পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন আমল করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক
, ০৭ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৬ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ১৪ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ইমাম জামালুদ্দীন আবুল ফারজ আব্দুর রহমান ইবনে আবুল হাসান বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি। যিনি ইমাম ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি হিসেবে মশহূর। উনার লিখিত একখানা কিতাব যার নাম ‘বুস্তানুল ওয়ায়েজীন ওয়া রিয়াদ্বুস সামি‘য়ীন’। তিনি এই কিতাবের একটি অধ্যায়ের নামকরণ করেছেন,مَجْلِسُ فِيْ فَضْلِ يَوْمِ عَاشُورَاءَ وَمَا جَاءَ فِيْهِ অর্থাৎ পবিত্র আশূরা শরীফ উনার ফযীলত এবং এ বিষয়ে যা কিছু বর্ণিত রয়েছেন সেই বিষয়ে মজলিস।
উক্ত কিতাবে হযরত ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো উল্লেখ করেন-
বর্ণিত রয়েছেন, নিশ্চয়ই হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র তাওরাত শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন, যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন রোযা রাখবে, সে যেন সারা বছর রোযা রাখল এবং যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন দান-ছদক্বা করবে, সে যেন তার নিকট সুওয়ালকারীদের কাউকেই ফিরিয়ে দিলোনা অর্থাৎ সকলকেই দান করলো। যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন কোন বিবস্ত্র ব্যক্তিকে পোশাক পরিধান করালো, সে যেন মহান আল্লাহ পাক উনার সমস্ত সৃষ্টিকে পোষাক পরিধান করালো। যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন কোনো ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলালো, সে যেন সমস্ত ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলালো। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ ব্যক্তির জন্য সেই ইয়াতীমের মাথার প্রত্যেক চুলের পরিবর্তে ৭ শত গাছ রোপণ করবেন, প্রত্যেক গাছে আকাশের তারকা সংখ্যক অলঙ্কার থাকবে। যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন কোনো পথভোলা ব্যক্তিকে পথ দেখাবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ ব্যক্তির কবরের অন্ধকার দূর করে দিবেন এবং ঐ ব্যক্তির অন্তরকে নূর দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিবেন এবং যে ব্যক্তি রাগ সংবরণ করবে, মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে ঐ ব্যক্তির নাম সন্তুষ্টকারীদের নামের তালিকায় লিখে দেয়া হবে। যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন কারো জানাযায় উপস্থিত হবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, জান্নাতে তার সমপরিমান মর্যাদা তার জন্য সৃষ্টি করা হবে অর্থাৎ জান্নাতে তাকে অগণিত মর্যাদা দান করা হবে। যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন তার প্রবৃত্তিকে সংবরণ করবে এবং তার কোনো মুসলমান ভাইকে খাদ্য খাওয়াবে, সে ব্যক্তি জান্নাতের খাবার ও পানীয় না খাওয়া পর্যন্ত হযরত মালাকুল মউত আলাইহিস সালাম তিনি তার রূহ কবয করবেন না। যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন গোসল করবে, সে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পবিত্র হিসেবে গণ্য হবে। যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে অথবা রাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার একখানা সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করবে, হযরত ইদরীস আলাইহিস সালাম উনার সমপরিমান নেকী তাকে দান করা হবে। যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার রাতে সাজাগ থেকে ইবাদত-বন্দেগী করবে, সে যেন নৈকট্য লাভকারী হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মতোই ইবাদত করলো। যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে বা রাতে কান্না করবে, অথবা মহান আল্লাহ পাক উনার ভয়ে কারো চোখের পানি প্রবাহিত হবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার কপালে খয়িফীন বান্দা উনাদের অর্ন্তভুক্ত লিখে দিবেন। যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন পরকালের উপকারে আসে এমন নছীহত শোনার জন্য বা সম্মানিত দ্বীন সম্পর্কে মাসয়ালা-মাসায়িল শিখার জন্য কোনো আলিম উনাকে আনার ব্যবস্থা করবে, তাকে হযরত আনছার ও মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের অনুরূপ ছাওয়াব দান করা হবে এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি তার জন্য সম্মানিত জান্নাত ওয়াজিব করে দিবেন। আর দুই জন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমাস সালাম উনারা যে দিন ঐ আলিম উনাকে আনা হয়েছিলো সে দিন থেকে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন পর্যন্ত তার আমলনামায় ছাওয়াব লিখতে থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! যে ব্যক্তি পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন ইখলাছের সাথে এবং পবিত্র আশূরা শরীফ উনার ফযীলত সম্পর্কে জেনে রোযা রাখবে, যে দিন থেকে রোযা রেখেছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্বিয়ামত পর্যন্ত ঐ ব্যক্তির জন্য দো‘আ করার জন্য তার প্রতি দিন-রাতের প্রত্যেক মুহুর্তের জন্য ১ লক্ষ হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নির্দিষ্ট করে দিবেন। ” সুবহানাল্লাহ! (বুস্তানুল ওয়ায়েজীন ওয়া রিয়াদ্বুস সামি‘য়ীন পৃষ্টা নং ২৩৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক অনুযায়ী আমল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)