সমাজের স্রোত বা সময়ের সাথে আপোসকারীরা উলামায়ে হক্ব নয়। ইসলামী আহকাম ও আন্দোলন পদ্ধতি সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয় না।
ইবনুল ওয়াক্ত নয়; কেবলমাত্র আবুল ওয়াক্তগণ উনারাই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ত্রাণকর্তা ও অনুসরণীয়।
, ১০ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৯ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সম্পাদকীয়
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “সময়কে আমি পর্যায়ক্রমে মানুষের মাঝে পরিবর্তন করি।”
মূলত, সময় বহতা নদীর মতো। সাধারণ মানুষ সময় দ্বারা প্রভাবিত হয়।
সময়ের প্রবাহে পুষ্ট অধিকাংশের বিশ্বাস এরূপ যে, ‘চলমান পরিস্থিতিতে প্রচলিত অনৈসলামিক আচারও অনৈসলামিক থাকে না। তাদের ধারণা- খেলাধুলা, গান-বাজনা, সুদ, ঘুষ, টিভি, সিনেমা, বেপর্দা, বেহায়া এগুলো বর্তমান সময়ের দাবি। যা সময়ের প্রেক্ষিতে জায়িয ও সহনীয়।’ নাউযুবিল্লাহ!
আওয়ামুন নাসের ভিতরে এমন বিশ্বাস শক্ত করে এঁটে বসার কারণে তাদের সে অনুভূতির বিপরীতে চালিত হতে ভয় পায় স্বার্থান্বেষী আলিম সমাজ তথা উলামায়ে সূ’রা। চলমান আবহের প্রতিকূলে সম্মানিত ইসলামী আদর্শকে প্রকাশ ও প্রচার করা নয়; বরং তার উপর সম্মানিত ইসলামী লেবেল আঁটার অপচেষ্টার প্রেক্ষিতে ছবি তোলা, ভিডিও, টেলিভিশন জায়িয করা হয়েছে বহু পূর্বেই। এ ধারাবাহিকতায় যাবতীয় অনৈসলামিক কাজের প্রতি বাধাদান এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে কায়িম করার পথটিকেও করা হয়েছে বিকৃত, কলঙ্কিত। অনৈসলামিক কাজে বাধাদানের পদ্ধতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে- মুশরিকদের হরতাল, মজুসীদের মশাল মিছিল, গোঁড়া নাছারাদের ব্লাসফেমী আইন ইত্যাদি। আবার সম্মানিত ইসলামী দাবি আদায়ের জন্য অবতারণা করা হয়েছে- কমিউনিস্টদের লংমার্চ, খ্রিস্টানদের মৌলবাদ, গণতন্ত্র তথা নির্বাচন।
মূলত, এসব কিছুই বিধর্মীদের থেকে উৎপত্তি লাভ করে সাধারণভাবে সমাজে সম্পৃক্ত হয়েছে। কিন্তু এসবের বিপরীতে স্বকীয় আদর্শে পরিচালিত হওয়াই ছিল সম্মানিত ইসলামী মূল্যবোধের দাবি। সম্মানিত ইসলামী আদর্শ সম্পর্কে অজ্ঞতা, চলমান মানসিকতার প্রতিকূলে চলার গভীর শঙ্কা, সংশ্লিষ্ট স্বার্থান্বেষী মালানাদেরকে পরাভূত করেছে। সময়ের স্রোতে এরা ভেসে চলেছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার পরিভাষায় এদেরকে আখ্যা দেয়া হয়- ‘ইবনুল ওয়াক্ত’ বা ‘সময়ের সন্তানরূপে।’
সময়ের প্রকৃতি ও প্রবাহে যারা চলবে, সময়ের দোহাই যারা দিবে তাদের জন্য মূলত পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ধারক ও বাহক হওয়া সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সময়ের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততার মধ্যে লিপ্ত। তবে উনারা নয়, যারা ঈমান এনেছে ও নেক কাজ করেছে।” (পবিত্র সূরা আছর শরীফ)
এখানে শপথ করা হয়েছে সময়ের। আর এর তাফসীর হচ্ছে, সময়ের স্রোতে নির্বিচারে যারা গা ভাসিয়ে দিবে অর্থাৎ যারা ইবনুল ওয়াক্ত তারা মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বলাবাহুল্য, সমঝদার না হলে এসব ইবনুল ওয়াক্ত মালানাদের অন্তঃসার শূন্যতা উপলব্ধি করা কষ্টকর। বিশেষতঃ তাদের অনুসারীদের জন্য তা আরো দুরূহ। যেহেতু তারা দৃশ্যতঃ সমজাতীয়দের বিরাট সমাবেশ দেখতে পায়।
স্মর্তব্য, বিরাট সমাবেশ বা বেশি সংখ্যাই কিন্তু হক্বের মাপকাঠি নয়। বরং তা নাহক্বের সূচকও বটে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আর আপনি যদি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার পথ থেকে বিপথগামী করে দিবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমানভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে। আপনার প্রতিপালক তাদের সম্পর্কে জ্ঞাত রয়েছেন, যারা উনার পথ থেকে বিপথগামী হয়।” (পবিত্র সূরা আনয়াম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৬)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্টভাবে ব্যক্ত যে, পৃথিবীর অধিকাংশ লোক নাহক্ব। সুতরাং যেসব নামধারী মালানারা তাদেরকে তোয়াজ করে, তাদের মুখাপেক্ষী যারা হয়, তারাও মূলত নাহক্ব। আর উভয়ের সম্মিলিত শক্তিটি ধাবিত হয় হক্ব ওলীআল্লাহগণ উনাদের প্রতি তথা যামানার মহান মুজাদ্দিদ আলাইহিস সালাম উনার বিরুদ্ধে। কারণ সময়ের নাহক্ব গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কেবল তিনিই হক্ব কথা উচ্চারণ করেন।
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে ইসলামী পন্থায় প্রতিষ্ঠা করার মতো নীতিবোধ, আকল, হিম্মত ও তাওয়াক্কুল থাকায় পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পরিপূর্ণভাবে ইসলামী কায়দায় রূপায়ণে কেবলমাত্র (যামানার মহান মুজাদ্দিদ আলাইহিস সালাম) তিনিই হন যোগ্য ও নিবেদিত। অর্থাৎ সম্মানিত ইসলামী মূল্যবোধের বিপরীতে সময় বা সমসাময়িক তর্জ-তরীক্বা, মানসিকতা উনার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না মোটেই। বরং সেসবের উপর তিনিই হন জয়ী। তাই সম্মানিত ইসলামী পরিভাষায় তিনি “আবুল ওয়াক্ত” বা সময়ের উপর প্রাধান্য বিস্তারকারী রূপে অতীব সম্মানিত।
উল্লেখ্য, সময়ের বিপরীতে চলা তথা সময়ের সন্তান-উলামায়ে সূ’রা ও তাদের দ্বারা প্রভাবিত সাধারণ মানুষের মানসিকতার বিরুদ্ধে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার কথা বলা মূলত খুবই দুরূহ। কারণ সবাই তখন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। অপবাদ রটনা করে, বিরোধিতা করে। তারপরেও আবুল ওয়াক্ত তথা রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি সময়ের বিপরীতে সত্য দ্বীনের কথা বলেন। তিনি ওহীর মাধ্যমে নাযিলকৃত দ্বীনকে উঁচ্চে তুলে ধরেন। কারণ ইহা যে মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ এবং ইহা উনার হক্ব হওয়ার ও যোগ্যতার বিশেষ পরিচায়ক। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “অতএব, আপনার পালনকর্তার আদেশ পালনের জন্য ধৈর্যসহকারে অপেক্ষা করুন এবং ওদের মধ্যকার কোনো পাপিষ্ঠ ও কাফিরের আনুগত্য করবেন না।” (পবিত্র সূরা আদ দাহর শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)
এ বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে ‘পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ’ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করুন ও মুনাফিকদের অনুসরণ করবেন না। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয় আপনি তার অনুসরণ করুন। নিশ্চয়ই আপনি যা করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সে বিষয়ে জ্ঞাত।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১)
মূলত, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে মনোনীত বলে, উনাকে সেই কুওওয়ত দিয়েই মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রেরণ করেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই এই উম্মতের মাঝে মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে একজন ‘মুজাদ্দিদ’ পাঠাবেন। যিনি বিরাজমান সময়ে সংস্কার করবেন।”
‘ইবনুল ওয়াক্ত’ না হয়ে ‘আবুল ওয়াক্ত’রূপে যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত বিকশিত করবেন। সময়ের স্রোতে ঢুকে পড়া বেশরা, বিদ্য়াত থেকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে তিনি মুক্ত করবেন।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৭ হাজার ৮০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদের দেশে কয়লার ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ কেন? বিগত মাফিয়া সরকারের পথ থেকে সরে এসে কয়লা উত্তোলন শুরু করুন।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার।
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়, তাপ মুক্তি নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি, পরিবেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ হোক একটুকরো বাগান
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্বরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)