মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলাহ্ মুবারক পরিবর্তন
, ১৫ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৯ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন, ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ২৪ই মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত বাইতুল মুক্বাদ্দাস শরীফ উনার দিকে ফিরে সম্মানিত ছলাত মুবারক আদায় করতেন। সুবহানাল্লাহ! ইহুদীরা এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে নানা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করতে থাকলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! তারা বলাবলি করতে লাগলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দাবী করে থাকেন যে, তিনি আলাদা একটি সম্মানিত ও পবিত্র শরীয়ত মুবারক এনেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত উনার ক্বিবলা সেই ইয়াহুদীদের ক্বিবলাই রয়ে গেছে।” না‘ঊযুবিল্লাহ!
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সম্মানিত দু‘আ মুবারক করতেন- মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বা’বা শরীফ উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলাহ্ মুবারক হিসেবে নির্ধারণ করেন এবং তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক উনার অপেক্ষায় আসমানের দিকে তাকিয়ে থাকতেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ১৪৪ নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হন এবং তাতে সম্মানিত বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ থেকে ক্বিবলাহ্ পরিবর্তন করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলাহ্ মুবারক হিসেবে নির্দিষ্ট করার বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
২য় হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৫ই রজবুল হারাম শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ অর্থাৎ সোমবার) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার ‘বনী সালামাহ্’ গোত্রে একটি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক-এ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে নিয়ে সম্মানিত জামা‘য়াত মুবারক উনার সাথে সম্মানিত ছলাতুল আছর আদায় করছিলেন। এমন সময় দুই রাকা‘আত সম্মানিত ছলাত মুবারক আদায় শেষে সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ১৪৪ নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফখানা নাযিল হন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফখানা হচ্ছেন-
قَدْ نَرٰى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِـى السَّمَآءِ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضٰىهَا فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْـحَرَامِ وَحَيْثُ مَا كُنْتُمْ فَوَلُّوْا وُجُوْهَكُمْ شَطْرَهٗ وَاِنَّ الَّذِيْنَ اُوْتُوا الْكِتٰبَ لَيَعْلَمُوْنَ اَنَّهُ الْـحَقُّ مِنْ رَّبّـِهِمْ وَمَا اللّٰهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُوْنَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি আপনার আকাশের দিকে বারবার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুখ মুবারক) ফিরিয়ে দেখাকে লক্ষ্য করেছি। যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলাহ্ মুবারক আপনি পছন্দ করেন, আমি আপনাকে সেদিকে ফিরে যেতে সম্মানিত ও পবিত্র ওহী মুবারক করছি। আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুখ মুবারক) ফিরান। আপনারা যেখানেই থাকুন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে মুখ ফিরান। মূলত, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তাদের জানা আছে যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বিবলাহ্ মুবারক পরিবর্তন তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে প্রকৃত সত্য এবং তারা যা করে মহান আল্লাহ পাক তিনি সে সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাকারা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪৪)
সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হওয়ার সাথে সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ছলাত মুবারক আদায়রত অবস্থাতেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে ঘুরে যান এবং উনার সাথে সাথে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা যাঁরা পিছনে সম্মানিত ছলাত আদায় করছিলেন উনারাও ঘুরে গেলেন। আর এভাবেই সম্মানিত ছলাতুল আছর উনার উনার পরবর্তী দুই রাক‘আত সম্মানিত ছলাত মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে ফিরে আদায় করে শেষ করেন। সেজন্যেই যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক-এ উনারা তখন ছলাত আদায় করছিলেন, সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনাকে ‘মসজিদে যুল ক্বিবলাতাইন’ অর্থাৎ দুই ক্বিবলাহ্ বিশিষ্ট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)