পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে
সম্মানিত যাকাত উনার আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল
, ২২ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৩ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০২ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ১৯ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র ঈদুল ফিত্বর উনার নামায আদায়ের আগেই ছদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করতে হবে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ فَرَضَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكٰوةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِّلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ مَنْ اَدَّاهَا قَبْلَ الصَّلٰوةِ فَهِىَ زَكٰوةٌ مَقْبُولَةٌ وَمَنْ اَدَّاهَا بَعْدَ الصَّلٰوةِ فَهِىَ صَدَقَةٌ مِّنَ الصَّدَقَاتِ.
অর্থ : “হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছদাক্বাতুল ফিত্বর ফরয করেছেন- অশ্লীল কথা ও বেহুদা কাজ হতে (পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার) রোযাকে পবিত্র করতে এবং মিসকীনদের খাদ্যের ব্যবস্থার জন্য। যে ব্যক্তি (ঈদের) নামাযের পূর্বে তা আদায় করে সেটা কবুল ছদাক্বাহ অর্থাৎ অত্যধিক ফযীলতপূর্ণ হিসেবে গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি নামাযের পরে আদায় করে, তা সাধারণ অন্যান্য দানের ন্যায় গৃহীত হবে। ” (আবূ দাঊদ শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু যাকাতিল ফিত্বর : হাদীছ শরীফ নং ১৬০৯)
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসে ছদাক্বাতুল ফিত্বর আদায়ের ব্যাপারে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ فَرَضَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَدَقَةَ الْفِطْرِ اَوْ قَالَ رَمَضَانَ عَلَى الذَّكَرِ وَالاُنْثٰى وَالْـحُرِّ وَالْمَمْلُوْكِ صَاعًا مِّنْ تَـمْرٍ اَوْ صَاعًا مِّنْ شَعِيْرٍ فَعَدَلَ النَّاسُ بِهٖ نِصْفَ صَاعٍ مِّنْ بُرٍّ فَكَانَ حَضْرَتْ اِبْنُ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يُعْطِىْ التَّمْرَ فَاَعْوَزَ اَهْلُ الْمَدِيْنَةِ مِنَ التَّمْرِ فَاَعْطٰى شَعِيْرًا فَكَانَ حَضْرَتْ اِبْنُ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يُعْطِىْ عَنِ الصَّغِيْرِ وَالْكَبِيْرِ حَتّٰى اِنْ كَانَ يُعْطِىْ عَنْ بَنِىَّ وَكَانَ حَضْرَتْ اِبْنُ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يُعْطِيْهَا الَّذِيْنَ يَقْبَلُوْنَـهَا وَكَانُوْا يُعْطُوْنَ قَبْلَ الْفِطْرِ بِيَوْمٍ اَوْ يَوْمَيْنِ.
অর্থ : “হযরত ইবেন উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রত্যেক পুরুষ, মহিলা, আযাদ ও গোলামের পক্ষ হতে ছদাক্বাতুল ফিত্বর অথবা (বলেছেন) ছদাক্বাতুর রমাদ্বান হিসেবে এক ছা’ খেজুর বা এক ছা’ যব আদায় করা ফরয করেছেন। অতঃপর লোকেরা অর্ধ ছা’ গমকে এক ছা’ খেজুরের সমান দিতে লাগল। (রাবী নাফি’ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন) হযরত ইবেন উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি খেজুর (ছদাক্বাতুল ফিত্বর হিসেবে) দিতেন। এক সময় পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে খেজুর দুর্লভ হলে যব দিয়ে তা আদায় করেন। হযরত ইবেন উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি প্রাপ্ত বয়স্ক ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক সকলের পক্ষ হতেই ছদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় করতেন, এমনকি তিনি আমার সন্তানদের পক্ষ হতেও ছদক্বার দ্রব্য গ্রহীতাদেরকে দিয়ে দিতেন এবং ঈদের এক-দু’ দিন পূর্বেই আদায় করে দিতেন। ” (বুখারী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু ছদাক্বাতিল ফিত্বরি ‘আলাল হুররি ওয়াল মামলূকি : হাদীছ শরীফ নং ১৫১১)
পবিত্র ছদাক্বাতুল ফিত্বর উনার গুরুত্ব ও ফযীলত
পবিত্র রোযা উনার মধ্যে কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে ছদাক্বাতুল ফিত্বর আদায়ের দ্বারা তা দূর হয়ে যায়। ছদাক্বাতুল ফিত্বর আদায় না করলে রোযাসমূহ আসমান ও যমীনের মাঝখানে ঝুলে থাকে।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ جَرِيْرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَوْمُ شَهْرِ رَمَضَانَ مُعَلَّقٌ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْاَرْضِ وَلَا يُرْفَعُ اِلَّا بِزَكَاةِ الْفِطْرِ. رَوَاهُ حَضْرَتْ اَبُوْ حَفْصِ بْنِ شَاهِيْنَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِىْ فَضَائِلِ رَمَضَانَ وَقَالَ حَدِيْثٌ غَرِيْبٌ جَيِّدُ الِاِسْنَادِ.
অর্থ : “হযরত জারীর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পবিত্র রমাদ্বান মাস উনার রোযাগুলো আসমান-যমীনের মাঝখানে ঝুলন্ত থাকে, ছদাক্বাতুল ফিত্র আদায় না করা পর্যন্ত উপরে উঠানো হয় না (অর্থাৎ ছদাক্বাতুল ফিত্র না দেয়া পর্যন্ত কবুল হয় না)। ” মুহাদ্দিছ হযরত আবূ হাফ্ছ বিন শাহীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হাদীছ শরীফখানা উনার কিতাব ‘ফাদ্বায়িলু রমাদ্বান’ উনার মধ্যে বর্ণনা করেছেন এবং তিনি বলেছেন অত্র হাদীছ শরীফখানা গরীব ও উৎকৃষ্ট সনদে বর্ণিত আছে। (আত তারগীব ওয়াত তারহীব মিনাল হাদীছিশ শরীফ ২য় খ- ৯৭ পৃষ্ঠা : কিতাবুছ ছওম : হাদীছ শরীফ নং ১৬৫৩, দারুল কুতুবুল ইলমিয়্যাহ্, বৈরূত, লেবানন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)