সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, গওছুল আ’যম, মুজাদ্দিদুয যামান, সুলত্বানুল আরিফীন, মুহিউদ্দীন, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪)
, ২৪শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৮ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০২ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

দেখতে দেখতে উম্মুল খায়ের, আমাতুল জাব্বার, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাতিমা রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার রেহেম শরীফ-এ আসার বয়স মুবারক দশ মাস পূর্ণ হলো। সেদিনটি ছিল ৪৭১ হিজরী সনের শা’বান মাসের ঊনত্রিশ তারিখ অপরাহ্ন। সহসা আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢেকে গেল। মাহে শা’বানের ঊনত্রিশ তারিখে চাঁদ উঠার সম্ভাবনা ছিল; কিন্তু সন্ধ্যায় আকাশে গাঢ় মেঘে আচ্ছন্ন থাকার কারণে চাঁদ দেখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তবুও জিলান নগরীর হাজার হাজার লোক মাহে রমাদ্বান শরীফ-এর চাঁদ দেখার আশায় খোলা মাঠে উপস্থিত হয়েছেন। কিন্তু ঐ ঘনকালো মেঘ ভেদ করে চাঁদ দেখা কোনভাবেই সম্ভব ছিল না। বাধ্য হয়ে সবাই অন্তরে চাপা ব্যাথা নিয়ে ঘরে ফিরে গেলেন। ঐ দিনটি ছিল সাইয়্যিদুল আওলিয়া, গাউছুল আ’যম, ইমামে রব্বানী, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিলাদত শরীফ লাভের পূর্ব দিন। সন্ধ্যার পর হতেই উম্মুল খায়ের, আমাতুল জাব্বার, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাতিমা রহমতুল্লাহি আলাইহা কিছুটা ব্যাথা অনুভব করলেন। তিনি বর্ণনা করেন, রমাদ্বান শরীফ-এর ১লা তারিখে অর্ধেক রাত অতিবাহিত হওয়ার কিছু পরে আমি ঘুম থেকে উঠে ওযূ করে তাহাজ্জুদের নামায আদায় করত: দোয়ায় মশগুল ছিলাম। এমন সময় আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত এক অতি উজ্জ্বল আলোর ছটা প্রকাশিত হলো। সে আলোর ছটা আমার ঘরকে আলোকিত করে তুললো। এমন সময় গইবী আওয়াজ (অদৃশ্য কণ্ঠস্বর) ভেসে এলো আমার কান মুবারকে। আমাকে সম্বোধন করে বলা হলো- “হে ফাতিমা! আল্লাহ পাক উনার এক প্রিয়তম বান্দা উনার বিলাদতের সময় অতি নিকটে।” রাতের তৃতীয় প্রহর, ছুবহি ছাদিকের কিছু পূর্বে গাউছে পাক, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী মুহিউদ্দীন আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করলেন। দুনিয়াতে তাশরীফ এনেই তিনি সিজদার ভঙ্গিতে মাথা মুবারক মাটিতে রেখে বলতে লাগলেন, “সুবহানা রব্বিয়াল আ’লা” (আমার মহিয়ান-গরিয়ান রব আল্লাহ পাক উনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি)
আর সে সময়ই ঘরের ভিতরে অদৃশ্য কণ্ঠস্বর ভেসে আসছিল, সমস্ত ঘর রহমত, বরকতে পূর্ণ হয়ে উঠেছিল। আর আমি অত্যন্ত ইতমিনান ও আনন্দিত হয়ে সে দৃশ্য অবলোকন করছিলাম।
বিলাদত শরীফ-এর প্রথম দিনেই মাহবূবে সুবহানী হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি রোযা রাখলেন
ঊনত্রিশে শা’বান অপরাহ্নে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়। রাতে প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়েছিল। এ দিন পবিত্র রমযান শরীফ-এর চাঁদ উঠার কথা ছিল। কিন্তু হয়েছে কিনা তা কেউ জানতে পারেনি। তাই এলাকাবাসী পরের দিন সকালে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ শুরু হয়েছে কিনা তা জানার জন্য আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ ছালেহ মূসা জঙ্গী দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট উপস্থিত হলেন। ঘটনাক্রমে সে সময় তিনি বাড়ীতে ছিলেন না। তাই পর্দার আড়াল থেকে উম্মুল খায়ের, আমাতুল জাব্বার, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাতিমা রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার খিদমতে বিষয়টি পেশ করা হলো।
আগন্তুকদের কথা শুনার সাথে সাথে উম্মুল খায়ের, আমাতুল জাব্বার, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাতিমা রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার খেয়াল হলো যে, ছুবহি ছাদিকের পর থেকে উনার সদ্যজাত শিশু কিছুতেই মধু কিংবা দুধ পান করছেন না। এক প্রহর বেলা গড়িয়ে গেল এখনো তিনি দুধ পানে বিরত রয়েছেন। এটা মনে হতেই তিনি উপস্থিত লোকজনকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি যে, আমার সদ্যজাত সন্তান উনি ছুবহি ছাদিকের পূর্ব পর্যন্ত মধু ও দুধ পান করেছেন। কিন্তু ছুবহি ছাদিকের পর থেকে এ পর্যন্ত শত চেষ্টা করেও উনাকে মধু কিংবা দুধ কোনকিছুই পান করাতে পারছি না। এতে আমার মনে হচ্ছে তিনি রোযা রেখেছেন। আমার ধারণা আজ পহেলা রমাদ্বান শরীফ।
উপস্থিত লোকেরা জানতেন, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ ছালেহ মূসা জঙ্গী দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একজন কামিল ওলীআল্লাহ। আর উনার আহলিয়া তিনিও আল্লাহওয়ালী রমনী। উনাদের ঘরে যে পূত পবিত্র সন্তানটি আগমন করেছেন নিশ্চয়ই তিনি তদ্রƒপই হবেন। কাজেই, যারা রোযাদার ছিলেন উনারা মনের আনন্দে এবং যারা রোযা ছিলেন না উনারা অনুতপ্ত হয়ে যার যার বাড়ি চলে গেলেন। মুহূর্তেই সদ্যজাত সন্তান উনার রোযা রাখার খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো।
এ সংবাদ শুনে নারী-পুরুষ দলে দলে আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ ছালেহ মূসা জঙ্গী দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বাড়িতে সমবেত হতে লাগলেন মুবারক সন্তানটিকে একনজর দেখার জন্য। সারাদিন এক অভূতপূর্ব আনন্দ মজলিস অব্যাহত থাকল। সকলেই দেখলেন যে, মুবারক সন্তান তিনি হাত-পা নাড়াচাড়া করছেন। কিন্তু দুধ কিংবা মধু বা অন্যকিছু মুখের কাছে আনতেই তিনি অন্যদিকে মুখ মুবারক ঘুরিয়ে নিচ্ছেন। এরূপ সারাদিন কেটে গেল। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল এবং যখন মাগরিবের আযান শুরু হলো তখন এ মুবারক সন্তান অর্থাৎ গাউছুল আ’যম, মাহবূবে সুবহানী, আওলাদে রসূল হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বাভাবিকভাবেই মধু পান করলেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (২৮)
০৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা ও ফযীলত মুবারক প্রসঙ্গে (৩৬)
০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (২৭)
০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হক্বানী আলেম উনাদের খুছুছিয়ত
০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ঈমান উনার স্বাদ.............
০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
০৫ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
০৫ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)