ইস্তিন্ক্বা এর পরিচয় ও আহ্কাম:
, ২৮ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৭ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২১ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ইস্তিন্ক্বা কাকে বলে:
اَلْاِسْتِنْقَاءُ (ইস্তিন্ক্বা) শব্দটি نَقْوٌ (নাক্বউন) শব্দ থেকে এসেছে। এর শাব্দিক অর্থ হলো মুছে পরিস্কার করা, পরিচ্ছন্ন করা ।
আর اَلْاِسْتِنْقَاءُ (ইস্তিন্ক্বা) শব্দটির পারিভাষিক অর্থ হলো শৌচ করার পর বড় ইস্তিন্জার রাস্তায় (পায়খানার রাস্তায়) মুস্তা’মাল পানি (ব্যবহৃত পানি) পাক কাপড়, পাক নেকড়া (তেনা) বা পাক রুমাল দিয়ে মুছাকে ইস্তিন্ক্বা বলে। পাক কাপড় না থাকলে হাত দিয়ে এমনভাবে মুছে ফেলবে যেন ইস্তিন্জার রাস্তায় মুস্তা’মাল পানি বিন্দু পরিমান না থাকে। এরপর সাবান বা পাক মাটি দিয়ে তিনবার হাত ধুয়ে নিবে।
উল্লেখ্য যে, সাধারণতঃ ইস্তেনক্বা করা মোস্তাহাব। আর রোযা ভঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ইস্তেনক্বা করা ফরজ-ওয়াজিবের অন্তর্ভূক্ত। তাই ইস্তিন্ক্বার বিষয়টি রোযাদারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন তাবিনুল হাক্বায়েক্ব কিতাবে উল্লেখ আছে, রোযাদার মহিলা হউক, পুরুষ হউক ইস্তিন্ক্বা না করে উঠবে না। অর্থাৎ বড় ইস্তিন্জার রাস্তায় (পায়খানার রাস্তায়) মুস্তা’মাল পানি (ব্যবহৃত পানি) পাক নেকড়া (তেনা) দিয়ে না মুছে উঠবে না।
রোযাদারের শৌচ করার নিয়ম:
রোযাদার হলে বড় ইস্তিন্জার রাস্তা (পায়খানার রাস্তা) ঢিলা করে ফারাগাত মত শৌচ করবে না, চাপাভাবে বসে শৌচ করবে। ইহ্তিয়াত বা সতর্কভাবে পানি ব্যবহার করবে যেন মুস্তামাল পানি (ব্যবহৃত পানি) বড় ইস্তিন্জার রাস্তা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ না করে। রোযাদার ব্যক্তি শৌচকালে জোরে জোরে শ্বাস-প্রশ্বাস নিবে না। কারণ এতে করে মুস্তামাল পানি (ব্যবহৃত পানি) ভিতরে প্রবেশ করার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। শৌচ করার পর পাক নেকড়া দিয়ে বড় ইস্তিন্জার রাস্তা মুছে ফেলবে। নেকড়া না থাকলে টিসু দিয়ে, টিসু না থাকলে হাত দিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলবে যেন বিন্দুমাত্র পানি না থাকে। অন্যথায় মুস্তামাল পানি (ব্যবহৃত পানি) বড় ইস্তিন্জার রাস্তা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে রোযা ভঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরো উল্লেখ্য যে, বড় ইস্তিন্জার রাস্তার (পায়খানার রাস্তার) গ্রন্থির উপরে পানি প্রবেশ করলেও রোযা ভঙ্গ হবে। পুরুষ-মহিলা একই হুকুম। কাজেই রোযাদার হলে ইহ্ইতিয়াত এর সহিত বা সতর্কতার সহিত পানি ব্যবহার করবে যেন মুস্তামাল পানি (ব্যবহৃত পানি) বড় ইস্তিন্জার রাস্তা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে।
কেননা “ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবে উল্লেখ আছে,
اَلْاِحْتِيَاطُ فِىْ الْعِبَادَةِ وَاجِبٌ
অর্থ: “পবিত্র ইবাদত উনার ক্ষেত্রে ইহ্তিয়াত বা সাবধানতা অবলম্বন করা ওয়াজিব”।
“ফতওয়ায়ে শামী” কিতাবে উল্লেখ আছে,
لَا يَمْنَعُ شَرْعِيَّةٌ الْاِحْتِيَاطَ لِلتَّقْوٰي وَلِذَا قَالَ فِي شَرْحِ الْمُنْيَةِ اَلْأَوْلٰى هُوَ الْاِحْتِيَاطُ
অর্থ: (পবিত্র ইবাদত উনার ক্ষেত্রে) তাক্বওয়ার জন্য সাবধানতা: অবলম্বন করতে শরীয়ত নিষেধ করে না। তাই শরহুল মুনিয়া কিতাবে উল্লেখ আছে, সাবধানতা: অবলম্বন করাই অধিক উত্তম। ”
“ফতওয়ায়ে শামী” কিতাবে আরো উল্লেখ আছে,
لِأَنَّ الِاحْتِيَاطَ فِي الْعِبَادَةِ وَاجِبٌ
অর্থ: “কেননা পবিত্র ইবাদত উনার ক্ষেত্রে সাবধানতা: অবলম্বন করা ওয়াজিব”।
কাজেই রোযা যেহেতু একটি পবিত্র ইবাদত। তাই এই পবিত্র ইবাদত উনার ক্ষেত্রে ইহ্তিয়াত বা সাবধানতার জন্য রোযা অবস্থায় পুরুষ-মহিলা প্রত্যেককেই ইস্তিন্ক্বা করতে হবে। অর্থাৎ শৌচ করার পর বড় ইস্তিন্জার রাস্তায় (পায়খানার রাস্তায়) মুস্তা’মাল পানি (ব্যবহৃত পানি) পাক কাপড়, পাক নেকড়া (তেনা) বা পাক রুমাল দিয়ে মুছে ফেলবে। নেকড়া না থাকলে টিসু দিয়ে, টিসু না থাকলে হাত দিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলবে যেন বিন্দুমাত্র মুস্তা’মাল পানি (ব্যবহৃত পানি) না থাকে।
শৌচ করার পর হাত ধোয়ার নিয়ম:
শৌচ করার পর বাম হাত মাটি দ্বারা বা দেয়ালের উপর ডলিয়া-মলিয়া অথবা সাবান দিয়ে উভয় হাত তিনবার ধৌত করা সুন্নত। কেননা নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ্ হযূর পাক ছল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মাটি দ্বারা ও দেয়ালের উপর নূরুল মাগফিরাত মুবারক (হাত মুবারক) মলিয়া ধৌত করতেন। কাঁচা পানি অর্থাৎ স্বাভাবিক পানি দিয়ে শৌচ করায় বেশী ছওয়াব হয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার ঘটনার প্রেক্ষিতেই মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার ‘ছিদ্দীক্ব’ লক্বব মুবারক প্রকাশ পায়
২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা কুফরী
২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল কায়িনাত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা ও তা’যীমার্থে ক্বিয়াম শরীফ করা সুন্নত হওয়ার অকাট্য প্রমাণ
২৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছাহিবুল মি’রাজ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মি’রাজ শরীফ- বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে উপলব্ধির ব্যর্থ প্রয়াস সম্পর্কে কিছু কথা (২)
২৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছাহিবে কা’বা কাওসাইনে আও আদনা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযীমুশ শান মি’রাজ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক (৬)
২৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদা-মর্তবা ও ফযীলত মুবারক প্রসঙ্গে (৩৫)
২৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)