সাইয়্যিদুল কায়িনাত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা ও তা’যীমার্থে ক্বিয়াম শরীফ করা সুন্নত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ (৫)
, ১৭ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ০৩ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পরবর্তী তাবিয়ীন উনাদের যুগে এবং তৎপরবর্তী প্রত্যেক যুগেই অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম উনারা পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছেন।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট তাবিয়ী হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি শতাধিক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সাক্ষাৎ মুবারক পেয়েছিলেন। যিনি দ্বীন ইসলাম উনার চতুর্থ খলীফা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার খলীফা ও ছাত্র ছিলেন। তিনি বলেন-
وَدِدْتُّ لَوْ كَانَ لِىْ مِثْلُ جَبَلِ اُحُدٍ ذَهْبًا فَاَنْفَقْتُه عَلٰى قِرَاءَةِ مَوْلِدِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “আমার একান্ত ইচ্ছা হয় যে, আমার যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ থাকতো তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ উপলক্ষে আমি তা ব্যয় করতাম। ” সুবহানাল্লাহ! (আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ফী মাওলিদি সাইয়্যিদি উলদি আদম)
মাযহাবের ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারাও পবিত্র মীলাদ
শরীফ পাঠ করার ব্যাপারে উৎসাহ ও গুরুত্ব প্রদান করেছেন ।
অনুরূপভাবে মাযহাবের ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠের ব্যাপারে গুরুত্ব প্রদান করেছেন। যেমন বর্ণিত আছে,
قَالَ حَضْرَةْ اَلاِمَامُ الشَّافِعِىُّ رَحِـمَهُ اللهُ مَنْ جَـمَعَ لِمَوْلِدِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِخْوَانًا وَهَيَّاَ طَعَامًا وَاَخْلٰى مَكَانًا وَعَمَلَ اِحْسَانًا وَصَارَ سَبَبًا لِقِرَائَتِه بَعَثَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَعَ الصّدّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِـحِيْنَ وَيَكُوْنُ فِىْ جَنَّاتِ النَّعِيْمِ.
অর্থ: শাফিয়ী মাযহাবের ইমাম হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ উপলক্ষে লোকজন একত্রিত করলো এবং খাদ্য তৈরি করলো ও জায়গা নির্দিষ্ট করলো এবং উত্তমভাবে (তথা সুন্নাহভিত্তিক) আমল করলো তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ পাক তিনি হাশরের দিন ছিদ্দীক্ব, শহীদ, ছালিহীনগণ উনাদের সাথে উঠাবেন এবং উনার ঠিকানা হবে জান্নাতুন নায়ীমে। ” সুবহানাল্লাহ! (আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ফী মাওলিদি সাইয়্যিদি উলদি আদম)
তরীক্বতের ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারাও
পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন ।
মহান আল্লাহ পাক উনার বিশিষ্ট ওলী হযরত ইমাম মারূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠের ফযীলত বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন-
مَنْ هَيَّأَ طَعَامًا لِاَجْلِ قِرَائَةِ مَوْلِدِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَجَـمَعَ اِخْوَانًا وَاَوْقَدَ سِرَاجًا وَلَبِسَ جَدِيْدًا وَتَبَخَّرَ وَتَعَطَّرَ تَعْظِيْمًا لّـمَوْلِدِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَشَرَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَعَ الْفِرْقَةِ الاُوْلٰى مِنَ النَّبِيّنَ وَكَانَ فِىْ اَعْلٰى عِلّيّيْنَ.
অর্থ: “যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ উপলক্ষে খাদ্য প্রস্তুত করবেন এবং আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার সম্মানার্থে মুসলমান ভাইদের একত্রিত করবেন, (আলো দানের উদ্দেশ্যে) প্রদীপ বা বাতি জ্বালাবেন, নতুন পোশাক পরিধান করবেন, (সুগন্ধির উদ্দেশ্যে) ধূপ জ্বালাবেন এবং আতর-গোলাপ মাখবেন, ক্বিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাশর-নশর করবেন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রথম দলের সাথে এবং তিনি সুউচ্চ ইল্লীনে অবস্থান করবেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ফী মাওলিদি সাইয়্যিদি উলদি আদম)
মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী হযরত সাররী সাক্বতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
مَنْ قَصَدَ مَوْضِعًا يُقْرَاُ فِيْهِ مَوْلِدُ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ قَصَدَ رَوْضَةً مّنْ رِيَاضِ الْـجَنَّةِ لاَنَّه مَا قَصَدَ ذٰلِكَ الْمَوْضِعَ اِلَّا لِمُحَبَّةِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ বা পবিত্র মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করল, সে যেন তাঁর জন্য জান্নাতে রওযা বা বাগান নির্দিষ্ট করলো। কেননা সে তা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত থাকার জন্যেই করেছে। ” (আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ফী মাওলিদি সাইয়্যিদি উলদি আদম)
আর মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন-
مَنْ اَحَبَّنِىْ كَانَ مَعِىَ فِى الْـجَنَّةِ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি আমাকে মুহব্বত করবে সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে। ” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ, আন নি’মাতুল কুবরা)
সাইয়্যিদুত ত্বয়িফা হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
مَنْ حَضَرَ مَوْلِدَ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَظَّمَ قَدْرَه فَقَدْ فَازَ بِالْاِيـْمَانِ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আয়োজনে উপস্থিত হল এবং উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করলো। সে তাঁর ঈমানের দ্বারা সাফল্য লাভ করবে অর্থাৎ সে বেহেশতী হবে। ” সুবহানাল্লাহ! (আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ফী মাওলিদি সাইয়্যিদি উলদি আদম)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












