সম্মানিত ঈমান বৃদ্ধিকারী ওয়াক্বেয়া মুবারক আমারও তিনটি মুহব্বতের বিষয় রয়েছে...
, ২১ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩১ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ৩০ মে, ২০২৪ খ্রি:, ১৬ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নূরুর রহমত মুবারক (চেহারা মুবারক) অবলোকন করে কিভাবে উনাদের চক্ষু মুবারক, হৃদয় মুবারক শীতল করতেন, উনাকে কতটুকু মুহব্বত মুবারক করতেন তার একটি দৃষ্টান্ত সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার এই ঘটনা মুবারক দ্বারা কিছুটা অনুমান করা যাবে।
একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন-
حبب إلي من دنياكم ثلاث الطيب والنساء وجعلت قرة عيني في الصلاة
‘তোমাদের এই দুনিয়ার ৩টি বিষয় আমার জন্য পছন্দের করা হয়েছে। ১. সুঘ্রাণ, ২. হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে ৩. নামায যা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুনাওওয়ার মুবারক (চক্ষু মুবারক) উনার শীতলতা। ’
এই কথা মুবারক শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমারও তিনটি মুহব্বতের বিষয় রয়েছেন; তা হলো-
النَّظُرُ إِلَى وَجْهِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَإِنْفَاقُ مَالِي عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنْ يَكُونَ ابْنَتِي تَحتَ رَسُولِ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘১. নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নূরুর রহমত মুবারক (চেহারা মুবারক) উনার দর্শন মুবারক লাভ করা অর্থাৎ উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করা। ২. উনার জন্য আমার সমস্ত ধন-সম্পদ উৎসর্গ করা, বিলিয়ে দেয়া। এবং ৩. আমার মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) সাইয়িদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট নিসবতে আযীমাহ শরীফ দেয়া। ’ সুবহানাল্লাহ! (আল মুনাব্বিহাত ২১ ও ২২ নং পৃষ্ঠা)
প্রকৃত মুহব্বত কখনোই বৃথা যায় না। তাইতো সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার জীবনী মুবারকে আমরা দেখতে পাই যে, উনার প্রতিটি আকাঙ্খা মুবারক বাস্তবে পরিণত হয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিতা বানাত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীমাহ শরীফ দিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
সফরে অসফরে অর্থাৎ দায়িমীভাবে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারকে থাকার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন। পবিত্র হিজরত মুবারক উনার সময় ছাওর পর্বতের গুহার মাঝে তিনিই ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একমাত্র সঙ্গী। এমনকি পবিত্র বিছাল শরীফ উনার পরেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারকে পবিত্র রওযা শরীফ উনার পাশেই চিরদিনের সঙ্গী হতে পেরেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সমস্ত ধন-সম্পদও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য এমনভাবে খরচ করেছেন যে, স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সন্তুষ্টি মুবারক প্রকাশ করে ইরশাদ মুবারক করেছেন-
مَا نَفَعَنِي مَالُ أَحَدٍ قَطُّ مَا نَفَعَنِي مَالُ حضرت أَبِي بَكْرٍ عليه السلام
‘সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মাল-সম্পদ আমার যতবেশি উপকারে এসেছে অন্য কারো সম্পদ আমার এতবেশি উপকারে আসেনি। ’
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন এই ঘোষণা মুবারক দিলেন তখন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি কান্না মুবারক করলেন এবং বললেন-
وهل أنا ومالي إلا لك يا رسول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
‘ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি এবং আমার সম্পদ কি আপনার জন্য নয়? অর্থাৎ আমার সমস্ত কিছুই তো আপনার জন্য কুরবান। ’ সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ, মুসনাদে আহমদ ২/২৫৩, ছহীহ ইবনে হিব্বান ১৫/২৭৩ ইত্যাদি)
অপর বর্ণনায় অর্থ-সম্পদের সাথে সাহচর্যের কথাও উল্লেখ রয়েছেন-
إِنَّ (مِنْ) أَمَّنَ النَّاسِ عَلَيَّ فِي صُحْبَتِهِ وَمَالَهِ حضرت أَبُو بَكْرٍ عليه السلام
‘সাহচর্য অর্থাৎ সময় ও অর্থ-সম্পদ দ্বারা আমার সবচেয়ে বেশী খিদমত মুবারক উনার অনজাম দিয়েছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি। ’ সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সকল কাফিররাই মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৫)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৪)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)