বেইলি রোডে অগ্নিকা- : প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর ভাসা দেশ যখন বিপদজনক সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করে (১)
, ০৯ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২০ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ০৬ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) আপনাদের মতামত
সম্প্রতি বেইলি রোডে যে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটেছে তার পেছনে গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ জড়িত ছিলো। অগ্নিকা- থেকে বেচে যাওয়া ব্যক্তিরা জানায়, আগুন লাগার সাথে সাথে প্রচ- শব্দে একের পর এক সিলিন্ডার বিষ্ফোরণে শব্দ তারা শুনতে পান। আগুন নিভে যাবার পর প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পুড়ে যাওয়া ভবন থেকে মোট ৪০টি বিষ্ফোরিত সিলিন্ডারের ধ্বংসাবশেষ তারা দেখেছেন। সিলিন্ডার বিষ্ফোরনের কারণে মাত্র কয়েক মিনিটে আগুন ভবনটি ছড়িয়ে পড়ে। সিড়িতে রাখা সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ হওয়াতে মানুষের যাতায়াতের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, সিলিন্ডার বিষ্ফোরণের বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পরও দায়িত্বশীলরা অনেক সময় সিলিন্ডার বিষ্ফোরণের বিষয়টি অস্বীকার করে। এর কারণ সম্ভবত বাংলাদেশে সিলিন্ডার গ্যাস আমদানির পেছনে বড় বড় রাঘব বোয়াল জড়িত। অগ্নিকা-ের দায় এড়াতেই তাই সিলিন্ডার বিষ্পোরণের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়।
তবে শুধু বেইলি রোডের ঘটনা নয়, আপনি যদি পত্রিকা খুলেন, তবে দেখবেন দেশের বিভিন্ন যায়গায় প্রতিদিন এলপিজি সিলিন্ডার বিষ্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। যদিও সেই খবরগুলোকে কেউ তেমন গুরুত্ব দেয় না। এর কারণ সম্ভবত সাধারণ মানুষের হতাহতের বিষয়টি আমাদের কাছে গুরুত্বহীন হয়ে গেছে। কিন্তু বেইলি রোডের ঘটনায় পুলিশের ডিআইজির মেয়ে, গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর মেয়ে, ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট বাবার ছেলে, দুদক কর্মকর্তার পরিবার, কাস্টমস কর্মকর্তার পরিবার, খেলোয়াড়ের মা, সাংবাদিক, আইনজীবি, রাজনৈতিক নেতা, প্রবাসী, অভিজাত স্কুলের শিক্ষিকা মারা যাওয়ায় বিষয়টি বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। তাছাড়া ঐ এলাকায় ঐ ধরনের মানুষের যাতায়াত বেশি, ফলে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টির কারণে বেইলী রোডের অগ্নিকা-ের ঘটনা বেশ গুরুত্ব পেয়েছে।
এখানে একটি বিষয় বুঝার আছে, আজকে যদি রেস্তোরাগুলোতে সিলিন্ডার গ্যাস না থেকে লাইনের গ্যাস থাকতো, তবে আগুন লাগার সাথে সাথে শুধু লাইন বন্ধ করে দিলেই আগুনের উৎস বন্ধ হয়ে যেতো। কিন্তু সিলিন্ডার গ্যাস হচ্ছে একটি উচ্চ চাপে গ্যাস জমা রাখার স্থান। প্রতিটা সিলিন্ডার নিজেই এক একটা বোমা। সুতরাং সিলিন্ডার গ্যাস রাখার স্থানে আগুন ধরলে অতি উচ্চ চাপমাত্রায় বিষ্ফোরণ হওয়া স্বাভাবিক। আবার লাইনের গ্যাস হচ্ছে মিথেন বা ইথেন যা তুলনামূলক হালকা। ফলে লিকেজ হলেও তা উপরে দেয়ালের ফাকা দিয়ে বের হয়ে যেতে পারে। কিন্তু এলপিজি গ্যাস হচ্ছে বিউটেন ও প্রোপেন, যা তুলনামূলক ভারি, যা লিকেজ হলে ঘরে জমে থাকার সম্ভবনা থাকে, ফলে দুর্ঘটনা ঘটনার আশঙ্কাও বেশি।
দেখবেন, অগ্নিকা-ের ঘটনার পর সরকারী বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরায় সিলিন্ডার বিরোধী অভিযান শুরু করেছে। সিলিন্ডার পেলে হোটেল মালিক কর্মচারিকে গ্রেফতার করছে। অনেক রেস্তোরা মালিকরা সরকারী অভিজানের ভয়ে সিলিন্ডার টয়লেট-ওয়াশরুমে লুকিয়ে রেখেছে। আসলে রেস্তোরায় সিলিন্ডার বিরোধী অভিযান করে কি লাভ? তারা সিলিন্ডার ছাড়া রান্না করবে কিভাবে? সরকার কি তাদের লাইনের গ্যাস দিয়েছে? দেয়নি।
আর হোটেল-রেস্তোরায় যে শুধু সিলিন্ডার আছে, বিষয়টি এমন নয়। এখন তো অনেক বাসাবাড়িতেই সিলিন্ডার গ্যাস। ঘরের ভেতর সিলিন্ডার রেখে প্রতিটি বাসায় রান্না চলছে। অনেক অ্যাপার্টমেন্টে নিচ তলায় সিলিন্ডারের বহর থাকে। সেখানে যদি কোন কারণে সিলিন্ডার বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে, তবে পুরো বাড়িই তো হুমকির সম্মুখীন হবে। অনেকে নিরাপত্তার জন্য আলাদা সিড়ি তৈরীর কথা বলে, কিন্তু সিলিন্ডার বিষ্ফোরণ হলে যে দ্রুত গতিতে আগুন ছড়ায় তাতে কতজন মানুষ দ্রুত বের হতে পারবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
এখানে একটি প্রশ্ন উদয় হতে পারে, বাংলাদেশে মাটির নিচে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক গ্যাস আছে। আমরা সেই প্রাকৃতিক গ্যাস না ব্যবহার করে কেন বিদেশ থেকে আমদানি করা সিলিন্ডার ব্যবহার করবো?
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলমানদের দমিয়ে রাখতেই ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ বুলি
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
এ সকল মুখোশধারীদের আসল পরিচয় অনেকেরই অজানা!
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
১০ ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যুব সমাজকে খেলাধুলার প্রতি ঝুঁকিয়ে দেয়া একটি ভয়াবহ চক্রান্ত
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, তাহলেই রাজধানী হবে সমস্যামুক্ত
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুলুমতন্ত্র থেকে খালিছ ইস্তিগফার-তওবা করুন
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
উপজাতিদের যেভাবে উস্কানি দিচ্ছে এনজিওগুলো
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিন্দুদের পূর্বপুরুষরাও একসময় মুসলমান ছিলো
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাবার খাবেন কোথায়?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রক্তাক্ত ইতিহাস, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জায়নবাদী ইহুদী পরিকল্পনার গোপন দস্তাবেজ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মীরা কখনোই চায়নি, এখনও চায় না মুসলমানদের উন্নতি
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)