অন্যরকম এক ইতিহাসের সাক্ষী মৌলভীবাজারের ঐতিহাসিক গয়ঘর খোজার মসজিদ।
, ১৮ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৭ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ২২ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) স্থাপত্য নিদর্শন

দেয়ালের শুভ্র রঙ দূর থেকে জ্বলজ্বল করে। মেঝে ও গম্বুজে টাইলস লাগানো হয়েছে। তিনটি বড় দরজা ও ছয়টি ছোট দরজা। ভেতরের পূর্ব দিকের একটি স্তম্ভে গেলে দেখা যাবে বাঘের থাবার চিহ্ন।
স্থানীয় লোকজন জানান, মসজিদের বাইরে দুটি বড় কষ্টিপাথর ছিল। এখন নেই। জনশ্রুতি আছে, পাথরগুলো নাকি রাতের আঁধারে জায়গাবদল করতো। তাই মানুষ পাথর দুটিকে ভাবতো জীবন্ত! অনেকে আবার এ পাথরকে ভক্তি করে পাথর-ধোয়া পানিও খেতেন।
খোজার মসজিদ নির্মাণ করা হয় সুলতান বরবক শাহের ছেলে সুলতান শামসুদ্দীন ইউছুফ শাহর আমলে। হাজি আমীরের পৌত্র মজলিস আলম ১৪৭৬ খৃ: নির্মাণ করেন এটি। সিলেটের হজরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মসজিদ ও খোজার মসজিদের শিলালিপিতে উল্লেখ থাকা মজলিস আলম একই ব্যক্তি। মসজিদ দুটি নির্মিত হয়েছিল চার বছরের ব্যবধানে।
স্থানীয় মুছুল্লিদের কাছ থেকে জানা যায়, এ মসজিদ যখন বানানো হচ্ছিল, তখন ঘনজঙ্গল ছিল এলাকাটি। বিচরণ ছিল বাঘের। হয়তো সে সময়ই কোনও বাঘ মসজিদের কাঁচা দেয়ালে থাবা বসিয়েছিল। এখনও টিকে আছে সেই চিহ্ন ।
দেয়ালের ওপর আরবি লিপি। আছে ফুল-লতার ছবি। পশ্চিমের দেয়ালে পাথরের পুরনো শিলালিপিও আছে। চুরি ঠেকাতে লোহার খাঁচা দেওয়া হয়েছে এতে। দেয়ালের ইটের গাঁথুনি বেশ পুরু। মূল মসজিদ দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ২৪ হাত করে। গম্বুজ ১৮ ফুট উঁচু।
ঐতিহাসিক মসজিদ হওয়ায় এবং বিশেষ করে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে অনেকেই আসে এ মসজিদে।
মসজিদটির নামকরণ নিয়ে পরিষ্কার তথ্য মেলে না। তবে প্রচলিত আছে, মানসিংহের কাছ থেকে এ এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় পাঠান বীর খাজা উসমান মসজিদটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই খাজা থেকেই খোজা।
মসজিদের ঈমামের কাছ থেকে জানা যায়, মসজিদটি সংরক্ষণ করতে প্রতœতত্ত্ব বিভাগের লোকজন আগেই এসেছিলেন। কিন্তু কোনও সংস্কার হয়নি। এভাবেই আছে।
খোজার মসজিদের এলাকা ৬০ শতক। কাগজপত্রে জমির পরিমাণ এক একর ৮ শতক। পাশে কবরস্থান আছে। এর সংস্কারকাজে উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।
খোজার মসজিদের ইতিহাস ঘাঁটতে গিয়ে আরও জানা গেলো, ১৯৩৮-১৯৪০ খৃ: মধ্যে আজম শাহ নামের এক পীর ছাহেব এ মসজিদে আসেন। ১৯৪০ খৃ: দিকে মসজিদের গম্বুজ ভেঙে পড়ে। তখন তিনি মানুষের সাথে নিয়ে সম্মিলিতভাবে অর্থ সংগ্রহ করে হবিগঞ্জের বানিয়াচং থেকে ইসমাইল মিস্ত্রি নামে একজনকে দিয়ে সংস্কার করান। ১৯৬০ খৃ: আরও একবার মসজিদটির সংস্কার করান তিনি। আজম শাহ চলে গেলে এটি অরক্ষিত হয়ে পড়ে। ঝোপজঙ্গলে ছেয়ে যায়। গম্বুজে জন্মায় বটের চারা। এরপর দফায় দফায় আরও সংস্কার করা হয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুঘল আমলের নিরাপত্তা নিদর্শন হাজীগঞ্জ দুর্গ
০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রাচীন মসজিদের অজানা ইতিহাস
০৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তাজ-উল-মসজিদ ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ
২৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
টাইম ম্যাগাজিনের তালিকায় আশুলিয়ার জেবুন নেসা মসজিদ
২১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক চুনাখোলা মসজিদ
১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১৪)
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (৩)
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (২)
০৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (১)
২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১১)
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (৩)
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১০)
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)