পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসে মুসলমানদের অবিস্মরণীয় বিজয়সমূহ
, ১২ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৪ হাদি ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৪ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রি:, ২১ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) আপনাদের মতামত
রহমত, বরকত, ছাকীনা এবং মাগফিরাতের মাস পবিত্র রমাদ্বান শরীফ। ইবাদত-বন্দেগীর পাশাপাশি ইতিহাসের দিকে যদি আমরা লক্ষ্য করি, তবে মুসলিম উম্মাহর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের অনেক ঘটনার সাক্ষী পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস। এই পবিত্র মাসেই এমন অনেক বিজয় অভিযান সম্পন্ন হয়েছে যা মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসের গতিধারাকে পরিবর্তিত করেছে।
মহাপবিত্র বদর জিহাদ
সম্মানিত দ্বিতীয় হিজরী শরীফ উনার ১৭ই রমাদ্বান শরীফ পবিত্র মদীনা শরীফ উনার দক্ষিণ-পশ্চিমে বদর প্রান্তরে পবিত্র বদর জিহাদ সংঘঠিত হয়। সম্মানিত জিহাদ মুবারকে মুসলমান উনাদের সংখ্যা ছিলেন ৩১৩ জন। বিপরীতে কাফিরদের সংখ্যা ছিলো ১০০০ জন। এই জিহাদ মুবারকে মুসলমানদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত ও বিধ্বস্ত হয় কাফিররা।
মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়
পবিত্র অষ্টম হিজরী শরীফ উনার ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ মুসলিম বাহিনী পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় করে নেন। এর মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমগ্র আরব উপদ্বীপে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বিজয় হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
নুবিয়া বিজয়
৩১ হিজরীর পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসে মুসলিম বাহিনী দক্ষিন মিসরের নুবিয়ায় আফ্রিকান নুবীয় বাহিনীর সাথে যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেন। এর মাধ্যমে পূর্ব আফ্রিকায় সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রচারের পথ প্রসারিত হয়।
স্পেন বিজয়
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসে স্পেনের গোয়াদেলেত নদীর তীরে সিদনিয়া শহরের নিকট মুসলিম সেনাপতি তারিক ইবনে যিয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি সাত হাজার মুসলিম সৈনিকের একটি বাহিনী নিয়ে স্পেনের তৎকালীন অত্যাচারী শাসক রডরিকের গঠিত বিশাল সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হন। যুদ্ধে স্পেনীয় বাহিনী মুসলিম বাহিনীর নিকট শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এই বিজয়ের মাধ্যমে ইউরোপের বুকে আইবেরিয় উপদ্বীপে মুসলিম শাসনের সূচনা হয়।
আইন-জালুতের যুদ্ধ
১২৫৮ সালে হালাকু খানের নেতৃত্বে মোঙ্গল বাহিনী আব্বাসীয় সালতানাতের রাজধানী বাগদাদ ধ্বংস করে এবং সমগ্র ইরাক দখল করে নেয় ও গণহত্যা চালায়। তারা সিরিয়া ও মিসর সহ অবশিষ্ট মুসলিম ভূখন্ড দখল করতে আসলে মিসরের মামলুক সুলতান সাইফুদ্দিন কুতুজ রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং উনার সেনাপতি রুকুনুদ্দিন বাইবার্স রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সহায়তায় মোঙ্গল বাহিনীকে বাধা দেওয়ার জন্য অগ্রসর হন। ১২৬০ সালের ১৫ই রমাদ্বান শরীফ উভয় বাহিনী ফিলিস্তিনের নাজারাথের নিকট আইন জালুত প্রান্তরে মুখোমুখি হয়। যুদ্ধে মোঙ্গল বাহিনী মিসরের মামলুক বাহিনীর নিকট শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয় এবং পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার অবশিষ্ট মুসলিম ভূখন্ডসমূহ মোঙ্গল বর্বরতার হাত থেকে রক্ষা পায়। এ জিহাদের মাধ্যমে মোঙ্গল বাহিনীর বিষদাঁত ভেঙে যায়।
ক্রিমিয়া বিজয়
উসমানীয় সুলতান মুহম্মদ আল ফাতিহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সময়ে কসতুনতুনিয়া বা কনস্ট্যান্টিনোপল বিজয়ের পাশাপাশি ইউরোপের সার্বিয়া, বসনিয়া, আলবেনিয়া সহ বলকান অঞ্চলের একটি বিরাট অংশ, কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী অঞ্চল বিজিত হয়। এছাড়া, ককেশাসের নিকটবর্তী ক্রিমিয়া অঞ্চল উনার হাতেই পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসে উসমানীয় সালতানাতের অন্তর্ভূক্ত হয়।
সিজদায় বালিশের ব্যবহারও যেখানে দুরস্ত নয়, সেখানে নামাযের মধ্যে চেয়ার ব্যবহার কিভাবে বৈধ হতে পারে?
আমাদের সমাজে বৃদ্ধলোকদের কোমড়ের সমস্যার দোহাই দিয়ে বালিশে সিজদা করাটার খুব প্রচলন রয়েছে। কিন্তু পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এই বালিশে সিজদা করাটাকে সরাসরি নিষেধ করা হয়েছে।
“হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক অসুস্থ ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে দেখতে যান। তখন ওই ছাহাবী তিনি অসুস্থতার কারণে নামায উনার মধ্যে একটি বালিশের উপর সিজদা করছিলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বালিশটি সরিয়ে ফেলেন এবং বলেন, “আপনি যদি সক্ষম হন তাহলে মাটির উপর নামায আদায় করবেন। তাতে সক্ষম না হলে ইশারায় নামায আদায় করবেন। আপনার সিজদাকে রুকুর চেয়ে একটু বেশি নিচু করবেন।” (পবিত্র আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার ২১৯ তম সংখ্যা, বাযযার শরীফ, বায়হাক্বী শরীফ)
যেখানে পবিত্র নামায উনার মধ্যে বালিশ ব্যবহার করাও জায়িয নেই, সেখানে চেয়ার ব্যবহার করা কিভাবে বৈধ হতে পারে?
এটি সবাই জানে যে, দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে চেয়ার ব্যবহারের বৈধতা নেই। যে কারণে চেয়ারে নামায পড়াটা কখনোই বৈধ ছিলনা এবং বৈধ হওয়ার প্রশ্নও ওঠে না। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিআল্লাহ তায়ালা আনহুম উনারা থেকে শুরু করে তাবেয়ী-তাবে তাবেয়ীনগণ উনারা কেউ চেয়ার ব্যবহার করেননি।
যে কারণে মসজিদ-মাদ্রাসাগুলোতে কোন চেয়ার কেউ কখনো দেখতে পাবে না। চেয়ারে বসে নামায পড়লে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে, কারণ নামায উনার মধ্যে কোন অবলম্বন ব্যবহার করা নিষেধ।
-গোলাম মুর্শিদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
১০ ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যুব সমাজকে খেলাধুলার প্রতি ঝুঁকিয়ে দেয়া একটি ভয়াবহ চক্রান্ত
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, তাহলেই রাজধানী হবে সমস্যামুক্ত
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুলুমতন্ত্র থেকে খালিছ ইস্তিগফার-তওবা করুন
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
উপজাতিদের যেভাবে উস্কানি দিচ্ছে এনজিওগুলো
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিন্দুদের পূর্বপুরুষরাও একসময় মুসলমান ছিলো
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাবার খাবেন কোথায়?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রক্তাক্ত ইতিহাস, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জায়নবাদী ইহুদী পরিকল্পনার গোপন দস্তাবেজ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মীরা কখনোই চায়নি, এখনও চায় না মুসলমানদের উন্নতি
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ স্টাইলের শাসকগোষ্ঠী দিয়ে উন্নয়ন নয়, লুটপাটই হবে
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মুসলমানরা তাদের সন্তানদের কি শেখাচ্ছে, কি শেখানো উচিত? (২)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)