ইলমে আরূজী অর্থাৎ ছন্দ প্রকরণ সংশ্লিষ্ট আদব (১৬)
, ০৩ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৪ ছানী ‘আশার, ১৩৯০ শামসী সন , ২৪ মে, ২০২৩ খ্রি:, ১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
১। সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার আমল করা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক সন্তুষ্টি হাছিলের কারণ।
২। সম্মানিত সুন্নত আমলে সম্মানিত সুন্নত জিন্দা হয় এবং বিদয়াত দূরীভূত হয়। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে আরো অন্তর্নিহিত কারণ রয়েছে।
প্রথম কারণ : আক্বাঈদের নবায়ন। বর্তমান সময়ে মানুষ গান-বাজনায় এমনভাবেই মশগুল হয়ে আছে যে, ঘরে ঘরে ক্যাসেট প্লেয়ার, টেলিভিশন, ফাসিকদের আয়োজিত অনুষ্ঠান এমনভাবে প্রবেশ করেছে যে, মুসলমানরা গান-বাজনার প্রতি অনুরক্ত হয়ে গেছে। নাঊযুবিল্লাহ! এদেশের এক তথাকথিত লেখিকা বলেছিলো- ‘রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনা ইবাদত তুল্য’। নাঊযুবিল্লাহ! সঙ্গীত মানুষের মন-মগজের কোথায় প্রবেশ করেছে তা সহজেই অনুমেয়। এই যে মানুষ হারামকে হালাল বলছে, ফলে মানুষের ঈমান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিয়ে করলে বিয়ে ফাসিদ হচ্ছে, হজ্জ করলে তা বাতিল হচ্ছে, সন্তান অবৈধ হচ্ছে। মুজাদ্দিদ যামান, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি মানুষকে এই কঠিন আক্বীদার সমস্যা থেকে হিফাজত করছেন, ক্বাছীদা শরীফ প্রচলনের মাধ্যমে।
দ্বিতীয় কারণ : শরীয়ত উনার নিষিদ্ধ বিষয় থেকে ফিরিয়ে রাখার জন্য। আজকাল মানুষ শুধু গান বাজনাই শোনে না, এর সাথে সাথে থাকে ভিডিও চিত্র। ফলে একই সাথে হারাম কবীরা গুনাহতে লিপ্ত হয় আর তার থেকে অসংখ্য অগণিত কোটি কোটি চোখের ব্যভিচার হতে থাকে। পাশাপাশি গান-বাজনা শোনার গুনাহতো রয়েছেই। সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ক্বাছীদা শরীফ প্রচলনের মাধ্যমে মানুষকে এই হারাম কাজ থেকে ফিরিয়ে রেখেছেন।
তৃতীয় কারণ : মানুষকে জাহিরী এবং বাতিনীভাবে ইবাদতের মধ্যে ডুবিয়ে রাখা। জাহিরী বিষয়টি বোঝা গেল যেমন মহান সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ, হারাম থেকে বেঁচে থাকা। জযবা তৈরি হওয়া ইত্যাদি। এসব বিষয় ইবাদত বন্দেগীর সহায়ক। বাতিনী বিষয়টি বুঝতে হলে একটু আলোচনা প্রয়োজন।
যারা স্কুল, কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে পড়েন, তাদের মধ্যে অনেকেই গান-বাজনা করে। তাদের কেউ হারাম জেনে করে, কেউ হালাল জেনে করে। যারা গান করে না তাদের যদি প্রশ্ন করা হয়- আপনি কি গান করেন? উত্তর আসে “আমি হচ্ছি বাথরুম সিঙ্গার।” এ কথাটার পেছনে একটা কারণ রয়েছে। গোসলের সময় মানুষ কিছুটা সময় পার্থিব ঝামেলা থেকে মুক্ত হয় বলে তার ভিতরের সত্তাটা গান করে বা গুনগুন করে উঠে। প্রশ্ন হচ্ছে- কেন সে সময় সাধারণ মানুষ গান গায়? কেন ক্বাছীদা শরীফ নয়? আর কেউ গুনগুন করে গান গাইলে তো আর তা জায়িয হবে না। কিন্তু কখনো ইচ্ছায়, কখনো অনিচ্ছায় সেটাই বেরিয়ে আসে। সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি চান কারো কণ্ঠে সুর থাকুক আর না থাকুক, কেউ লিখতে পারুক আর নাই পারুক। সে যেন কমপক্ষে ক্বাছীদা শরীফ শোনে। সবসময় ক্বাছীদা শরীফ শুনলে তার অলস মুহূর্তেও তার ভিতরের মানুষ ক্বাছীদা শরীফই পাঠ করবে, গান নয়। এভাবে সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি মানুষের অবচেতন মনকেও গান থেকে ফিরিয়ে রাখছেন এবং মানুষ নিয়ামত প্রাপ্ত হচ্ছে। সুবহানাল্লাহ!
চতুর্থ কারণ : কাফির-মুশরিকদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিবাদ। আসুন আবার পবিত্র সূরা শূয়ারা শরীফ উনার দিকে লক্ষ্য করি।
পবিত্র সূরা শূয়ারা শরীফ উনার ২২৪ নম্বর আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বেদ্বীনদের অনর্থক, ভ্রান্ত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, কুরুচিসম্পন্ন ও শরীয়তবিরোধী কবিতার সমালোচনা করা হয়েছে। আমাদের জানা রয়েছে যে, সঙ্গীতে থাকে (অধিকাংশ ক্ষেত্রে) অনর্থক শব্দ, অনর্থক বিষয়, থাকে শালীনতা বিবর্জিত শব্দ এবং অর্থ। পৃথিবীর মুসলমানদের হক পথ থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য চালানো হচ্ছে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন (ঈঁষঃঁৎধষ অমমৎবংংরড়হ)। সূদুর মিশর, সউদী আরব, দুবাইসহ সারা মধ্যপ্রাচ্যে-মার্কেট দখল করে আছে ভারতীয় চলচ্চিত্র, ভারতীয় গান বাজনা। পাকিস্তানেও তাই। বাংলাদেশ তো ভারতের কলোনীর মতো। ভারতীয় সংস্কৃতি পালনের জন্য এদেশে হিন্দুরা বিভিন্ন কালচারাল সংগঠনের মাধ্যমে অর্থায়ন করে। ব্যাপকভাবে তাদের নাটক, সিনেমা, গান বাজনা প্রচার-প্রসারের আয়োজন করে। নাঊযুবিল্লাহ!
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বিভিন্ন মানের ক্বাছীদা শরীফ লেখার উৎসাহ দিয়ে, পত্রিকায় প্রচার করে, ক্বাছীদা শরীফ উনার সিডি ক্যাসেট প্রকাশ করে, সামা শরীফ উনার অনুষ্ঠানে মানুষকে আগ্রহশীল করে এর সমুচিত শিক্ষা দিচ্ছেন। মূলত এটাও সুন্নত পালন।
কারণ অনেক ইহুদী লেখক যেমন কা’ব বিন আশরাফ এবং আবূ রাফে এবং আরো অনেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান মুবারক উনার খিলাফ কথা লিখতো এবং প্রচার করে বেড়াতো। পরবর্তীতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের কথার প্রতি উত্তর দেয়ার আয়োজন করেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)