মহিমান্বিত দশ দিন ও দশ রাত্রি (পর্ব-৯)
, ০৪ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৪ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২৩ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০৯ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
বলার বিষয় হল, যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব তারা তো অবশ্যই কুরবানী করবে। আর যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব না তারাও অনেকে মিলে সামর্থ্য অনুযায়ী গরু-ছাগল, বকরী-ভেড়া যেটাই সম্ভব কুরবানী করলে প্রত্যেকের জন্যই পুলছিরাত পার হওয়া সহজ হবে।
পবিত্র কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার শর্তাবলী:
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ مِخْنَفِ بْنِ سُلَيْمٍ رَضِىَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ كُنَّا وُقُوْفًا مَعَ رَسُوْلِ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَفَةَ فَسَمِعْتُه يَقُوْلُ يَا اَيُّهَا النَّاسُ اِنَّ عَلٰى كُلِّ اَهْلِ بَيْتٍ فِىْ كُلِّ عَامٍ اُضْحِيَّةٌ
অর্থ: হযরত মিখনাফ ইবনে সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আরাফার দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে অবস্থান করছিলাম। অতঃপর আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, “হে লোক সকল! নিশ্চয়ই প্রত্যেক আহলে বাইত তথা প্রত্যেক মালিকে নিসাবের পক্ষ থেকে প্রতি বছরই পবিত্র কুরবানী করা ওয়াজিব”। (মিশকাত শরীফ)
হানাফী মাযহাব মতে, কুরবানীর ক্ষেত্রে মালিকে নিসাব ঐ ব্যক্তিকে বলা হয়, যার কাছে পূর্ণ এক বছর নয়; বরং কুরবানীর তিন দিন অর্থাৎ যিলহজ্জ শরীফ উনার ১০ তারিখ ছুবহে ছাদিক হতে ১২ তারিখ মাগরিব পর্যন্ত যে কোনো সময় সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপা বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপার সমপরিমান টাকা থাকবে..। এছাড়া এসময়ের মধ্যে কারো কাছে হাওয়ায়েযে আছলিয়া তথা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অতিরিক্ত সম্পদ ‘নিসাব পরিমাণ’ থাকলে সেও মালিকে নিসাব হবে। আর এধরণের মালিকে নিসাবের উপর কুরবানী ওয়াজিব।
কিন্তু বর্তমানে দেখা যায়, সূক্ষ্মভাবে কুরবানীদাতাকে কুরবানীর অশেষ ফযিলত থেকে মাহরুম করে রাখার জন্য কুরবানীর টাকা গরিব-মিসকীনদের মাঝে দান করে দিতে উৎসাহিত করা হয়। নাঊযুবিল্লাহ! এটা শরীয়তসম্মত না। কারণ ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়াজিব আমল তরক করা কবীরাহ গুনাহ।
আবার এও দেখা যায়, ছেলে মালিকে নিসাব কিন্তু পিতা-মাতা মালিকে নিসাব না, তা সত্ত্বেও ছেলেকে বলা হয় পিতা-মাতার পক্ষ থেকে কুরবানী না দিয়ে নিজের পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়া যাবেনা। নাঊযুবিল্লাহ! এটাও সম্মানিত শরীয়ত বহির্ভূত।
কারণ সম্মানিত শরীয়ত উনার উছূল হলো, যার উপর কুরবানী ওয়াজিব তাকে অবশ্যই কুরবানী দিতে হবে। এরপর সম্ভব হলে পরিবারের অন্যান্যদের পক্ষ থেকে কুরবানী দিতে পারবে।
আর কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার পরও যারা কুরবানী করবে না তাদের সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرُبَنَّ مُصَلَّانَا
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তির কুরবানী করার সামর্থ্য রয়েছে, সে যদি কুরবানী না করে, তাহলে সে যেন ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয় অর্থাৎ ঈদগাহে না আসে”। (মুসনাদে আহমাদ শরীফ)
মূলত: মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা বান্দা-বান্দী, উম্মতকে বিভিন্নভাবে ছওয়াব দান করতে চান, কিন্তু বান্দা-বান্দী এই সমস্ত আমল থেকে গাফিল থাকার কারণে রহমত থেকে মাহরুম থাকে। নাঊযুবিল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঠান্ডা ও মিঠা পানি পান করা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)