ইলমে তাছাউফ
বিশিষ্ট ওলীআল্লাহ হযরত আলী হাজবিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন,
, ০৯ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ১১ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সুতরাং কোনো ওলী উনার বা লোক সংশ্রবে থাকার চেয়ে নির্জনে থাকাই আমার জন্য উত্তম। তাই তিনি লোক সংশ্রব ত্যাগ করে নির্জনতা অবলম্বন করেন।
একদিন গভীর রাতে কয়েকজন লোক সেখানে উট নিয়ে উপস্থিত হয়ে বললো, আপনাকে বেহেশতে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছি। সুতরাং উক্ত দরবেশ উটে আরোহণ করে রওয়ানা হলেন। বেশ কিছুক্ষণ ভ্রমণের পর তাকে একটি মনোরম স্থানে নিয়ে তারা উপস্থিত হলো। এখানে সুন্দর সুন্দর লোক, নানা জাতীয় উপাদেয় খাদ্য, সুমিষ্ট ফল ও ফোয়ারা রয়েছে। পবিত্র ফজর উনার পূর্ব পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করতেন, অতঃপর ঘুমিয়ে পড়তেন। নিদ্রা ভঙ্গ হলে তিনি দেখতে পেতেন, তিনি তার ঘরের দরজায় পড়ে রয়েছেন।
বেশ কিছুদিন এভাবে চলতে থাকে। তিনি নিয়মিত উটে আরোহণ করে বেহেশতে ভ্রমণ করেন, বেহেশতে আহার করেন। ফলে উনার মধ্যে অহঙ্কার ও গৌরব বদ্ধমূল হয়ে গেলো। তিনি তার বুযুর্গী সম্পর্কে বিভিন্ন প্রকার দাবি করতে লাগলেন। হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যখন এ ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হলেন, তখন তিনি উনার নিকট গমন করেন। দেখতে পেলেন, তিনি গৌরব ও অহঙ্কারের দাবানলে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি মুরীদকে তার অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সমস্ত ঘটনা খুলে বললেন। হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, এরপর যেদিন তুমি সেখানে যাবে, তখন তিনবার ‘লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলে ফুঁ দিবে।
পরবর্তী রাতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো। এবার দরবেশের অন্তরে এ বিশ্বাস আরো দৃঢ় হলো যে, সত্যিই তিনি বুযুর্গীর উচ্চ মর্যাদায় উপনীত হয়েছেন। স্বীয় মুর্শিদ ক্বিবলা উনার উঁচু মর্তবা ও মা’রিফাত উনার প্রতি তার বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা রইলো না। তবুও শুধু অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য তিনবার ‘লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ পাঠ করে ফুঁ দিলেন।
মুরীদ স্বয়ং বলেন, আমার ফুঁ দেয়ার সাথে সাথেই বেহেশতের লোকজন যারা পানাহারে মত্ত ছিলো, চিৎকার করে পলায়ন করলো। আমি দেখতে পেলাম, আমি একটি আবর্জনার স্তূপের উপর বসা এবং আমার চারপাশে ইতস্তত ছড়ানো রয়েছে মৃত ব্যক্তিদের হাড়। আমি স্বীয় অবস্থা বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয়ে তওবা করলাম এবং নির্জনতা ছেড়ে বুযুর্গগণ উনাদের ছোহবত মুবারক উনার মাঝে আসলাম।”
সমস্ত প্রকার পবিত্র আদব শিক্ষা করতে হলে হযরত আওলিয়ায়ে কিরাম ও বুযুর্গানে দ্বীন রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে। অন্যথায় তা শিক্ষা করা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়।
এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يايها الذين امنوا اتقوا الله وكونوا مع الصدقين
অর্থ : “হে ঈমানদারগণ! খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো এবং ছাদিক্বীন বা সত্যবাদীগণ উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করো।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৯)
অর্থাৎ একমাত্র আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরই ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩০)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)