‘শাজরা’ ও ‘সিলসিলা’ দুটি শব্দই আরবী। এর আভিধানিক অর্থ যথাক্রমে বৃক্ষ (গাছ) ও শিকল। আর ইসলামী পরিভাষায় এর অর্থ মাশায়িখে তরীক্বত উনাদের মুবারক নামসমূহের তরতীব; যা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর্যন্ত পৌঁছেছে।
একজন মুরীদের জন্য তার মুর্শিদ ক্বিবলা উনার “শাজরা শরীফ বা সিলসিলা” সম্বন্ধে অবগত হওয়া অবশ্য কর্তব্য।
মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী হযরত কারামত আলী জৌনপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘মুরাদুল মুরীদীন’ কিতাবে এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, “যে ব্যক্তি মুরীদ হয়েও তার মুর্শিদ ক্বিবলা উনার বাকি অংশ পড়ুন...
যামানার মূল নায়িবে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিসবত ব্যতীত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক রাখার দাবি বাতুলতার নামান্তর:
পবিত্র ইলমে তাছাওউফ উনার মূল বিষয় হচ্ছে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মত মুবারক অনুযায়ী হওয়া, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথ মুবারক অনুযায়ী হওয়া।
যেহেতু খ বাকি অংশ পড়ুন...
হক্ব কোন মুর্শিদ ক্বিবলা বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়ার পরও বিশেষ কিছু কারণে মুর্শিদ পরিবর্তন করা ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।
এক. মুরীদ তাকমীলে অর্থাৎ পূর্ণতায় পৌঁছার পূর্বে যদি স্বীয় মুর্শিদ ইন্তিকাল করেন, তখন পূর্ণতায় পৌঁছার জন্য আরেকজন হক্কানী মুর্শিদ উনার নিকট বাইয়াত হতে হবে।
দুই. মুর্শিদ যদি এমন দূর দেশে থাকেন, যাঁর সাথে কোনো প্রকার সাক্ষাৎ ও যোগাযোগ করা সম্ভব না হয় এমনকি চিঠি-পত্রের মাধ্যমেও যোগাযোগ সম্ভব না হয়, তাহলে উনাকে পরিবর্তন করে আরেকজন হক্কানী মুর্শিদ উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করতে হবে।
তিন. খালি বাকি অংশ পড়ুন...
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে-
عن حضرت بهذ بن حكيم عن ابيه عن جده رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من استقبل العلماء فقد استقبلنى ومن زار العلماء فقد زارنى ومن جالس العماء فقد جالسنى ومن جالسنى فكانما جالس ربى وفى رواية اخرى من زار عالما فكانما زارنى ومن زارنى فكانما زار الله ومن زار الله فقد غفر له.
অর্থ: “হযরত বাহয ইবনে হাকীম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতা থেকে, উনার পিতা উনার দাদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি উলা বাকি অংশ পড়ুন...
কিতাবে আরো একটি ওয়াক্বিয়া উল্লেখ করা হয়- মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী চীশতিয়া খান্দান উনার বিশিষ্ট বুযূর্গ, হযরত বাবা ফরীদুদ্দীন মাসউদ গঞ্জে শকর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, আল্লাহওয়ালা উনাদের ছোহবত মুবারক উনার কতটুকু ফায়দা রয়েছে। তিনি বলেন, হাজ্জাজ বিন ইউসুফ যে ব্যক্তি কাট্টা যালিম ছিলো। সে তার যামানার ইমাম, মুজতাহিদ, আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অনেকের উপর যুলুম করেছে। যেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সকলে মনে মনে ধারণা করেছিলেন যে, হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ইন্তিকাল করলে সরাসরি জাহান্নামের অতল গহ্বরে তলিয়ে বাকি অংশ পড়ুন...
মুরীদ বা সালিকের জন্য পবিত্র আদব-কায়দা উনার প্রতি খেয়াল রাখা অবশ্য কর্তব্য। পবিত্র আদব অর্থ স্বাভাবিকতা। অর্থাৎ যা স্বাভাবিক তাই পবিত্র আদব। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে বলা হয় ‘ফিতরাত’ বা স্বাভাবিকতার দ্বীন। অর্থাৎ অন্য ভাষায় পবিত্র দ্বীন ইসলাম পবিত্র আদব উনারই দ্বীন।
অপরদিকে পবিত্র তরীক্বত সম্পর্কে বলা হয়েছে যে-
اَلطَّرِيْقَةُ كُلُّهٗ اَدَبٌ
অর্থ: “পবিত্র তরীক্বত উনার সবটুকুই আদব। ” (মাকতুবাত শরীফ, মাদারিজুস সালিকীন)
আরো বলা হয়েছে যে-
اَلتَّصَوُّفُ كُلُّهٗ اَدَبٌ
অর্থ: “পবিত্র তাছাওউফ সম্পূর্ণই আদবের অন্তর্ভুক্ত। ” (মাকতুবাত শরীফ, মাদা বাকি অংশ পড়ুন...
রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, একদিন আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাওয়ারির পিছনে বসা ছিলাম। তখন তিনি আমাকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন- হে প্রিয় বৎস! মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ নিষেধসমূহ যথাযথভাবে মেনে চলবেন, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনিই আপনাকে হিফাযত (সংরক্ষণ) করবেন। মহান আল্লাহ পাক উনার হক্ব আদায় করবেন তাহলে আপনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে সবসময় সামনে পাবেন। যখন কোনকিছুর প্রয়োজন দেখা দেবে, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটেই চাইবে বাকি অংশ পড়ুন...
অধিক ইবাদত করেছো বলেও অহংকার করো না। কারণ, ইবলিস ৬ লক্ষ বছর ইবাদত-বন্দেগী করেছিলো। ভেবে দেখো তার কি পরিণতি হয়েছিলো। অধিক ইলিম শিক্ষা করেছো বলেও অহংকার-গর্বে ফেটে পড়ো না। কেননা বালয়াম বিন বাউরা এতো ইলিম শিক্ষা করেছিলো যে, যুগশ্রেষ্ঠ ১০ হাজার আলিম তার কাছে তা’লীম নিতো। সে ছিলো মুস্তাজাবুদ দাওয়াত। সে যা দোয়া করতো মহান আল্লাহ পাক তিনি তাই কবুল করতেন। ৩০০ বছর সাধনা করে ‘ইসমে আ’যম’ আয়ত্ব করেছিলো। অথচ তার নিন্দায় কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “সে কুকুরের ন্যায়। কুকুরের উপর বোঝা চাপিয়ে দিলে হাঁপাতে থাকে। আর না চ বাকি অংশ পড়ুন...
যেটা আফদ্বালুল আউলিয়া হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন-
المكتوب نصف الملاقة
অর্থাৎ “চিঠি হচ্ছে অর্ধেক সাক্ষাৎ। ”
একবার উনার এক মুরীদ উনাকে চিঠি লিখেছিলেন। হে আমার শায়েখ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি তাগিদ করেছেন আপনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার জন্য। কিন্তু আমার পক্ষে তো সেভাবে ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করা সম্ভব হচ্ছে না। তাহলে আমি কি করবো? তখন হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছিলেন, “আমার যে চিঠিটা তোমার কাছে রয়েছে সেটা তুমি পাঠ করো। সে চিঠি পাঠ করলেই আমার অর্ধেক ছ বাকি অংশ পড়ুন...












