সরকারের মন্ত্রীর হিসেবে হোটেলে প্রতিদিন ৫-৭ হাজার মরা মুরগি বিক্রি হয় আসলে বিক্রি হয় ১০-১২ হাজার হোটেল-রেস্তোরাঁয় দেদারসে বিক্রি হচ্ছে মরা মুরগি। দেখার কেউ নেই।
, ২৪ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১০ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৯ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মন্তব্য কলাম
নামি-দামি রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে ফুটপাতের খাবারের দোকান- সবখানেই মিলছে মরা মুরগি। এসব মরা মুরগি পুড়িয়ে ফেলা বা ধ্বংস করার নিয়ম থাকলেও একটি চক্র আড়ত থেকে মরা মুরগি সংগ্রহ করে বিক্রি করছে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে। রাজধানীতে মরা মুরগি বিক্রেতা চক্র আবার সক্রিয়। নামি-দামি হোটেলগুলোতে তারা নিয়মিত মরা মুরগির যোগান দিয়ে যাচ্ছে। হোটেল মালিকের অজান্তেই সিন্ডিকেট এ ধরণের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। চায়নিজ থেকে শুরু করে গুলশান, বনানী ও উত্তরার নামি-দামি হোটেলেও মরা মুরগি সরবরাহ করে এই চক্র। ঢাকার তিনটি বৃহৎ মুরগির আড়ত তেজগাঁও, কাপ্তান বাজার এবং ফকিরাপুল থেকে মরা মুরগি সরাসরি চলে যাচ্ছে এসব হোটেল রেস্টুরেন্টে। বিপণি বিতানেও বিক্রি হচ্ছে মরা মুরগি। ভোক্তারা না জেনেই সেগুলো দেদারছে খাচ্ছে।
তথ্য অনুযায়ী ঢাকার তেজগাঁও, কাপ্তান বাজার এবং ফকিরাপুল মুরগির আড়ত থেকে প্রতিদিন দেড় লাখের অধিক মুরগি বিক্রি হয়। এসব মুরগির বেশিরভাগ হোটেল রেস্তোরাঁ, বিপণি বিতান ও বাসাবাড়িতে খাওয়ার জন্য বিক্রি হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে ট্রাকযোগে ঢাকায় আনা হয় মুরগিগুলো। জানা গেছে, ঢাকায় পৌঁছাতে অনেক ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এর মধ্যে ফার্মের মুরগি, যাদের সহনক্ষমতা একেবারেই কম দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে ঢাকায় আসতে মারা যায়। কিছু মারা যায় ট্রাকে চাপাচাপির কারণে। আবার যেসব মুরগির সহনক্ষমতা কম একটু গরমেই হিটস্ট্রোকে এগুলো মারা যায়। মরা মুরগি বিক্রেতাদের হিসাব মতে, প্রতিদিন ৩ হাজারেরও বেশি মুরগি ঢাকায় আনতে মারা যায়। আবার গরম বেশি পড়লে মরা মুরগির সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। কোনো কোনো মুরগি যেগুলো ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা আগে মারা যায় সেগুলোও ঢাকায় আসতে আসতে গন্ধ ছড়ায়।
মুরগি বহনকারী ট্রাক ঢাকায় আসার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ জনের একটি চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে মুরগি সংগ্রহের কাজে। প্রত্যেক ট্রাকে ১০ থেকে ১৫টি মরা মুরগি পাওয়া যায়। চক্রটি মরা মুরগিগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সংগ্রহ করে আড়তের আড়ালে নিয়ে যায় এবং চামড়া ছাড়িয়ে ফেলে। একবার চামড়া ছাড়িয়ে নিলে কেউ আর বুঝতে পারে না যে মুরগিগুলো মরা ছিল। আবার যেসব মুরগি মরে গন্ধ বের হয় সেগুলোতে লেবুর রস স্প্রে করে পলিথিনে ভরে সরিয়ে ফেলে। এদের সঙ্গে আরেকটি চক্র জড়িত যারা তাদের কাছ থেকে মুরগি কিনে নিয়ে যায় উত্তরা, গুলশানসহ রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল রেন্টুরেন্ট ও বিপণি বিতানে। ৪০ টাকায় কেনা এসব মুরগি নামি-দামি এসব হোটেল ও বিপণি বিতানে বিক্রি হয় ২শ’ টাকায়। তখন কেউ আর বুঝতে পারে না মুরগিগুলো মরা ছিল। আর না বুঝে অনেকে মরা মুরগি কিনে বাসায় নিয়ে যায়। আবার হোটেলেও খাবার হিসেবে বিক্রি হয়।
এভাবে রাজধানীসহ সারা দেশের হোটেল রেস্তোরাঁয় দেদারসে বিক্রি হচ্ছে মরা মুরগি। এসব ব্যবসার সঙ্গে অর্ধশত শক্তিশালী চক্র জড়িত। চক্রের সদস্যদের সহযোগিতা করছে স্থানীয় সন্ত্রাসী, পুলিশ ও ডিসিসির বাজার শাখার অসৎ কর্মচারীরা। মাঝে মধ্যে মুরগি ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলে তাদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। এমনকি সন্ত্রাসীরা পুলিশকে দিয়ে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিচ্ছে।
হোটেল মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে আঁতাত করে এসব কেনা-বেচা করছে প্রতারকরা। মরা মুরগি নিয়ে গোয়েন্দারা ব্যাপক অনুসন্ধান করে জানতে পারে, স্থানীয় সন্ত্রাসী, পুলিশ ও ডিসিসির বাজার শাখার কিছু কর্মচারী এ ঘটনায় জড়িত। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে হোটেল-রেস্তোরাঁয় প্রায় এক লাখ মরা মুরগি কেনা-বেচা হচ্ছে বলে অসৎ চক্রের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গেছে। মরা মুরগিগুলো এমনভাবে হোটেলে আনা হয় যে কেউ দেখলে মনে করবে হালালভাবে জবাই করে এগুলো আনা হয়েছে। প্রতারকরা মরা মুরগি কেটে লেবু ও পানি মিশিয়ে মুরগির পুরো শরীরে ছিটিয়ে দেয়। আবার ভালো মুরগি জবাই করা রক্ত এনে মরা মুরগির শরীরে লাগিয়ে দেয়া হয়। পরে এগুলোর শরীর থেকে রক্ত ঝরতে থাকে।
প্রতারকরা বিভিন্ন কৌশলে আড়ত থেকে মরা মুরগিগুলো অন্যত্রে সরিয়ে নিচ্ছে। প্রতারক চক্রের এক সদস্য জানায়, প্রায় তিন বছর ধরে ঢাকার নামি-দামি হোটেলগুলোতে মরা মুরগি সাপ্লাই দিয়ে আসছি। এই এলাকার চিহ্নিত কয়েকজন সন্ত্রাসী এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তবে প্রকৃত মুরগি ব্যবসায়ীরা এসব কাজে জড়াচ্ছে না। পুলিশকে প্রতি মাসে টাকা দিতে হচ্ছে। আবার ডিসিসির একাধিক কর্মচারী প্রতারকদের সহযোগিতা করছে।
মরা মুরগি চায়নিজ রেস্টুরেন্ট, ফাস্ট ফুড ও রাস্তার পাশে কিংবা পাড়া-মহল্লার খাবার হোটেলে চাহিদা বেশি। জানা গেছে, মরা মুরগির গোশত নরম তাই এ গোশত দিয়ে স্যূপ তৈরি করা হয়। ফাস্ট ফুডে মুরগির তৈরি সব খাবারে এই মরা মুরগি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া এক শ্রেণীর নামি-দামি হোটেলেও মরা মুরগি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কারণ হিসেবে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, অধিক মুনাফার লোভে ওইসব হোটেল মালিকরা কিংবা মালিকদের অজ্ঞাতে ম্যানেজাররা মরা মুরগি ক্রয় করে থাকে।
মূলত: এই মরা মুরগীর ব্যবসা করে প্রতারক গং লাখোপতি থেকে কোটিপতি বনে গেছে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দেখেও না দেখার ভান করছে। তাদের নাকের ডগায়ই সব চলছে। মূলত কমিশন বাণিজ্য দিয়েই বহাল তবিয়তে এই মরা মুরগির ব্যবসা চলছে। যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মরা মুরগির ব্যবসা ধরার কথা সে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিজেই মারা গেছে। তাহলে মরা মুরগিওয়ালাদের ধরবে কে?
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)