ইলমে তাছাউফ
যামানার মূল নায়িবে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিসবত ব্যতীত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক রাখার দাবি বাতুলতার নামান্তর
, ০১ লা জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৭ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ০৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৯ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) ইলমে তাছাউফ
(পূর্বপ্রকাশিতের পর)
বর্ণিত রয়েছে, জীবনের একসময়ে যখন তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান করেছিলেন, অহরহ প্রাণের আক্বা, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত মুবারক সমৃদ্ধ ছিলেন।
তখন এক পর্যায়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নির্দেশ মুবারক দিলেন, “হে হযরত আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি হিন্দুস্থানে যান। সেটাই হবে আপনার হিদায়েতের ক্ষেত্র। কিন্তু প্রাণের আক্বা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রওযা শরীফ ছেড়ে আসতে কিছুতেই উনার আশিক মন চাচ্ছিলো না। অবশেষে তিনি আরজু করলেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি এখান থেকে হিন্দুস্থান গেলে আপনার জুদায়ীর কারণে নির্ঘাত আমার মৃত্যু হবে। তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “ঠিক আছে, আপনাকে প্রতিদিনই আমার সাক্ষাৎ মুবারক দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ! এ রকমই ছিল হযরত শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বুযুর্গী।
সেই শ্রদ্ধাভাজন বুযুর্গ উনার যামানার যিনি মূল খলীফা বা প্রতিনিধি, যিনি যামানার মুজাদ্দিদ ও ইমাম, আফদ্বালুল আওলিয়া হযরত শায়েখ আহমদ ফারূক্বী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একটি বক্তব্য; যা তিনি গাওছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সবচেয়ে বেশি কারামত প্রকাশিত হওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হয়ে বলেছিলেন, “পবিত্র ইলমে তরীক্বত বা পবিত্র তাছাওউফ উনাদের একটি বিষয় হচ্ছে উরূজ এবং নুযূল। উরূজের শুরু হচ্ছে পবিত্র ক্বলব উনার মাক্বাম এবং নুযূলেরও শেষ হচ্ছে পবিত্র ক্বলব উনার মাক্বাম। উরূজ-নুযূল পূরা হলে সাধারণভাবে কারামত মুবারক প্রকাশিত হতে দেখা যায় না। কিন্তু গাওছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র ক্বলব উনার মাক্বামে নুযূল শেষ না হয়ে নুযূল শেষ হয়েছে পবিত্র রূহ উনার মাক্বাম পর্যন্ত। আর পবিত্র রূহ উনার মাক্বাম হচ্ছে সামান-আসবাবের উর্ধ্বে। যে কারণে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় উনার থেকে কারামত মুবারক বেশি প্রকাশিত হয়েছে। যামানার মুজাদ্দিদ ও ইমাম, আফদ্বালুল আওলিয়া হযরত শায়েখ আহমদ ফারূক্বী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এই বক্তব্যটি উনার বিরূদ্ধবাদীরা গ্রহণ করে ইতোপূর্বেই পবিত্র ক্বাদিরিয়া তরীক্বা উনার প্রসিদ্ধ বুযূর্গ হযরত শায়েখ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে উপস্থাপন করে এ বিষয়ে একখানা ফতওয়া তলব করে।
তিনি ফতওয়া লেখা আরম্ভ করে তা শেষও করলেন যে, আফদ্বালুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি গওছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মর্যাদা মুবারক ক্ষুন্ন করেছেন। যা কুফরী হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ! এরই মাঝে তিনি একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক যিয়ারতকালে বললেন, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কি করলে আমি আপনার আরো অধিক সন্তুষ্টি মুবারক পেতে পারি?’ জাওয়াবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “আপনি আফদ্বালুল আওলিয়া শায়েখ আহমদ ফারূকী সিরহিন্দী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে গিয়ে বাইয়াত হলে আমার আরো অধিক সন্তুষ্টি মুবারক পাবেন। সুবহানাল্লাহ! পরক্ষণেই তিনি আফদ্বালুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিরুদ্ধে লিখিত ফতওয়াখানা যা তখনও প্রকাশ করা হয়নি তা ছিঁড়ে ফেললেন। অতঃপর কয়েকদিনের ভিতরে খোঁজখবর নিয়ে উনার পবিত্র দরবার শরীফ গিয়ে উনার কাছে বাইয়াত হয়ে মুরীদ হয়ে গেলেন এবং পরবর্তীতে উনার নিকট থেকে খিলাফত মুবারকও লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
যামানার মূল নায়িবে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিসবত ব্যতীত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক রাখার দাবি বাতুলতার নামান্তর
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাযকিয়াহ বা ইছলাহ অর্জন করা ব্যতীত কোনো বান্দার পক্ষে কামিয়াবী হাছিল করা সম্ভব নয়
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মুর্শিদ বা শায়েখ হক্ব বা নাহক্ব তা যাচাই-বাছাই করার পর বাইয়াত হতে হবে
০৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাসাউফ চর্চা ছাড়া দ্বীন ইসলাম কায়েম সম্ভব না (২)
০১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত মুর্শিদ বা শায়েখ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়ার ক্ষেত্রে সন্তানের জন্য পিতা-মাতা উনাদের এবং স্ত্রীর জন্য স্বামীর বাধা গ্রহণযোগ্য নয়
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাসাউফ চর্চা ছাড়া দ্বীন ইসলাম কায়েম সম্ভব না (১)
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩১)
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতা জীবিত থাকতেই মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া উচিত
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পিতা-মাতা জীবিত থাকতেই মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া উচিত
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পিতা-মাতা জীবিত থাকতেই মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া উচিত
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র দশ লতিফা উনাদের বিবরণ
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
একজন কামিল মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া ফরয (২)
০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)