ছহিবু সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ
মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাপবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে- পবিত্র হজ্জ এবং পবিত্র উমরাহ উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত, হুকুম-আহকাম সম্পর্কে
, ২০ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১১ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১০ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ২৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পৃথিবীর চাঁদ সম্পর্কে যতগুলি সংস্থা রয়েছে, নাসা রয়েছে, যারা রকেট নিক্ষেপ করে এরাও কিন্তু চাঁদের মাসয়ালা জানে না। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, তারা রকেট সম্পর্কে অভিজ্ঞ। চাঁদ সম্পর্কে অভিজ্ঞ না। অনেকগুলি বিষয় রয়েছে, যারা এ সমস্ত বিষয় নাড়াচাড়া করে থাকে, তাদের চাঁদ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অত্যন্ত কম। যার কারণে সৌদি আরব ধোঁকা দিতে পারে, মিথ্যা বলে। এখন এ বিষয়ে ইলম অর্জন করা প্রত্যেকের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমাদের এখানে কয়েকবার চাঁদের প্রদর্শনী করা হয়েছে। আমরা বলেছি, সামনে আরো করার জন্য। যাতে চাঁদের মাসয়ালা প্রত্যেকেই জেনে সে অনুযায়ী আমল করতে পারে।
কাজেই বিষয়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পবিত্র হজ্জ পবিত্র উমরাহ করতে হবে, কিন্তু উমরাহর জন্য যদিও যে কোন মাস যে কোন দিন সে করতে পারবে। সে নির্দিষ্ট পাঁচ দিন ব্যতীত। কিন্তু পবিত্র হজ্জতো সবসময় করতে পারবে না। নির্দিষ্ট সময় ব্যতীত। কাজেই এটা ফিকির করতে হবে। চাঁদের মাসয়ালাটা ফিকির করতে হবে। এখন ইহুদী নাছারারা চাঁদের সম্পর্কে জানে না এবং চাঁদ সম্পর্কে কোন প্রকার তাহক্বীক্ব তাদের নেই। যেহেতু চাঁদ তাদের প্রয়োজন হয় না। মুসলমানদের প্রয়োজন হয়ে থাকে। কাজেই মুসলমানদেরকে তাহক্বীক্ব করতে হবে। এবং সে বিষয়টা ব্যাপক আলোচনা করতে হবে। এখন আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত মজলিস যারা করে, তারা সব জায়গায় সেটা করতে পারে। সারা দেশে সারা পৃথিবীব্যাপী করতে পারে। সঠিকটা মানুষকে বলা যেতে পারে। যাতে মানুষের অর্থাৎ মুসলমানদের পবিত্র হজ্জ শুদ্ধ হয়। এখন মানুষ এতো কষ্ট করে পবিত্র হজ্জ করতে যায়, চাঁদের তারিখ পরিবর্তন করে দিল, তাহলে পবিত্র হজ্জ হলো কি করে। এছাড়াতো আরো ফিতনা রয়েছে। বেপর্দা ও ছবির ফিতনা রয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে আলোচনা করবো। ইনশাআল্লাহ! কাজেই চাঁদের বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা প্রত্যেককে তাহক্বীক্ব করতে হবে। তাহক্বীক্ব করে চাঁদ দেখে তারপর পবিত্র হজ্জ করা। এ বিষয়টা ফায়সালা করতে হবে। সমস্ত শর্ত শারায়েত পূর্ণ হলে তখনই তার পবিত্র হজ্জে মাবরূর নছীব হবে। সুবহানাল্লাহ! চাঁদ দেখার যে বিষয় সে বিষেয় পবিত্র হাদীছ শরীফে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে ২৯ বা ৩০ দিন। এদের অনেকের কাছে যোগাযোগ করার পর এরা কিন্তু বলেছে, বহপুপষড়ঢ়বফরধ নৎরঃধহহরপধ (এনসাইক্লপেডিয়া ব্রিটিনিকা) সেখানে তাদের একটা বক্তব্য রয়েছে, চাঁদকে বুঝতে হলে ষাট হাজার ক্যালকুলেশন করতে হবে। এটা একটা প্রতারণা, ধোঁকা, মিথ্যা কথা। এরা কঠিন মিথ্যাবাদী, কাট্টা মূর্খ ও গুমরাহ হওয়ার কারণে একথা বলেছে। অতএব ষাট হাজার কেন ষাট লক্ষ ক্যালকুলেশন করলেও তারা বুঝতে পারবে না। যার জন্য সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
صُومُوْا لِرُؤْيَتِه وَأَفْطِرُوْا لِرُؤْيَتِه،
চাঁদ দেখে মাস গণনা করবে, চাঁদ দেখেই ঈদ করবে তথা পরবর্তী মাস গণনা করবে। এটা স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে। এখানে কোন অস্পষ্টতা নেই। চু-চেরা করার কোন সুযোগ নেই। আরবী মাস হয় ২৯ দিনে হবে না হয় ৩০ দিনে হবে। আরবী মাস কখনও ২৮ দিনেও হয় না এবং ৩১ দিনেও হয় না। কাজেই বিষয়টা ফিকির করতে হবে। সৌদি আরব কিন্তু আমাদের লেখালেখির কারণে এক বছর তারা আরবী একমাস ৩১ দিনও গণনা করেছে। নাউযূবিল্লাহ! ওটা আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে। বিষয়টা ফিকির করতে হবে। পবিত্র হজ্জ উনার বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পবিত্র হজ্জ সঠিকভাবে করতে হলে প্রাথমিকভাবে চাঁদের বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ। চাঁদের তাহক্বীক্ব ভালো করে করতে হবে। এটা বুঝতে হলে পড়াশুনা করতে হবে। আর এ বিষয় পড়াশুনা করতে হলে আলাদা বই-পুস্তক পাওয়া যাবে না। আমাদের এখানে মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ ও দৈনিক আল ইহসান শরীফ রীতিমত পড়লেই এ বিষয়গুলো বুঝতে সহজ হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদেরকে এ বিষয় যথাযথভাবে বুঝার তাওফীক্ব দান করেন।
যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে, যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র হজ্জ ও পবিত্র উমরা সম্পর্কে বান্দা-বান্দি, উম্মতদের জন্য বিস্তারিত আলোচনা করেছেন, বর্ণনা করেছেন। যে সম্পর্কে বান্দা-বান্দি, উম্মতদের ইলম অর্জন করা ফরযের অন্তর্ভূক্ত।
যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَأَتِـمُّوا الْـحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلّٰهِ
“তোমরা পবিত্র হজ্জ ও উমরাহ করো যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার রেজামন্দী-সন্তুষ্টি হাছিলের উদ্দেশ্যে এবং যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি রেজামন্দী হাছিলের লক্ষ্যে।” সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بُنِيَ الْإِسْلاَمُ عَلٰى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لَّا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ، وَأَنَّ مُـحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيْتَاءِ الزَّكَاةِ وَالْـحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَان.
হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত ইসলামের ভিত্তি হলো পাঁচটি বিষয়ের উপরে। প্রথম: কালিমা শরীফ, মহান আল্লাহ পাক তিনি একক এবং উনার হাবীব এবং আবদ এবং রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। এরপর
وَإِقَامِ الصَّلاَةِ
পবিত্র নামায ক্বায়িম করা।
وَإِيْتَاءِ الزَّكَاةِ
পবিত্র যাকাত আদায় করা।
وَالْـحَجِّ
পবিত্র হজ্জ সম্পাদন করা।
وَصَوْمِ رَمَضَانَ
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার রোযা রাখা। সুবহানাল্লাহ!
পাঁচটা ভিতের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন, পবিত্র হজ্জ এবং সংশ্লিষ্ট পবিত্র উমরা। যেটা মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র হজ্জ উনার আদেশ সম্পর্কে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلِلّٰهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيْلًا
“মানুষের জন্য পবিত্র হজ্জ ফরয করা হয়েছে, যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার রেজামন্দি, সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের জন্য। যাদের সামর্থ রয়েছে পথ এবং পাথেয় এর। অর্থাৎ পবিত্র ঈমান উনার নিরাপত্তা ও প্রাণের নিরাপত্তাসহ বাহন, পথের খরচ, সাংসারিক খরচ অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদী যাদের রয়েছে।
وَمَنْ كَفَرَ فَإِنَّ اللهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِيْنَ.
আর যে এ বিষয় অস্বীকার করবে সে যেন যেনে রাখে যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কায়িনাত থেকে বেনিয়াজ। তিনি কারো মুহতাজ নন।” সুবহানাল্লাহ!
কাজেই যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার রেজামন্দি, সন্তুষ্টি এবং যিনি উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রেজান্দি, সন্তুষ্টি হাছিলের জন্যে পবিত্র হজ্জ সম্পাদন করতে হবে। সুবহানাল্লাহ! (অসমাপ্ত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩০)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)