কুরবানী মহান আল্লাহ পাক উনার একটি খাছ শিয়ার বা নিদর্শন। কুরবানী নিয়ে চু-চেরা করে কেউ মুসলমান থাকতে পারবে না।
স্বতঃস্ফূর্ত কুরবানী পালনে শর্তারোপ করা- পবিত্র কুরবানী অবমাননার শামিল। এ বিষয়ে সরকারি আমলাদের সাবধান ও সতর্ক থাকা জরুরী
, ০৪ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৪ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২৩ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০৯ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মন্তব্য কলাম
লেখার শুরুতেই ইতিহাসের এ অংশটি টেনে আনার কারণ আছে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ঘটনাটি খুবই প্রাসঙ্গিক। কারণ বিগত কয়েক বছর থেকেই কুরবানীর বিপক্ষে একটি মহলের আটঘাঁট বেধে অপপ্রচার সবার নজরে এসেছে। এমনকি তাদের এই হাত এখন দেশের ক্ষমতাসীন সরকারি আমলাদের নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করেছে। তারা সরকারের মন্ত্রী, এমপি, আমলাদের মাধ্যমে ইতোমধ্যে কুরবানীকে নিয়ন্ত্রণ ও সীমিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপও প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছে। সকলের জ্ঞাতার্থে কয়েকটি বিষয় এখানে আলোচিত হলো।
রাস্তায় কুরবানী করতে না দেয়ার ঘোষণা:
কুরবানীবিদ্বেষীরা চায় কুরবানী নিয়ে মুসলমানরা কষ্ট পাক, বিড়ম্বনায় পড়–ক। যেভাবে উৎসাহ উদ্দীপনা আর আনন্দের সাথে মুসলমানরা কুরবানীর পশু জবাই করে ও গোশত বণ্টন করে সে আনন্দের বাতি তারা নিভিয়ে দিতে চায়। রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য শহরগুলোতে সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট মাঠে কখনোই যে এই লক্ষ লক্ষ গরু-ছাগল কুরবানীর যাবতীয় কাজ সম্পাদন করা সম্ভব নয়, তা কিন্তু তাদের(!) খুব ভালো করেই জানা। শুধু জানা নেই অটিস্টিক (প্রতিবন্ধী) সরকারের ও তাদের মন্ত্রী, এমপি আমলাদের। একটি মাঠে কতগুলো গরু একসাথে জবাই করা যাবে, সেগুলো প্রসেসিং করতে কত সময় লাগবে, ১ম দফার পর কর্দমাক্ত মাঠে কিভাবে ২য় দফায় জবাই হবে এবং এভাবে সকল কুরবানীর পশুগুলোকে নির্দিষ্ট ৩ দিনের মধ্যে জবাই করা সম্ভব কিনা- এসব হিসাব অটিস্টিক প্রশাসনের জানা না থাকলেও জনগণের জানা আছে। তাইতো গতবারও তাদের এই হীনউদ্দেশ্য সফল হয়নি, এবারও হবে না। ইনশাআল্লাহ!
কুরবানীর পশুর হাটের সংখ্যা কমানো:
দেশের জনসংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে নাকি কমছে? যদি বাড়ে, তবে তো কুরবানী দাতারও সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাহলে কুরবানীর পশুরও চাহিদা বাড়ছে। একই সাথে কুরবানীর পশুর খামারও বেড়েছে। অর্থাৎ কুরবানীর পশুর উৎপাদন ও সংখ্যা বাড়ছে। তাহলে এর সাথে সাথে কি কুরবানীর পশুর হাটের সংখ্যা বাড়বে, নাকি কমবে? বাড়বে। তাহলে যারা হাটের সংখ্যা কমানোর কথা বলছে তারা কারা? মূলত, এরাই হলো কুরবানীর প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী গোষ্ঠি। এরাই ইহানতকারী।
পশুর হাটগুলোকে শহরের বাইরে নেয়া:
সারা বছর শহরের রাস্তা দখল করে মিটিং, মিছিল, সমাবেশ, মানববন্ধন, প্রতিবাদ মঞ্চ ইত্যাদি হচ্ছে। শোভাযাত্রা, রথযাত্রা, দুর্গাপূজা, বৈশাখী মেলাসহ বছরজুড়ে আরো কত ‘মেলা’ আর কত ‘খেলা’। এগুলোর একটিও কি শহরের বাইরে করা যায় না? যায় না, কারণ এগুলো মুসলমানদের নয়, এগুলোর সাথে ইসলাম নেই। কিন্তু বছরের মাত্র কয়েকদিনের এই কুরবানীর পশুর হাটের সাথে তো ইসলাম আছে, মুসলমানিত্ব চেতনা আছে তাইতো সবার আগে এটাকেই শহর থেকে বের করে দিতে হবে। এটাই সেই সব হিংসুটে আমলাদের অন্তরের কথা। নাউযুবিল্লাহ!
জবাইকারীর বয়স কমপক্ষে ১৮ করা:
কে কোনো বয়সে বিয়ে করবে, কোনো বয়স থেকে জবাই করবে ইত্যাদি আরো অনেক বিষয়েই এখন সিদ্ধান্ত দেয়া শুরু করেছে সরকার। ভাবখানা এমন যেন- তাদের উপরও ওহী নাযিল হওয়া শুরু হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! নচেত বিয়ের বয়সের ক্ষেত্রে, জবাইকারীর বয়সের ক্ষেত্রে যেখানে ইসলামী শরীয়ত নির্দিষ্টতা আনেনি, সেখানে সরকার কি করে হাত দেয়? এটা কি বামন হয়ে চাঁদে হাত বাড়ানো নয়? অথচ সরকারতো বিয়েপূর্ব কথিত প্রেম-ভালোবাসা, পরকীয়া, অবৈধ মেলামেশা; টিভি-সিনেমা, ইন্টারনেটে অশ্লীলতা দেখা ইত্যাদিতে কোনো বয়স নির্দিষ্ট করেনি। এর অর্থ হলো- যে কোনো বয়স থেকেই যা খুশি সব অপকর্ম করা যাবে, তবে দ্বীন ইসলাম পালনে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! যে অজুহাতেই জবাইকারীর বয়স নির্দিষ্ট করা হোক না কেন- এটা স্পষ্টতই পবিত্র কুরবানী উনাকে ইহানত বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার শামিল। নাউযুবিল্লাহ!
কুরবানীর পশু সম্পর্কে অপ্রচার:
বর্ষা এলেই যেমনি ব্যাঙের আওয়াজ শুনা যায়- তেমনিভাবে কুরবানী এলেই কিছু গরু-ছাগলপ্রেমীদের দেখা যায়। কুরবানী এলেই ব্যাঙের মতো তারা আওয়াজ তোলে- গরুতে বিষ আছে, গরুতে এনথ্রাক্স আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এই সব মৌসুমী পশুপ্রেমী ব্যঙগুলো পশু বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তার না হলেও নিজেদেরকে এর চেয়ে বড় মনে করে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা কুরবানীর গরু-ছাগল নিয়ে এসব অপপ্রচারে কান না দিতে বললেও তারা(!) কিন্তু ঘ্যাঙ্র ঘ্যাঙ করেই যাচ্ছে। মূলত, কুরবানীর প্রতি তীব্র ও প্রচ-তম বিদ্বেষ থেকেই তাদের এই মৌসুমী পশুপ্রেমের সৃষ্টি।
৯৮ শতাংশ জনগোষ্ঠি মুসলমানদের টাকা-পয়সায় লালিত-পালিত হয় এদেশের সরকার ও তার মন্ত্রী, এমপি আমলারা। অথচ তারা একের পর এক এমন সব পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ও ঘোষণা দিচ্ছে, যেগুলোর প্রত্যেকটিরই উদ্দেশ্য পবিত্র কুরবানী উনাকে নিয়ন্ত্রণ করা, সীমিত করা। যা প্রকাশ্যে কুরবানী উনাকে ইহানত বা তাচ্ছিল্য করার শামিল। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
সবশেষে বলতে হয়- পবিত্র কুরবানী হলো যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহপাক উনারই একটি খাছ (বিশেষ) শিয়ার বা নিদর্শন মুবারক। ইসলাম ও মুসলমানদের ঐতিহ্য। শুধু এতটুকুই নয়, যারা কুরবানী উনাকে কোনোভাবে এড়ানোর চেষ্টা করবে তাদের সম্পর্কে হাদীছ শরীফে স্পষ্ট বলা হয়েছে- ‘যারা সামর্থ্যবান হওয়ার পরও কুরবানী করবে না, তারা যেন ঈদগাহেও না আসে। ’ তাহলে যারা প্রকাশ্যে পবিত্র কুরবানী নিয়ে মনগড়া আইন-কানুন চালু করতে চায়, তারা কতবড় নাফরমান, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই সময় থাকতেই এসব অপসিদ্ধান্ত থেকে খালিছ তওবা করে কুরবানী উনাকে কিভাবে আরো ব্যাপকভাবে ও উৎসাহের সাথে করা যায় তার জন্য ব্যবস্থা নেয়া সরকারের জন্য ফরয। ইন্দিরা, গৌর গোবিন্দদের করুণ পরিণতি কোনো সরকারই আশা করে না।
-আবুল কালাম আর রাযী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)