ও বাইরে টেরাকোটার অরঙ্করণ শোভা পাচ্ছে। মসজিদের কারুকার্যের মধ্যে রয়েছে কৌণিক বুরুজ, বক্রাকার কার্নিশ, ঢালু ছাদ প্রভৃতি। গম্বুজ ও দেয়ালে টেরাকোটার অলঙ্করণ শোভা পাচ্ছে।
এই ঐতিহাসিক মসজিদটির মূল উপাদান পাথর এবং ইট। দশটি গম্বুজ ছিল এক সময়ে, যা কালের গর্ভে হারিয়ে গিয়েছে। আর ছিল চারটি মিনার। ভিতরে এখনও পাঁচটি মিহরাব দেখা যায়। প্রধান মিহরাবের উত্তরে রয়েছে একটি উঁচু মিম্বর, ঠিক আদিনা মসজিদের মতো। মিম্বারের সামনে একটি আয়তাকার পাথরের মতো উচু স্থান রয়েছে, যা স্থানীয় কোনো একজন দরবেশের মাজার বলে জানা যায়।
সুত্র: মসজিদ দেশ দেশান্তরে, বঙ্গদর্শন।
-মুহম্মদ আবু নাঈম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১৪)
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (৩)
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (২)
০৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (১)
২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১১)
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (৩)
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১০)
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (২)
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (১)
০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
শীতে প্রোটিনের অভাবে হতে পারে যে ক্ষতি
৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘অদৃশ্য আদেশে’ থেকেই সংস্কার হয়েছিল যে ঐতিহাসিক মসজিদের
২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অনিন্দ্য সুন্দর স্থাপনা তুর্কমেনিস্তানের এরতুগরুল গাজি মসজিদ
২২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)