নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রেহেম শরীফে থাকাকালীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম উনার সাথে জলীলুল ক্বদর নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের স্বপ্নে কথোপকথনের মুবারক বর্ণনা
, ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩০ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৩ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এখন আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম উনার জবান মুবারকে আখেরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমণ বার্তা সম্পর্কে অন্যান্য নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের ভবিষ্যদ্বানী শুনব।
প্রথম মাসের মুবারক স্বপ্ন:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন আমি আমার প্রাণপ্রিয় আওলাদ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে রেহেম শরীফে ধারণ করলাম, ধারণ করার প্রথম মাস হলো রজবুল আছাম শরীফ, সে মাসে একসময় আমি একরাত্রে স্বপ্নের আবেশে ছিলাম। তখন আমার কক্ষে প্রবেশ করলেন এক ব্যক্তি যিনি ছিলেন লাবন্যময় চেহারা বিশিষ্ট সুঘ্রাণে ভরপুর এবং আলোকোজ্জ্বল। তিনি বলছিলেন, ইয়া হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনাকে স্বাগতম। আমি (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম) উনাকে প্রশ্ন করলাম: আপনি কে? তিনি বললেন, আমি মানব জাতির পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম। আমি বললাম আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আপনি মূলতঃ মহাসম্মানিত রেহেম শরীফে ধারণ করেছেন যিনি রবিয়া ও মুদার গোত্রের ফখর (গৌরবের কারণ)। যিনি সাইয়্যিদুল বাশার ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
২য় মাসের মুবারক স্বপ্ন:
যখন দ্বিতীয় মাস (শাবান শরীফ) সমাগত হল তখন এক ব্যক্তি তিনি আমার নিকট আগমণ করলেন। তিনি বললেন, আসসালামু আলাইকা ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম) উনাকে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হযরত শীশ আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আমি বললাম, আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। নিশ্চয়ই আপনি মহাসম্মানিত রেহেম শরীফে ধারণ করেছেন, যিনি রহস্যের উন্মোচক এবং (জাওয়ামিউল কালাম) ছহিবে হাদিছ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
৩য় মাসের মুবারক স্বপ্ন:
তৃতীয় মাস (রমাদ্বান শরীফ) যখন আগমণ করল তখন আমার নিকট এলেন এক ব্যক্তি। তিনি বললেন, আসসালামু আলাইকা ইয়া নাবিআল্লাহ্! আমি (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম) উনাকে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হযরত ইদরীস আলাইহিস সালাম। আমি বললাম, আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। নিশ্চয় আপনি আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের সর্দারকে মহাসম্মানিত রেহেম শরীফে ধারণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
৪র্থ মাসের মুবারক স্বপ্ন:
চতুর্থ মাস (শাওয়াল শরীফ) যখন আগমণ করল তখন এক ব্যক্তি তিনি আমার নিকট আগমণ করলেন। তিনি বললেন, আসসালামু আলাইকা ইয়া হাবীবাল্লাহ্! আমি বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হযরত নূহ আলাইহিস সালাম। আমি (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম) উনাকে বললাম, আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। নিশ্চয় আপনি মহাসম্মানিত রেহেম শরীফে ধারণ করেছেন যিনি সাহায্য ও বিজয়ের ছাহিব বা অধিকারী উনাকে। সুবহানাল্লাহ!
৫ম মাসের মুবারক স্বপ্ন:
পঞ্চম মাস (জিলক্বদ শরীফ) যখন আগমণ করল তখন এক ব্যক্তি তিনি আমার নিকট আগমণ করলেন। তিনি বললেন, আসসালামু আলাইকা ইয়া সাফওয়াতাল্লাহি! হে মহান আল্লাহ পাক উনার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন! আপনার প্রতি সালাম। আমি (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম) উনাকে বললাম আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হযরত হুদ আলাইহিস সালম। আমি বললাম, আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। কেননা আপনি মহাসম্মানিত রেহেম শরীফে ধারণ করেছেন প্রতিশ্রুত দিবসের (হাশরের দিনের) শাফায়াতে উজমার যিনি অধিকারী বা মালিক হবেন উনাকে। সুবহানাল্লাহ!
৬ষ্ঠ মাসের মুবারক স্বপ্ন:
৬ষ্ঠ মাস (জিলহজ্জ শরীফ) যখন আগমণ করল তখন এক ব্যক্তি তিনি আমার নিকট আগমণ করলেন। তিনি বললেন, আসসালামু আলাইকা ইয়া রহমাতাল্লাহ্! হে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত! আপনার প্রতি সালাম। আমি (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম) উনাকে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম। আমি বললাম, আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। কেননা আপনি মহাসম্মানিত রেহেম শরীফে ধারণ করেছেন মহাসম্মানিত নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে। সুবহানাল্লাহ!
৭ম মাসের মুবারক স্বপ্ন:
সপ্তম মাস (মুহররম শরীফ) যখন আগমণ করল তখন এক ব্যক্তি তিনি আমার নিকট আগমণ করলেন। তিনি বললেন, হে মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত ব্যক্তিত্ব! আপনার প্রতি সালাম। আমি (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম) উনাকে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হযরত ইসমাঈল যবীহুল্লাহ্ আলাইহিস সালাম। আমি বললাম, আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। কেননা আপনি মহাসম্মানিত রেহেম শরীফে ধারণ করেছেন সবিশেষ লাবণ্যময় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে। সুবহানাল্লাহ!
৮ম মাসের মুবারক স্বপ্ন:
অষ্টম মাস (ছফর শরীফ) যখন আগমণ করল তখন এক ব্যক্তি তিনি আমার নিকট আগমণ করলেন। তিনি বললেন, আসসালামু আলাইকা ইয়া খাইরাতাল্লাহ্! হে মহান আল্লাহ পাক উনার সমূহ কল্যাণ! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম) উনাকে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হযরত মুসা ইবনে ইমরান আলাইহিস সালাম। আমি বললাম, আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। কেননা আপনি মহাসম্মানিত রেহেম শরীফে ধারণ করেছেন যাঁর উপর পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল হবে উনাকে। সুবহানাল্লাহ!
৯ম মাসের মুবারক স্বপ্ন:
যখন নবম মাস (সাইয়্যিদুশ শুহুরিল আ’যম শরীফ) আগমণ করল তখন এক ব্যক্তি তিনি আমার নিকট আগমণ করলেন। তিনি বললেন, ইয়া খাতামা রুসুলিল্লাহ! হে মহান আল্লাহ পাক উনার রাসূলগণের সর্বশেষ! আপনার আগমণ নিকটবর্তী। ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম) উনাকে বললাম, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহাস সালাম। আমি বললাম, আপনার অভিপ্রায় কি? তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম! আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। কেননা আপনি মহাসম্মানিত রেহেম শরীফে ধারণ করেছেন মহাসম্মানিত নবী-মহিমান্বিত রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে। আপনার থেকে দূর হয়ে গেল দুঃখ, কষ্ট-রোগ-যন্ত্রণা।
(আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম, ইবনে হাজার হায়সামি)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)