খাদ্যে ব্যবহৃত কেমিক্যালের মান যাচাইয়ের ব্যবস্থা নেই কেনো? মান যাচাইয়ের প্রতিষ্ঠান বিএসটিআইয়ের মান শূন্য কেনো? সরকারের কর্তব্য কী?
, ২৫ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ১১ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ২৬ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মন্তব্য কলাম
বিএসটিআইয়ের পরিচালক এ প্রসঙ্গে বলেছে, তৈরি পণ্যের গুণমান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। খাবারে কেমিক্যাল ব্যবহারে বিএসটিআইয়ের স্ট্যান্ডার্ড রয়েছে। ওই স্ট্যান্ডার্ডে ব্যবহারের মাত্রা রয়েছে। তবে সঠিক মাত্রায় ব্যবহার হচ্ছে কিনা, তা ব্যবহারকারীরাই ভালো বলতে পারবে। তা দেখার দায়িত্ব বিএসটিআইয়ের নয়। বলাবাহুল্য বিএসটিআইয়ের এ বক্তব্য গোটা জাতির জন্য গভীর হতাশাব্যাঞ্জক।
জানা গেছে, বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে খাদ্যে ব্যবহৃত ইস্ট, বেকিং পাউডার, হাইড্রোজ, ঘন চিনি, স্যাকারিন, ব্রেড ও কেক ইমপ্রুভার, বোরিক পাউডার, অ্যামোনিয়াম বাইকার্বোনেট, চেরি ফল, সাইট্রিক এসিড, সোডিয়াম পাইরোফসফেট, আম, কলা, আপেল, কমলা, ডিম, কাঁঠাল, ঘি, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ও মরিচের রঙ। এসব কেমিক্যাল খাবার তৈরিতে ব্যবহার হয়ে আসছে।
জানা গেছে, পাউরুটি তৈরিতে ব্যবহার হয় ব্রেড ইমপ্রুভার, ঘন চিনি, স্যাকারিন, ইস্ট ও বেকিং পাউডার। বিস্কুটে বেকিং পাউডার, ফ্লেভার, ডিমের রঙ, ঘির ফ্লেভার, ডালডা ও তেলের পরিবর্তে মার্জারিন, অ্যামোনিয়াম বাইকার্বোনেট। কেক তৈরিতে ইমপ্রুভার, হপস পাউডার, চেরি ফল ও হাইড্রোজ। চানাচুরে সাইট্রিক এসিড, টেস্টিং সল্ট, সোডিয়াম বেনজয়েট, বেকিং পাউডার, রঙ ও সোডিয়াম পাইরোফসফেট। আইসক্রিমে ব্যবহার হচ্ছে রঙ, স্যাকারিন ও কোকো পাউডার। কিন্তু এসব কেমিক্যাল সঠিক মাত্রায় ব্যবহার হচ্ছে কিনা বা উৎপাদনকারীরা যে কেমিক্যালটি ব্যবহার করছে, তা মানসম্পন্ন কিনা, সেটাও জানে না ব্যবসায়ীরা।
অভিযোগ রয়েছে, খাবার তৈরিতে মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে এসব কেমিক্যাল। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে টেক্সটাইল মিলে ব্যবহার করা রঙ। অসৎ ব্যবসায়ীরা মোটা অঙ্কের লাভের আশায় এসব কেমিক্যাল বিক্রি করছে। এগুলো খাবারের সঙ্গে মানুষের শরীরে ঢুকছে, যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। স¦াস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, নিষিদ্ধ কেমিক্যালযুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে গ্যাস্ট্রিক, চর্মরোগ, হাঁপানি, পাকস্থলি প্রদাহ, লিভার ক্যান্সার ও কিডনির নানা রোগ হতে পারে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সরকারের যে প্রতিষ্ঠানটি খাদ্যদ্রব্যসহ সবধরনের পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতের ক্ষেত্রে মাননিয়ন্ত্রণ করে সেই বিএসটিআইয়ের মান নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। যন্ত্রপাতির অভাব, জনবল সংকটসহ বহুবিধ সমস্যায় প্রতিষ্ঠানটি এখনো মানসম্পন্ন হয়ে উঠতে পারেনি। ফলে পণ্যের দাম, মান ও ওজনে ঠকবাজি চলছেই। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বিএসটিআইয়ের স¦ীকৃতি জোটেনি। এ প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া গুণগতমানের সনদ কোনো দেশেই গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না। জাতিসংঘের শিল্প উন্নয়ন সংস্থা (ইউনিডোর) পরিদর্শক দল বিএসটিআই পরিদর্শন শেষে বলেছে, এর সনদ ও মানের নিশ্চয়তা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নয়। ইউনিডো এ ব্যাপারে কিছু সুপারিশ করলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) সনদ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় রপ্তানিকারকরা দেশীয় পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে পাঠাতে নানা জটিলতায় পড়ে। বিভিন্ন পণ্যের নমুনা ভারতীয় ল্যাবরেটরির মান সনদ নিয়ে তবেই তা অন্য দেশে রপ্তানি করা সম্ভব হয়।
বিএসটিআইর আঞ্চলিক দফতরগুলোর বেহাল অবস্থা। বিভাগীয় আঞ্চলিক দফতর নিম্নমানের ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রপাতিতে সাজানো। বিএসটিআইর চট্টগ্রাম দফতরে তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ পণ্যের পরীক্ষণ ব্যবস্থা নেই। ১৫৬টি পণ্যের মধ্যে মাত্র ৫৭টির মান যাচাইয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। বাকি পণ্যের মান পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। অনেক ভেজাল পণ্যের নমুনার ‘পরীক্ষণ রিপোর্টের’ জন্য মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয়। ততদিনে ওই ভেজাল পণ্যের বাজারজাত সম্পন্ন হয়ে যায়।
বিএসটিআইয়ের লাইসেন্স বাতিল করা শতাধিক প্রতিষ্ঠানের পণ্যও বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। পণ্যের মোড়কে যথারীতি ব্যবহৃত হচ্ছে বিএসটিআইর লোগো। ওজনে কম দেয়ার ক্ষেত্রেও চলছে নানা ধরনের কারসাজি। জানা যায়, এক বছরেরও বেশি সময় আগে ১০৬টি প্রতিষ্ঠানের ৪৭ ধরনের খাদ্যপণ্যের লাইসেন্স বাতিল করে বিএসটিআই। কিন্তু এসব পণ্য বিক্রি বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। দেয়া হয়নি কোনো নির্দেশনাও।
একটি পণ্যের নমুনা যাচাই করে বিএসটিআই যে মান সনদ দেয়, সে মান বজায় থাকছে কি না তা তদারকির দায়িত্বও তাদের। কিন্তু বাজারে মান তদারকির নজির দেখা যায় না। পণ্য উৎপাদনকারীর অনুকূলে শুধু মান সনদ দিয়েই বিএসটিআই দায়িত্ব শেষ করছে বলে অভিযোগ ভোক্তাদের।
বলাবাহুল্য এটা স্বাধীন রাষ্ট্রে সুস্পষ্টত সংবিধান লঙ্ঘন। কাজেই সরকারকে অবিলম্বে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কেমিক্যালসহ সব ক্ষতিকর উপাদান মুক্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠাপোষকতা করতে হবে।
মূলতঃ সব সমস্যা সমাধানে চাই সদিচ্ছা ও সক্রিয়তা তথা সততা। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন নেক ছোহবত মুবারক, নেক সংস্পর্শ মুবারক তথা রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)