حكايات الابرار হিকায়াতুল আবরার বা নছীহতমূলক ঘটনাসমূহ
তওবাকারীকে মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল করে নেন
, ১০ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৮ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২৭ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ১২ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
اولئك هم المفلحون অর্থাৎ তারাই কামিয়াব হয়েছে, যাঁরা তাক্বওয়া অর্জন করেছে। এখন اولئك هم المفلحون কামিয়াবীর যে তাক্বওয়া সেটা কেমন তাক্বওয়া? এ প্রসঙ্গে একটা মেছাল দেয়া হয়। اولئك هم المفلحون তারা কামিয়াব হয়েছে। ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীকত হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একটা ওয়াকেয়া উল্লেখ করা হয়। উনার প্রতিবেশীর মধ্যে শামাউন নামে একজন মজুসী (অর্থাৎ অগ্নি উপাসক) ছিল এবং সে ব্যক্তি সত্তর বছর হায়াত পেয়েছে। তার যখন মৃত্যুর সময় হলো, তখন এক ব্যক্তি সংবাদ দিল হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে। হুযূর আপনার প্রতিবেশী যে মজুসী শামাউন সেতো মারা যাচ্ছে। আপনি একটু দয়া করে তাকে নছীহত করুন। হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আসলেন। এসে বললেন, হে শামাউন, তুমি তো সারা জীবন অগ্নি উপাসনা করলে, এখন আর কত করবে? সত্তর বছর হয়ে গেছে, তার চেহারাটা কালো হয়ে গেছে, শরীরটা কালো হয়ে গেছে, তুমি তওবা কর। সে বললো, হুযূর সত্যি আমি পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করতাম, তবে কয়েকটা কারণে পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করিনা। কেননা? আপনাদের যারা মুসলমান, তারা পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করেছেন অথচ মহান আল্লাহ পাক উনাকে মানেন না, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মানেন না অর্থাৎ সারাদিন তারা দুনিয়ার মধ্যে মশগুল থাকেন, কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার কাজে একটুও মশগুল নন। তাদের আমার পছন্দ হয় না। এ সমস্ত মুসলমান দেখলে আমার ঈমান আনতে ইচ্ছা হয় না। আপনারা বিশ্বাস করেন মৃত্যু হবে, অথচ এমন কাজ করেন যা মহান আল্লাহ পাক উনার অসন্তুষ্টিজনক। সন্তুষ্টিজনক কোন কাজ উনারা করেন না ইত্যাদি কারণে আমার পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করতে ইচ্ছা হয় না। কিন্তু হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, হ্যাঁ, তোমার কথা সত্যই। তুমি যা বলেছ সত্য তবে মনে রেখ তোমার এখনও সময় আছে তুমি পবিত্র ইসলাম উনাকে গ্রহণ কর, তওবা কর, তুমি নাযাত পাবে। আগুন থেকেও রেহাই পাবে। তখন সেই শামাউন বললো, হুযূর আমি তো জীবন ভর অগ্নি উপাসনা করেছি। কাজেই তার মনে মনে একটা খেয়াল হয়তো আগুন তাকে স্পর্শ করবে না। হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সামনে আগুন ছিল, তিনি আগুনের মধ্যে হাত প্রবেশ করালেন এবং বললেন, দেখতো তোমার আগুন তো আমাকে কোনই ক্ষতি করতে পারলো না। কিন্তু তুমি হাত দিলে তোমাকে আগুন ঠিকই পোড়াবে। সে খুব চিন্তিত হয়ে গেল, এখন কি করা যায়। তুমি তওবা করে ঈমান আন। পবিত্র ইসলাম উনাকে গ্রহণ কর। সে বললো হুযূর আমি পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করতে পারি একটা শর্তে। আপনাকে একটা লিখিত দিতে হবে যে, আমি পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করে মারা গেলে আমার কোন কবরের আযাব হবে না। এ রকম একটা লিখিত দিলে আমি তওবা করে পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করবো। হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, বেশ। কাগজ আন। তিনি কাগজের মধ্যে লিখে দিলেন, তুমি যদি খালিছভাবে তওবা করে মারা যাও, তোমার কবরের আযাব হবে না। তখন শামাউন তার কিছু পরিচিত লোকের দ্বারা দস্তখত (সিগনেচার) নিলো, তারপর সে দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করলো এবং পবিত্র কলিমা শরীফ পড়তে পড়তে মারা গেল। যখন মারা গেল, তাকে দাফন-কাফন করা হলো। সে ওছীয়ত করেছিল যে, হুযূর আপনি দয়া করে আপনার মুবারক হাতে আমাকে গোসল করাবেন, কাফন পরাবেন, দাফন করাবেন। হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাই করলেন। কিন্তু তাকে যখন দাফন করে তিনি চলে আসলেন, উনার মনে চিন্তা উদয় হলো যে, মহান আল্লাহ পাক! আমি এটা কি করলাম। আমারই তো নাযাতের কোন নিশ্চয়তা নেই, আমি নাযাত পাই কিনা? অথচ আমি ওকে লিখে দিলাম যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে কবরের আযাব থেকে নাযাত দিয়ে দেবেন। এটা কেমন কাজ হলো? উনি অনেক চিন্তা করতে করতে গভীর রাতে ঘুমিয়ে গেলেন। ঘুমের মধ্যে তিনি স্বপে¦ শামাউনকে দেখলেন। সে স্বর্ণের মুকুট মাথায় প্রফুল্ল অবস্থায় দামী দামী পোশাক পরিচ্ছদ পরে বেহেশত উনার মধ্যে বিচরণ করছে, খুব হাসিখুশী। সে বললো, হে হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি আপনার কথা আমি সত্য পেয়েছি। হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, কেমন আছ? আপনি যেমন দেখছেন। বললো, হুযূর আপনার এই কাগজটার আর জরুরত নেই, আপনি এটা নিয়ে নেন। হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি চিন্তা করছিলেন, কাগজটা আবার যদি ক্বিয়ামতের দিন পেশ করে, তাহলে আমার কি অবস্থা হবে? সে বললো, হুযূর আপনার কাগজের আমার আর কোন জরুরত নেই। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার ফয়সালা করে দিয়েছেন। কাগজটা আপনি দয়া করে নিয়ে যান। হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি সেই কাগজটা নিয়ে নিলেন। উনার ঘুম ভেঙ্গে গেল। ঘুম থেকে উঠে দেখেন, উনার হাতে সেই কাগজটা রয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)