ইলমে তাছাউফ
একজন কামিল মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া ফরয (২)
, ২৭ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৫ রবি , ১৩৯২ শামসী সন , ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৮ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) ইলমে তাছাউফ
কামিল মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার গুরুত্ব সম্পর্কে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ يَّهْدِ اللهُ فَهُوَ الْمُهْتَدِ ۖ وَمَنْ يُّضْلِلْ فَلَنْ تَـجِدَ لَهٗ وَلِيًّا مُّرْشِدًا.
অর্থ : খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যাঁকে হিদায়েত দান করেন, সেই হিদায়েত পায়। আর যে ব্যক্তি গোমরাহীর মধ্যে দৃঢ় থাকে, তার জন্য কোনো ওলীয়ে মুর্শিদ (কামিল শায়েখ বা পীর) পাবেন না। (সূরা কাহফ শরীফ : আয়াত শরীফ ১৭)
অর্থাৎ যারা কামিল মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হয়না, তারা পথভ্রষ্ট। কারণ তখন তাদের পথ প্রদর্শক হয় শয়তান। নাঊযুুবিল্লাহ!
তাই সুলত্বানুল আরিফীন হযরত বায়েজীদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি, সাইয়্যিদুত ত্বায়িফা হযরত জুনায়িদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারাসহ আরো অনেকেই বলেছেন যে-
مَنْ لَّيْسَ لَهٗ شَيْخٌ فَشَيْخُهٗ شَيْطَانٌ
অর্থ : যার কোনো শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা নেই, তার মুর্শিদ বা পথ প্রদর্শক হলো শয়তান। নাঊযুবিল্লাহ! (ক্বওলুল জামীল, নুরুন আলা নূর, তাছাওউফ তত্ত্ব)
আর শায়েখ বা শায়েখ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার গুরুত্ব সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلشَّيْخُ فِىْ اَهْلِهٖ كَالنَّبِىِّ فِىْ اُمَّتِهٖ وَفِىْ رِوَايَةٍ اَلشَّيْخُ لِقَوْمِهٖ كَالنَّبِىِّ فِىْ اُمَّتِهٖ
অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা উম্মতের নিকট যেরূপ সম্মানিত ও অনুসরণীয়, শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিও উনার অধীনস্থদের নিকট তদ্রƒপ সম্মানিত ও অনুসরণীয়। (দায়লামী শরীফ, মাকতুবাত শরীফ, জামিউল জাওয়ামি’, আল মাক্বাছিদুল হাসানাহ, তানযীহুশ শরীয়াহ, আল মীযান, আল জামিউছ ছগীর, আদ দুরারুল মুনতাশিরাহ ইত্যাদি)
অর্থাৎ হযরত নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনার দ্বারা যেরূপ উম্মতের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সর্বক্ষেত্রে ইছলাহ লাভ হয়, সেরূপ শায়েখ বা শায়েখ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার দ্বারাও মুরীদের বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ সর্বক্ষেত্রে ইছলাহ লাভ হয়। সুবহানাল্লাহ!
অতএব, হযরত নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনার উম্মত না হয়ে যেরূপ হিদায়েত লাভ করা যায়না, তদ্রƒপ কামিল মুর্শিদ বা শায়েখ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত না হয়েও ইছলাহ বা পরিশুদ্ধতা লাভ করা যায়না। বরং শয়তানী প্রবঞ্চনায় পড়ে গোমরাহীতে নিপতিত হওয়াই স্বাভাবিক।
আর এ কারণেই জগদ্বিখ্যাত আলিম, আলিমকুল শিরোমণি, শ্রেষ্ঠতম মাযহাব, হানাফী মাযহাব উনার প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম, ইমামুল আ’যম হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
لَوْلَا سَنَتَانِ لَـهَلَكَ اَبُوْ نُعْمَانَ
অর্থ : (আমার জীবনে) যদি দু’টি বৎসর না পেতাম, তবে আবূ নু’মান (আবূ হানীফা) ধ্বংস হয়ে যেতাম। (সাইফুল মুকাল্লিদীন, ফতওয়ায়ে ছিদ্দীক্বিয়া)
অর্থাৎ আমি (হযরত) আবূ হানীফা (রহমতুল্লাহি আলাইহি) যদি আমার শায়েখ বা শায়েখ ক্বিবলা হযরত ইমামুল খ¦মিস আলাইহিস সালাম ও হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম উনাদের নিকট বাইয়াত না হতাম, তবে আমি ধ্বংস বা বিভ্রান্ত হয়ে যেতাম।
সুতরাং প্রমাণিত হলো, যে ব্যক্তি কোনো কামিল মুর্শিদ বা পীর ছাহেব ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত না হবে, তার পক্ষে শয়তানী প্রবঞ্চনা ও বিভ্রান্তি থেকে বেঁচে থাকা আদৌ সম্ভব নয়। কেননা কামিল মুর্শিদ বা শায়েখ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া ব্যতীত ক্বলবে যিকির জারি করা অসম্ভব। আর ক্বলবে পবিত্র যিকির জারি করা ব্যতীত শয়তানী ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকাও সম্ভব নয়। তাই পরিশুদ্ধতা লাভ করার জন্য বা ক্বলবে পবিত্র যিকির জারি করার জন্য অবশ্যই একজন কামিল মুর্শিদ বা শায়েখ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হতে হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
যামানার মূল নায়িবে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিসবত ব্যতীত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক রাখার দাবি বাতুলতার নামান্তর
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাযকিয়াহ বা ইছলাহ অর্জন করা ব্যতীত কোনো বান্দার পক্ষে কামিয়াবী হাছিল করা সম্ভব নয়
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মুর্শিদ বা শায়েখ হক্ব বা নাহক্ব তা যাচাই-বাছাই করার পর বাইয়াত হতে হবে
০৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাসাউফ চর্চা ছাড়া দ্বীন ইসলাম কায়েম সম্ভব না (২)
০১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত মুর্শিদ বা শায়েখ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়ার ক্ষেত্রে সন্তানের জন্য পিতা-মাতা উনাদের এবং স্ত্রীর জন্য স্বামীর বাধা গ্রহণযোগ্য নয়
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাসাউফ চর্চা ছাড়া দ্বীন ইসলাম কায়েম সম্ভব না (১)
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩১)
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতা জীবিত থাকতেই মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া উচিত
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পিতা-মাতা জীবিত থাকতেই মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া উচিত
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পিতা-মাতা জীবিত থাকতেই মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া উচিত
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র দশ লতিফা উনাদের বিবরণ
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৩১)
৩০ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)