হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বদ মাযহাব, বদ আক্বীদা ও বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (১২)
, ২৪ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৪ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০২ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ১৯ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা:
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেহেতু সত্যের মাপকাঠি, ‘মিয়ারে হক্ব’। সেহেতু ক্বিয়ামত পর্যন্ত পরবর্তী উম্মতকে জন্ম থেকে শুরু করে ইন্তিকালের পর পর্যন্ত সর্বদিক থেকে সকল বিষয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে যথাসাধ্য অনুসরণ-অনুকরণ করতে হবে। এক জাররা পরিমাণ বা বিন্দু পরিমাণ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে চু-চেরা, কিল-কাল করা যাবে না। শুধু তাই নয়, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে ক্বিয়ামত পর্যন্ত পরবর্তী উম্মতকে অন্তরের অন্তঃস্থলে যেন কোন ধরনের চু-চেরা, কিল-কাল উদয় না হয় বা কোন ধরনের চু-চেরা, কিল-কাল স্থান না পায়, সে সম্পর্কে সদা-সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে বা সাবধান থাকতে হবে।
তাছাড়া ঈমান আক্বীদার ব্যাপারে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেভাবে ঈমান আক্বীদা পোষণ করেছেন, ঈমান এনেছেন, ক্বিয়ামত পর্যন্ত পরবর্তী উম্মতকে সেভাবেই ঈমান আক্বীদা পোষণ করতে হবে, ঈমান আনতে হবে।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যখন তাদেরকে (অর্থাৎ মুনাফিকদেরকে) বলা হয়, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেভাবে ঈমান এনেছেন, তোমরাও সেভাবে ঈমান আনো। ” তখন তারা (অর্থাৎ মুনাফিকরা) বলে, নির্বোধগণ যেরূপ ঈমান এনেছেন আমরাও কি সেইরূপ ঈমান আনবো? নাঊযুবিল্লাহ! সাবধান প্রকৃতপক্ষে তারাই (মুনাফিকরাই) নির্বোধ। কিন্তু তারা (অর্থাৎ মুুনাফিকরা) তা বুঝে না। (সূরা বাক্বারা শরীফ: আয়াত শরীফ-১৩)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফে প্রকৃত ঈমানের একটি রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। কেননা পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিলের সময় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাই ঈমান এনেছিলেন। সেহেতু হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেভাবে ঈমান এনেছেন, ক্বিয়ামত পর্যন্ত পরবর্তী উম্মত যদি সেভাবেই ঈমান আনে তাহলে অনুরূপ ঈমানই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কবুল হবে। আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যে বিষয়ে যেভাবে ঈমান এনেছেন, ক্বিয়ামত পর্যন্ত পরবর্তী উম্মত যদি সে বিষয়ে সেভাবে ঈমান আনে তাহলেই তাকে মু’মিনে কামিল বলা যাবে। আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেভাবে ঈমান এনেছেন ক্বিয়ামত পর্যন্ত পরবর্তী উম্মত যদি সেভাবে ঈমান না আনে তাহলে তাকে মু’মিন বলা যাবে না।
অতএব বিষয়টি আরো ভালোভাবেই বুঝা গেল যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ঈমানই ঈমানের কষ্টি পাথর। আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ঈমানের পরিমাপে ক্বিয়ামত পর্যন্ত পরবর্তী উম্মতের ঈমান পরীক্ষা করা হবে। সুতরাং, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ঈমানের পরিমাপে যে ঈমান সঠিকভাবে প্রমাণিত হবে না তাকে ঈমান বলা যাবে না এবং অনুরূপ ঈমানদারকে মু’মিন বলা যাবে না। এর বিপরীতে যত ভাল কাজই করা হোক না কেন, আর তা যত নেক নিয়তেই করা হোক না কেন, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট তা ঈমান রূপে কবুল হবে না। সুতরাং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেভাবে ঈমান এনেছেন সেভাবে ঈমান না আনলে যদি ঈমানদার হওয়া না যায়, তাহলে ক্বিয়ামত পর্যন্ত পরবর্তী উম্মতের পক্ষে কি করে সম্ভব, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করা, দোষারোপ করা?
মূলতঃ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করা কারো জন্যেই জায়িয নেই। আর এরপরেও যদি কেউ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করে তাহলে সে কাট্টা কাফির হয়ে চিরজাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)