ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
উলামায়ে ‘সূ’ তথা ধর্মব্যবসায়ীদের হাক্বীক্বত
, ১৪ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০১ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৫ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ مَنْ تَكَلَّمَ بِكَلَامِ الدُّنْيَا فِى الْـمَسْجِدِ اَحْبَطَ اللهُ اَعْمَالَهٗ أَرْبَعِيْنَ سَنَةً
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ تَكَلَّمَ بِكَلَامِ الدُّنْيَا فِى الْـمَسْجِدِ
কেউ যদি মসজিদের মধ্যে কোন দুনিয়াবী কথা বলে
اَحْبَطَ اللهُ اَعْمَالَهٗ أَرْبَعِيْنَ سَنَةً
মহান আল্লাহ পাক তিনি তার চল্লিশ বছরের নেকীগুলো নষ্ট করে দিবেন। নাউযুবিল্লাহ! কঠিন অবস্থা।
মসজিদের মধ্যে সাধারণভাবে দুনিয়াবী কথা বলা নিষেধ। সেখানে কেউ যদি কথা বলে তার চল্লিশ বছরের নেকী নষ্ট হয়ে যাবে। তাহলে যারা মসজিদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার বিরুদ্ধে বলতে চায়, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে বলতে চায়, ছবি প্রচার করতে চায় তাহলে এরা কোন শ্রেণির উলামায়ে ‘সূ’। এদের কত বছরের নেকী নষ্ট হবে সেটাতো বলার অপেক্ষা রাখে না। এটা একটা ক্বিয়ামতের আলামতের অন্তর্ভুক্ত যে, মসজিদের মধ্যে দুনিয়াবী কথা মানুষ বলবে।
অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتِ الْـحَسَنِ الْبصْرِىْ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ مُرْسَلًا، قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ: يَأْتِيْ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ يَكُوْنُ حَدِيْثُهُمْ فِيْ مَسَاجِدِهِمْ فِيْ أَمْرِ دُنْيَاهُمْ، فَلَا تُجَالِسُوْهُمْ، فَلَيْسَ للهِ فِيْهِمْ حَاجَةٌ
হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মুরসালসূত্রে বর্ণনা করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَأْتِيْ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ
অতিশীঘ্রই আমার উম্মতের মধ্যে এমন একটা সময় আসবে
يَكُوْنُ حَدِيْثُهُمْ فِىْ مَسَاجِدِهِمْ فِىْ اَمْرِ دُنْيَاهُمْ
মসজিদের মধ্যে তাদের কথাবার্তাগুলি হবে দুনিয়াবী ফায়দা হাছিলের লক্ষ্যে অর্থাৎ তারা মসজিদে কথা-বার্তা বলবে, দুনিয়াবী কথা-বার্তা, তাদের দুনিয়াবী ফায়দার জন্য। দুনিয়াবী, যে সমস্ত কথা-বার্তা অপ্রয়োজনীয় সে সমস্ত কথা-বার্তা তারা বলবে মসজিদে বসে। নাউযুবিল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَلَا تُـجَالِسُوْهُمْ
আর যেসমস্ত ব্যক্তিকে তোমরা মসজিদে বসে দুনিয়াবী কথা বলতে দেখবে তাদের সাথে তোমরা বসো না। এদের সাথে উঠা-বসা করো না।
فَلَيْسَ للهِ فِيْهِمْ حَاجَةٌ
মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এদের ইবাদত বন্দেগীর কোন প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ এদের দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার কোন খিদমত হবে না। এরা মহান আল্লাহ পাক উনার বিরোধিতা করেই ধ্বংস হয়ে যাবে। তোমরা যাদেরকে দেখতে পাবে মসজিদে বসে গাইরুল্লাহর কথা বলে, দুনিয়াবী কথা বলে, তাদের সাথে উঠা-বসা করো না। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্পষ্টভাবে এবং দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে দিয়েছেন। এখন মসজিদে বসে যদি ছবি তোলার পক্ষে কেউ বলে তার কঠিন শাস্তি হবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِىَ اللهِ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ إِنَّ اَشَدَّ النَّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْمُصَوِّرُوْنَ.
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুনেছেন। তিনি বলেন-
إِنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْمُصَوِّرُوْنَ.
নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে ঐ ব্যক্তির যে ছবি তোলে, ছবি আঁকে। যে ছবি তোলে এবং ছবি আঁকে তার কঠিন শাস্তি হবে।
আরেক পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
كُلُّ مُصَوِّرٍ فِى النَّارِ يَجْعَلُ لَهٗ بِكُلِّ صُوْرَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسًا فَتُعَذِّبُهٗ فِىْ جَهَنَّمَ
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তিনি বলেন-
كُلُّ مُصَوِّرٍ فِى النَّارِ
প্রত্যেক ছবি তৈরীকারী, প্রত্যেক মূর্তি তৈরীকারী, ছবি তোলনেওয়ালা, আকনেওয়ালা এরা সকলেই জাহান্নামে যাবে। নাউযুবিল্লাহ! এরা সকলেই জাহান্নামে যাবে।
كُلُّ مُصَوِّرٍ فِى النَّارِ
এরা সকলেই জাহান্নামে যাবে। এরা জাহান্নামী। নাউযুবিল্লাহ!
يَجْعَلُ لَهٗ بِكُلِّ صُوْرَةٍ صَوَّرَهَا نَفْسًا فَتُعَذِّبُهٗ فِىْ جَهَنَّمَ
এরপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যারা ছবি আঁকবে, ছবি তুলবে, এদেরকে মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি ক্বিয়ামতের দিন প্রাণ দিবেন, দিয়ে বলবেন, যে সমস্ত লোকেরা তোমাদের তুলেছিল, এঁকেছিল এবং তৈরী করেছিল তাদেরকে তোমরা জাহান্নামে শাস্তি দাও। নাউযুবিল্লাহ!
কাজেই যেই ছবি সম্পর্কে এতো কঠিন কথা রয়েছে, কঠিন আযাবের কথা, ছবি সম্পর্কে যত কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে অন্যান্য আমল সম্পর্কে এতো পবিত্র হাদীছ শরীফ খুব কমই রয়েছে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিক্বাহ বা ফতওয়ার সকল কিতাবেই গান-বাজনা, বাদ্য-যন্ত্র ইত্যাদিকে হারাম ফতওয়া দেয়া হয়েছে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪২)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কদমবুছী করা খাছ সুন্নত মুবারক
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যে সমস্ত উলামায়ে সূ’ ও তাদের শাগরেদ নামধারী মুসলমানরা মুশরিকদের মন্দির ও পূজায় পাহারা দিয়েছে তাদের ব্যাপারে শরঈ ফায়ছালা (৩)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রত্যেক মুসলমান পুরুষের জন্য দাড়ি রাখা ফরয
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যে সমস্ত উলামায়ে সূ’ ও তাদের শাগরেদ নামধারী মুসলমানরা মুশরিকদের মন্দির ও পূজায় পাহারা দিয়েছে তাদের ব্যাপারে শরঈ ফায়ছালা (২)
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)