স্থাপত্য-নিদর্শন
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৪)
, ৩০শে জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৫ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) স্থাপত্য নিদর্শন
মুসলিম বিশ্বের প্রধান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য হওয়া এবং রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা সত্ত্বেও আল-আজহার কায়রোর অন্যান্য মাদরাসার মত ছিল না। আল-আজহারে নিজস্ব পন্থায় পাঠদান করা হত। অন্যদিকে সুলতান সালাউদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সময় নির্মিত মাদরাসাগুলো ছিল রাষ্ট্রীয় শিক্ষাব্যবস্থার অংশ। মিশর ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে শিক্ষার্থীরা আল-আজহারে পড়াশোনার জন্য আসত। শিক্ষার্থীদের সংখ্যার দিক থেকে আল-আজহার অন্যান্য মাদরাসাগুলোকে ছাড়িয়ে যায়। আল-আজহারের শিক্ষার্থীদের জাতীয়তার ভিত্তিতে রিওয়াকে দলবদ্ধ করা হত এবং ইসলামি আইনের বিষয়াদি শিক্ষা দেয়া হত। ডিগ্রি লাভের জন্য গড়পরতা ছয় বছর অধ্যয়ন করতে হত।
১৪শ শতাব্দী নাগাদ আল-আজহার আইন, দ্বীনতত্ত্ব, আরবি ভাষা শিক্ষার শ্রেষ্ঠ স্থান হিসেবে স্বীকৃত হয়। মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে আসত। মিশরের রবি’য়াহমাদের একতৃতীয়াংশ এখানে শিক্ষকতা বা লেখাপড়া করেছেন বলে মত পাওয়া যায়।
উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রদেশ:
উসমানীয়রা ১৫১৭ খৃ: মিশর বিজয় করে। এরপর সরাসরি রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ হয়ে গেলেও তুর্কিরা মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি সশ্রদ্ধাভাব দেখিয়েছে। উসমানীয় সুলতান প্রথম সেলিম তার মিশরে অবস্থানের শেষ সপ্তাহে আল-আজহারে জুমার নামাজ আদায় করেছিলেন। পরবর্তীতে উসমানীয় আমিররা নিয়মিতভাবে আল-আজহারে জুমার নামাজ আদায় করতেন। উসমানীয় সুলতানদের নির্দেশে বিভিন্ন উপলক্ষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া হতো। বর্ণিত রয়েছে উসমানীয় সালতানাতের সময় আল-আজহার মসজিদের কিছুটা সংস্কার হয়েছিলো।
সুলতান প্রথম সেলিমের কাছে মামলুকরা পরাজিত হলেও মিশরীয় সমাজে তাদের প্রভাব ছিল। উসমানীয় গভর্নরদের অধীনে তারা বে (সর্দার) হিসেবে ছিলেন। প্রথম সেলিমের অধীনে প্রথমে ইউনুস পাশা মিশরের উসমানীয় গভর্নর হন। কিন্তু তার দুর্নীতির অভিযোগের কারণে সুলতান সেলিম তার স্থলে মামলুক আমির খাইর বেকে নিযুক্ত করেন। খাইর বে মার্জ দাবিকের যুদ্ধে উসমানীয়দের সহায়তা করেছিলেন। মামলুকরা তাদের সালতানাত পুনপ্রতিষ্ঠার জন্য কয়েকবার আন্দোলন করেছিল, এর মধ্যে দুইটি আন্দোলন ১৫২৩ খৃ: সংঘটিত হয়। তবে উসমানীয়রা মিশরের ক্ষমতা কাঠামো থেকে মামলুকদের সম্পূর্ণরূপে অপসারণ করতে সক্ষম হয়। উসমানীয়দের বিজয়ের ফলে মামলুকরা অর্থনৈতিক ও সামরিক উভয় ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৮শ শতাব্দী নাগাদ মামলুক অভিজাতরা তাদের প্রভাবের অনেকাংশ ফিরে পায় এবং কায়রো এবং আল-আজহারের বিভিন্ন সংস্কারকার্য অর্থসহায়তা প্রদান করে।
সম্পাদনায়: মুহম্মদ নাঈম
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৫)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৩)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০২)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০১)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৪০০ বছরের আলোচিত প্রাচীন স্থাপত্য তেবাড়িয়া জামে মসজিদ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (২)
০৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জাপানের টোকিও জামে মসজিদ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১)
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মেথি ভেজানো পানি পানের নানা উপকারিতা জেনে নিন
২৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শেরপুরে তুরকান হযরত শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইউরোপের যত মুসলিম স্থাপত্য
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)