কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা:
সাইয়্যিদুনা ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঈমানদীপ্ত আহ্বান মুবারক
(মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ গবেষণাগার থেকে প্রকাশিত “কারবালার হৃদয় বিদারক ইতিহাস” নামক কিতাব থেকে সংকলিত)
, ০৫ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৪ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ১২ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২৮ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন দেখলেন যে, পানি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, তখন তিনি ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে ইয়াযীদ লা’নতুল্লাহি আলাইহির সৈন্য বাহিনীর নিকট গেলেন এবং তাদের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য মুবারক রাখলেন। তিনি তাদেরকে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মাধ্যমে বুঝালেন, যুলুম-অত্যাচার থেকে বিরত থাকো, রক্ত দ্বারা তোমাদের হাতকে রঞ্জিত কর না। জেনে শুনে কোন মু’মিন উনাকে কতল বা শহীদ করা মানে জাহান্নামকে নিজের ঠিকানায় পরিণত করা। আমি হলাম যিনি তোমাদের মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মুবারক নাতী। উনারই পবিত্র কালিমা শরীফ তোমরা পড়ো। আর বর্তমানে আমি ছাড়া তোমাদের যিনি মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্য কোন নাতী নেই।
আর আমার সম্পর্কে তোমরা ভালোভাবে জানো, আমি হলাম ওই ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাঁর সম্পর্কে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন- “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা বেহেশতের যুবক উনাদের সাইয়্যিদ। ” সুবহানাল্লাহ!
আমি হলাম সেই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যখন আমি নিজ সম্মানিতা আম্মাজান উনার কোল মুবারক-এ ক্রন্দন করতাম, তখন মহান আল্লাহ তায়ালা উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলতেন, “ওগো মা যাহরা আলাইহাস সালাম! সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি কাঁদলে আমার খুবই কষ্ট হয়। ” দেখ, যখন আপন মা উনার কোল মুবারক-এ আমার কান্নাটা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য কষ্টদায়ক ছিল, এখন তোমরা যদি আমাকে ভিন দেশে কষ্ট দাও এবং আমার রক্ত মুবারক দ্বারা তোমাদের হাতকে রঞ্জিত কর, আমার সম্মানিত আওলাদ ও পরিবার-পরিজন উনাদেরকে শোকাভিভূত করো, তাহলে চিন্তা করে দেখ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কী কষ্ট পাবেন!
আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে কষ্ট দিবে, তার পরিণাম সম্পর্কে তোমরা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে পড়েছো-
اِنَّ الَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَه لَعَنَهُمُ اللهُ فِي الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَاَعَدَّ لَـهُمْ عَذَابًا مُّهِيْنًا
অর্থ : নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। ” (সূরা আহযাব: আয়াত শরীফ ৫৭)
যখন তিনি নিজের এ বক্তব্য মুবারক পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মাধ্যমে বুঝালেন যে, যুলূম-অত্যাচার থেকে বিরত থাকো এবং আমার রক্ত মুবারক দ্বারা তোমাদের হাত রঞ্জিত করো না। আমি তোমাদের কোন ক্ষতি করিনি, তোমাদের সন্তানাদি হত্যা করিনি, তোমাদের প্রতি কোন অত্যাচার করিনি। আমি তো কূফাবাসীর আহবানে এসেছি। তারা যখন বিশ্বাসঘাতকতা করলো তখন আমাকে চলে যেতে দাও। কিন্তু তাদের মনে অসৎ মনোভাব প্রাধান্য বিস্তার করেছিল, তাদের কপালে জাহান্নাম অবধারিত ছিল। তাই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহবান মুবারক তাদের মনে কোন রেখাপাত করলো না। বরং তারা হৈ-চৈ শুরু করে দিলো এবং বলতে লাগলো, আমরা আপনার বয়ান মুবারক শুনতে আসিনি। হয় ইয়াযীদ লা’নতুল্লাহি আলাইহির বাইয়াত গ্রহণ করুন অথবা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হোন। তিনি বললেন, আমি আমার পক্ষে যা বলার ছিল তা বললাম; যেন কাল ক্বিয়ামতের মাঠে তোমাদের এ কথাটুকু বলার সুযোগ না থাকে, হে মহান আল্লাহ পাক! আমাদের জানা ছিল না, আমাদেরকে কেউ বুঝায়নি, তখন আর তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার শাহী দরবার-এ এ ধরনের কোন ওজর-আপত্তি পেশ করতে পারবে না।
মনে রেখো, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا كُنَّا مُعَذِّبِيْنَ حَتّٰى نَبْعَثَ رَسُوْلًا.
অর্থ: কোনো রসূল আলাইহিস সালাম অর্থাৎ হিদায়াতকারী না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকে শাস্তি দান করবো না। ” (সূরা বনী ইসরাইল : আয়াত শরীফ ১৫)
অতএব, যা বলার প্রয়োজন ছিলো তা বলা হলো। এখন তোমাদের যা ইচ্ছা তা করো।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নারী-পুরুষ উভয়ের পবিত্রতা রক্ষার অতীব কার্যকর উপায় হচ্ছে পর্দার হুকুম।
২১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৫)
২১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত বিবি ফিদ্দাহ রহমতুল্লাহি আলাইহা
২১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফে বর্ণিত لَهْوَ الْحَدِيثِ ‘লাহওয়াল হাদীছ’ হচ্ছে- “গান-বাজনা” যা সুস্পষ্টরূপে হারাম
২১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৮)
২০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা ও তা’যীমার্থে ক্বিয়াম শরীফ করা সুন্নত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ
২০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
২০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা ও ফযীলত মুবারক প্রসঙ্গে (৩৪)
১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)