প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
, ০১ মার্চ, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সম্পাদকীয়
কী শহর কী গ্রাম চারদিকেই প্রতারণার ফাঁদ পাতা। একের পর এক প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। পদে পদে প্রতারিত হয়ে সর্বস¦ খোয়াচ্ছে মানুষ। সমাজে চলতি পথে প্রতারণার এমনি জাল বিছানো যে, ঘরে বসেও রেহাই পাবে না কেউ। প্রতারণার নানা কৌশল নিয়ে একটি চক্র সর্বদা সজাগ। তাদের ফাঁদে পড়ে খোয়াতে হয় তিলে তিলে গড়া সঞ্চয়টুকুও। প্রতারণার এই ভয়াবহতার শিকড়-বাকড় ব্যক্তি-পরিবার থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ও ক্রমে ছড়িয়ে পড়ছে।
ফুটপাত থেকে শুরু করে অফিস-আদালতের নানা পর্যায়েই চলে নিত্যনতুন প্রতারণা। ঘরে বসে ফেরিওয়ালাদের জিনিসপত্র কিনতে গিয়ে ওজনে ঠকতে হয়, সাহায্যের নামে টাউট-বাটপারদের হাতে তুলে দিতে হয় নগদ টাকার চাঁদা। গন্তব্যে যেতে সিএনজি, অটোরিকশা ও ট্যাক্সিক্যাবের মিটার জালিয়াতির কবলে পড়ে ‘অতিরিক্ত ভাড়া’ পরিশোধের পরও গুনতে হয় ২০-২৫-৫০ টাকার বাড়তি বখশিশ।
রাস্তা, বাজার, কর্মস্থলসহ সর্বত্রই আরো কত রকমের ফাঁদ, মওকায় যে লোকজনের পকেট খালি হয় তার ইয়ত্তা নেই। জীবনযাত্রার সব ক্ষেত্রেই প্রতারণার অক্টোপাসে বন্দি হয়ে পড়ছে, পদে পদে ওঁৎ পেতে থাকছে নানামুখী বিপদ। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রকমের অন্তত ২০০ প্রতারক সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের কাছে প্রতিদিন সহস্রাধিক লোক প্রতারণার শিকার হয়। ডিএমপিভুক্ত থানাগুলোর লিপিবদ্ধ মামলা-জিডি ও পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতারণার খবরা-খবরের সূত্র ধরে এ পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে।
জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে ‘প্রতারণাও’ ইদানীং ডিজিটাল রূপ পেতে শুরু করেছে। এখন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড যেমন জালিয়াতি করে অন্যের অ্যাকাউন্ট খালি করা হচ্ছে, তেমনি গলাকাটা পাসপোর্ট তৈরি, বিদেশী ভুয়া ওয়ার্কপারমিট ও নিয়োগপত্র প্রস্তুত করলেও সহজে তা জাল প্রমাণের উপায় থাকে না। জাল টাকার ছড়াছড়ি আছে বাজার জুড়ে। মোবাইলফোনে লাখ লাখ টাকা লটারি পাওয়ার প্রলোভনযুক্ত মেসেজ বানিয়েও প্রতারণা করা হচ্ছে অহরহ।
প্রসূতি মায়ের সন্তান প্রসব থেকে শুরু করে শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি, বিয়ে এমনকি মৃত্যুর পর লাশ দাফন পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই প্রতারণার একচ্ছত্র দাপট রয়েছে।
বিভিন্ন পয়েন্টে আলাদা আলাদা চক্র প্রতারণার জাল বিছিয়ে নানা পদ্ধতিতে মানুষ ঠকিয়ে যাচ্ছে। নগরীর ফুটপাতে নাক-কান-গলা রোগসহ দুরারোগ্য সব ব্যাধি থেকে মুক্তির সেøাগান নিয়ে ভুয়া চিকিৎসকরা বসছে নানা ওষুধের পসরা সাজিয়ে।
গভীর রাতে জিনের বাদশাহ সেজে মোবাইলফোনে কল দিয়ে কথা বলা হয়, বলে দেয়া হয় অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ। মোটা অঙ্কের সেলামি দাবি করে বলে দেয়া হয় জিনের বাদশাহকে খুশি করলে আপনার বাড়িতেই মাটির নিচে থাকা গুপ্তধনের সন্ধান দেবে জিন বাবা।
চাহিদা মতো সেলামি আর গুপ্তধন উঠানোর খরচ হাতিয়ে নিয়েই নিরুদ্দেশ হয়ে যায় কথিত জিনের বাদশাহ। রোগ-ব্যাধি নিরাময়ে যে কোনো হাসপাতালের উদ্দেশ্যে গেলেই দালাল চক্রের বেহাল উৎপাত চোখে পড়ে। অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য কোনো যানবাহন থেকে রোগী নামানো, রেজিস্টার খাতায় নিবন্ধন, কোন ডাক্তার রোগীর চিকিৎসা করবে এসব কিছুই নিয়ন্ত্রণ করে হাসপাতাল গেটের দালালরা। দালাল চক্রের উৎপাত আছে কোর্ট-কাচারি, বিআরটিএ অফিস, বাস টার্মিনাল, সাব রেজিস্ট্রি অফিস, যে কোনো থানার গেটে, পাসপোর্ট দফতরসহ নাগরিক সেবা প্রদানকারী প্রায় প্রতিটি পয়েন্টে। প্রতারণামূলক লটারির দৌরাত্ম্য ইদানীং কিছুটা কমলেও বেড়ে গেছে চাকরি দেয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ফন্দিফিকির। রাস্তাঘাটের যেখানে সেখানে দেখা যায় পার্টটাইম চাকরির বিজ্ঞাপন।
এগুলো বেশির ভাগই প্রতারকদের পাতা ফাঁদ, পা দিলেই বিপদ। সংঘবদ্ধ একটি চক্র খাদ্য অধিদফতর, রেল বিভাগ, সেনাবাহিনী, ভূমি জরিপ অধিদফতরসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থায় চাকরি দেয়ার নামে একযোগে হাজার হাজার তরুণ-যুবককে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে।
ইমিগ্র্যান্ট ভিসা দেয়ার লোভ দেখিয়ে সর্বস¦ান্ত করা হয়েছে অনেককে। বেকার যুবক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী থেকে শুরু করে সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাও রয়েছে এ তালিকায়। তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় ৪ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত, কানাডার ইমিগ্র্যান্ট ভিসা দেয়ার নামে অভিনব পদ্ধতিতে টাকা নেয়া হয়। পরে রাতের আঁধারে গুটিয়ে নিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যরা পালিয়ে যায়।
জমি কেনার পর দেখা যায়- জমির ভুয়া মালিক সেজে যে বিক্রি করেছে, সে শুধুই একজন নিয়োজিত দালাল মাত্র। জমির বায়নানামার স্ট্যাম্প থেকে দলিলপত্র পর্যন্ত সবই হয়েছে জাল।
রোগ যেটাই হোক একগাদা অপ্রয়োজনীয় টেস্ট আর বেশি পরিমাণ ওষুধ ধরিয়ে দিচ্ছে ডাক্তার। বিপদে পড়ে অ্যাডভোকেটের কাছে গেলে কোর্ট চত্বরেই প্রতারক চক্রের কবলে পড়েন অসংখ্য ভুক্তভোগী। এমন অগণিত প্রতারণায় বন্দি গোটা দেশ। যেন পদে পদে ওঁৎ পেতে থাকে বিপদ।
প্রসঙ্গত আমরা মনে করি যে, শুধু আইনের বল প্রয়োগেই এ প্রতারণা প্রবণতা রোধ করা যাবে না। কারণ মানুষের তৈরি আইনের গোলকধাঁধায় মানুষ সহজেই পার পেয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অত্যাবশ্যকীয় হলো- খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি অনুগত হওয়া ও উনার ভয় লালন করা এবং এ সম্পর্কিত মূল্যবোধ ও চেতনা জাগ্রত করা।
মূলত, আজকের যুগে ধর্মব্যবসায়ী তথা উলামায়ে সূদের প্রাদুর্ভাব থাকায় এহেন সম্মানিত দ্বীন ইসলামী চেতনা কারো মাঝে নেই বললেই চলে। বরং উলামায়ে ‘সূ’রাও যেভাবে অসততায় আর দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়েছে তা দেখেই প্রতারণাকারী ও দুর্নীতিবাজরা আরো সাহসী ও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তার পরিণতিতেই সারাদেশব্যাপী এত প্রতারণা আর দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে।
তাই এ থেকে রক্ষা পেতে হলে তথা প্রতারণা থেকে মুক্তি পেতে হলে অত্যাবশ্যকীয়ভাবে দেশের সরকারসহ দেশের জনগণকে হাক্বীকীভাবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে প্রবেশ করতে হবে। আর দেশের সরকার-জনগণ তখনই হাক্বীকীভাবে দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে যখন দেশের সর্বত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ তথা মহাসম্মানিত ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ, অনুভূতি, সর্বোচ্চ প্রতিপালন নিশ্চিত হবে। কারণ একমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত মুবারকই পারে দেশ থেকে প্রতারণা নামক ঘৃণ্য অপসংস্কৃতিটি দূর করতে।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পাঁচ হাজার পৃষ্ঠার বিশাল নথিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার একর বনভূমি দখলদার ১ লাখ ৬০ হাজার নাম এসেছে শুধু নাম সর্বস্ব না করে বনভূমি উদ্ধারের বাস্তব নজীর চাই
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফুটপাতের প্রান্তিক হকারদের কাছ থেকে অসৎ ও লুটেরা মহল প্রতি মাসে চাঁদা আদায় করছে শত শত কোটি টাকা; অথচ সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ অর্থ দিয়ে বারবার উচ্ছেদ হওয়া হকারদের পুনর্বাসন সম্ভব; অন্যদিকে এই অর্থ যোগ হতে পারে জাতীয় অর্থনীতিতে। সরকারের আশু নজর কাম্য।
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দ্রব্যমূল্যের আগুনে ঝলসে যাচ্ছে মানুষ। মূল্যস্ফীতির চাপে পিষ্ট হচ্ছে জনসাধারণ। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের রকমফের চটকদার কথার পরিবর্তে এক্ষনি মূল্যস্ফীতিকে সংকুচিত করে দেশবাসীকে বাঁচাতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৭ হাজার ৮০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুদের দেশে কয়লার ঘাটতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ কেন? বিগত মাফিয়া সরকারের পথ থেকে সরে এসে কয়লা উত্তোলন শুরু করুন।
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গঃ মোবাইল ফোনের ব্যবহার ও অপব্যবহার।
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হোল্ডিং ট্যাক্স ছাড়, তাপ মুক্তি নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি, পরিবেশ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদ হোক একটুকরো বাগান
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৪০ শতাংশের বেশি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বন্ধ হয়েছে যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে ইনশাআল্লাহ ঘুরে দাঁড়াবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুদি দোকান, স্টেশনারি দোকান, শপিং মল, পার্লার, সুপার শপ সবখানেই ভেজাল কসমেটিক্স। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবহারকারীরা। সরকারের কঠোর নজরদারী ও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দেশের ৪ কোটি মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ দেশে মাথাপিছু খাদ্য অপচয় হয় প্রায় ৯০ কেজি। বছরে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রবীউছ ছানী শরীফ! সাইয়্যিদাতুনা উম্মুর রদ্বাআহ আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ, আখু রসূলিল্লাহ মিনার রদ্বাআহ সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিক্ষা খাতে পতিত সরকারের বাজেটে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি শিক্ষার্থীরা যাতে ঝরে না পড়ে- শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে বর্তমান সরকারকে তা নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাস ও নীরব ঘাতকে পরিণত হয়েছে। নারিকেল দ্বীপ নয় শব্দ দূষণে বিপর্যস্থ ঢাকাকে উপযোগী করার জন্য ঢাকার জনযট সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)