মন্তব্য কলাম
সংবিধান, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিরোধী আপত্তিকর শব্দ প্রকাশের বিপরীতে মহান আল্লাহ পাক উনার ‘কুদরত’ ও ‘রহমত’ এ ছিফত মুবারক দ্বয়ের ব্যাপক প্রচলন ঘটাতে হবে
, ০২ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৮ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ২১ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ১৮ (১) ধারায় বর্ণিত হয়েছে- ‘মদ্য ও অন্যান্য মাদক পানীয় এবং স্বাস্থ্যহানিকর ভেষজের ব্যবহার নিষিদ্ধ করণের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন। ’ ১৮(২) ধারায় বর্ণিত রয়েছে পতিতাবৃত্তি ও জুয়াখেলা নিরোধের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
সংবিধানের ২৩ নং ধারায় বলা হয়েছে- ‘রাষ্ট্র জনগণের সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার রক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন। ’ বলাবাহুল্য সংবিধানের এই তিনটি অনুচ্ছেদের একটিও বর্তমানে আদৌ কার্যকর হচ্ছে না। বরং রাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন পৃষ্ঠপোষকতায় মিডিয়া আজ অবলীলাক্রমে এমন সব শব্দ আওড়িয়ে যাচ্ছে, পত্রিকায় প্রকাশ করে যাচ্ছে যা ৯৮ ভাগ অধিবাসী মুসলমানের জন্য চরম-পরম ক্ষোভের। আজ রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় পত্রিকায় প্রকাশ্যে পত্রস্থ হচ্ছে ‘বিশ্বের সেরা যৌন আবেদনময়ী’, ‘যৌনকর্মী’, ‘সেলিব্রেটি’, ‘র্যাম্প মডেল’, ‘ক্যাটওয়াক’, ‘সেক্স সিম্বল’, ‘আইটেম গার্ল’ ইত্যাদি সব বিবস্ত্রপনা সম্পৃক্ত শব্দ। তার বিপরীতে ৯৮ ভাগ মুসলমানের জন্মগত ও স্বভাবজাত যে শব্দসমূহ পরিচিত ও বহুল প্রচলিত হবার কথা ছিল তার কোন ব্যবহার আজ নাই বললেই চলে। অথচ ৯৮ ভাগ মুসলমানের স্বভাবগতভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার ‘কুদরত’ ও ‘রহমত’ ছিফত এর সাথে সম্পৃক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল। বেশী বেশী উচ্চারিত হওয়ার কথা ছিল। সমাজ জীবনে সর্বত্র প্রতিফলিত হওয়ার দরকার ছিলো।
উল্লেখ্য, মহান আল্লাহ পাক উনার আটটি জাতি ছিফতের মাঝে ‘কুদরত’ অন্যতম। মহান আল্লাহ পাক উনার ইলিম এবং ‘কুদরতের’ দ্বারা তিনি সমস্ত সৃষ্টি জগতের সাথে বিরাজমান। মহান আল্লাহ পাক উনার মা’রিফাত লাভ, এবং উনার মনোনীত দ্বীন ইসলাম পালনে কুদরত সম্পর্কিত ইলিম অনিবার্য। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিবিধ অনুষঙ্গ অনুধাবনে যেখানে সাধারণ বর্ণনার অসামঞ্জস্য দেখা দেয়, কুদরতের বিশ্বাসই সেখানে সমাধান ব্যক্ত করে। সন্দেহবাদীদের থেকে উত্থাপিত সংশয়মূলক জিজ্ঞাসা “বাঘ-কুমিরের পেটে কেউ গেলে, তার সুওয়াল-জাওয়াব হবে কি করে? প্লেন ক্র্যাশ হয়ে মারা গিয়ে ছাইয়ে পরিণত হলে অথবা মিশরের পিরামিডে শায়িত মৃতদেহের সুওয়াল-জাওয়াব হবে কি করে?”
এসব ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারকের ধারণার অবকাশই সকল জিজ্ঞাসাকে প্রশমিত করে।
উল্লেখ্য, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার স্বার্থে, মুসলমানদের কল্যাণার্থে মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত জাহিরের ঘোষণা রয়ে গেছে। কিন্তু খোদায়ী কুদরত সম্পর্কে কার্যতঃ মুসলমানদের মাঝে কাঙ্খিত ইয়াক্বীনের ঘাটতি প্রকট। বিশেষতঃ নামধারী উলামাদের কার্যকলাপে এ শুন্যতা করুণভাবে দৃশ্যমান।
ইসলামী আন্দোলন দাবী করলেও তারা চলমান প্রবাহের গ-ীর বাইরে উঁকি দিতে পারেনি। বরং মনগড়া ব্যাখ্যার দ্বারা তারা শ্বাশত দ্বীন ইসলাম উনাকে কাঁট-ছাট করে তথাকথিত আধুনিকীকরনের প্রচেষ্টায় লিপ্ত।
তারা আজ ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, মাওসেতুং-এর লংমার্চ, গান্ধীর হরতাল, ধর্ম রক্ষার জন্য খ্রিস্টানদের ব্লাসফেমী আইন ও মৌলবাদ দাবী এবং ইসলামী খিলাফতের জন্য ইহুদী-নাছারার অনুকরণে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নামে হারাম নির্বাচন ভিত্তিক ভোট ব্যবসার রাজনীতি করছে।
বলার অপেক্ষা রাখেনা, এ সবই হচ্ছে স্পষ্টতঃ মহান আল্লাহ পাক উনার ‘কুদরতী’ ক্ষমতার প্রতি তাদের অবিশ্বাসের প্রমাণ। অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার ‘কুদরতে’ বিশ্ব রাজনৈতিক পটেও যে অবলীলাক্রমে কী পরিবর্তন ঘটতে পারে সারা বিশ্বে কমিউনিজমের পতন তারই প্রকৃষ্ট প্রমাণ। এছাড়া এ যুগেও ছবির ভিত্তিতে পরিচালিত মিডিয়াকে ব্যবহার না করেও কুদরতীভাবে কিরূপ প্রচার-প্রসার হওয়া সম্ভব সাইয়্যিদুনা হযরত ইব্রাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কা’বা শরীফ পুনঃনির্মাণকালে জনশুন্য ময়দানে দেয়া আযানের জবাবে লক্ষ-কোটি হাজীর হজ্জে যোগদান তারই প্রমাণ। ‘পূর্ণ শরীয়তের উপর দায়িম-ক্বায়িম থাকলে মহান আল্লাহ পাক তিনি যে কুদরতী মদদ করবেন ও খাছ রহমত নাযিল করবেন’- এ আক্বীদার অভাবই আজকে বিজাতীয় পথে চলার মূল কারণ।
উল্লেখ্য, মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতী মদদ উনার প্রতিই হবে যার প্রতি রয়েছে উনার রহমত। মূলতঃ বান্দা সবচেয়ে বেশী যে জিনিসটির মুখাপেক্ষী সেটি হল আল্লাহ পাক উনার ‘রহমত’। ‘রহমত’ শব্দটি পবিত্র কুরআনে কারীমায় সরাসরি ৭৯ বার এবং বিভিন্নভাবে ২৫৮ বার এসেছে। মহান আল্লাহ পাক উনার রহ্মত নাযিলের ফলেই ফসল হয়, বৃষ্টি নামে, ঝিনুকের ভিতরে মুক্তা হয়, মানুষের ছূরত সুন্দর হয়। মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত পেলেই মানুষ হিদায়েত পায়।
আল্লাহ পাক উনার রহমত যাঁদের উপর পড়ে কেবল মাত্র উনারাই হাদী হতে পারেন। কারণ মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতে উনাদের দিল কোমল হয়। যা মানুষের হেদায়েতের জন্য অনিবার্য শর্ত। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “আল্লাহ পাক উনার রহমতেই আপনি তাঁদের জন্য কোমল হৃদয় হয়েছেন, পক্ষান্তরে আপনি যদি রূঢ় ও কঠিন হৃদয় হতেন তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। ” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
উল্লেখ্য, যারা জাহিরী মালানা তাদের দিলে খোদার রহমতের অভাব থাকার কারণে তারা মানুষের হিদায়েতের জন্য উপযোগী নয়। বরং যাঁরা ওলীআল্লাহ উনারাই রহমতের ধারক-বাহক বিধায় সে কাজের উপযোগী। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত আল্লাহওয়ালাগণ উনাদের নিকটবর্তী। ” (পবিত্র সূরা আরাফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
মূলতঃ মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত ও রহমতের সাথে নিবিড় সম্পৃক্ততা মহান আল্লাহ পাক উনার জাত-পাক উনার পরিচয় তথা মা’রিফাত লাভের মাধ্যমেই সম্ভব।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উন্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলমানকে ‘মুসলমানিত্ব’ বুঝতে হবে। ‘আশহাদু আন্না মুহম্মাদার রসূলুল্লাহ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাক্বীক্বীভাবে বলতে হবে ও আমলে আনতে হবে।
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
এদেশে যারা পহেলা বৈশাখের নামে বাঙ্গালীয়ানার হুজ্জোতে মেতে উঠে তারাই আবার ইংরেজী থার্টি ফার্স্ট নাইটের অশ্লীলতায় মজে থাকে। পহেলা বৈশাখের বাঙ্গালীয়ানা এবং থার্টি ফার্স্ট নাইটের খ্রীষ্টিয়ানা কোনটাই ৯৮ ভাগ মুসলমানের এদেশে চলতে পারে না। পশ্চিমা বিজাতীয় খ্রিষ্টানদের অপসংস্কৃতি থার্টি ফার্স্ট নাইট এদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে। এই বিজাতীয় সংস্কৃতি সম্পূর্ণ হারাম ও কুফরী তথা দেশের যুবসমাজের চরিত্র বিধ্বংসী।
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আলোকে- সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কতিপয় ফযীলত মুবারক বর্ণনা
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনও বন্ধ করলে যা লাভ হবে চালু রাখলে তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি হবে ৫৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের দাবী অবিলম্বে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হোক কিন্তু তাদের উপেক্ষা করে পরিবেশ উপদেষ্টা প্রমাণ করছে
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সুন্দরবন ধ্বংসে আন্তর্জাতিক চক্রান্ত চলছে ক্রমেই ছোট হচ্ছে সুন্দরবন, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য আমাদের পরম প্রয়োজনীয় সুন্দরবন, এই সুন্দরবন বাঁচলে বাংলাদেশ ভালো থাকবে ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের ফুসফুস সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে যাচ্ছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাড়ছে পরকীয়া, বাড়ছে তালাক সমাজে বাড়ছে কলহ-বিবাদ, শিথিল হয়ে পড়ছে পারিবারিক বন্ধন দ্বীনী মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ।
২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজও বেশি বেশি করতে হবে।
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পেয়াজ, সরিষা, ধান এমনকি ভরা মৌসুমে আলুর নিম্নমানের বীজে মহা ক্ষতির মুুখে চাষিরা। বহুদিন ধরে বিভিন্ন কোম্পানীর বীজে প্রবঞ্চিত হবার পর এখন খোদ সরকারের প্রণোদনার বীজেও প্রতারিত কৃষক। কৃষিপ্রধান দেশে কৃষক ও কৃষিপণ্য নিয়ে এমন ছিনিমিনি খেলা আর কতদিন চলবে?
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৯৮ ভাগ মুসলমানের দেশে মুসলমানের সংজ্ঞা কতজন মুসলমান জানে? প্রকৃত মুসলমান না হয়ে শুধু বাহ্যিক মুসলমান দাবি কী অন্যায় নয়? মুসলমান মাত্রই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করতে হবে।
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ডিজিটালাইজেশনের নামে শিশু-কিশোরদের ইন্টারনেট ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। দেশের ইন্টারনেট জগতে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় শিশু-কিশোররা আক্রান্ত হচ্ছে অশ্লীলতায়। শিখছে অনৈতিকতা, বেহায়াপনা, হিংস্রতা। সরকারের উচিত- দ্রুত দেশের ইন্টারনেট জগতে কন্টেন্ট ফিল্টারিংয়ের ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে শিশু কিশোরদের ইন্টারনেট আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অনুশাসন প্রচার প্রসার করা।
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)