‘ই’জায শরীফে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম
, ০৯ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ৩০ ছানী ‘আশার, ১৩৯০ শামসী সন , ৩০ মে, ২০২৩ খ্রি:, ১৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে কারো কোনো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।’ (দায়লামী শরীফ)
কাজেই, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে আলাদা পরিভাষা মুবারক দ্বারা সম্বোধন করা আবশ্যক এবং আদব উনার অন্তর্ভুক্ত। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাছ্ছুল খাছ হাক্বীক্বী ক্বায়িম-মাক্বাম।
তাই উনাদের থেকে প্রকাশিত অলৌকিক বা বিশেষ ঘটনা মুবারকসমূহকে ‘কারামত’ না বলে, ‘ই’জায শরীফ’ বলতে হবে।
একজন পীর বোন যিনি মাঝে মাঝে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক ছোহবত ইখতিয়ার করেন, উনার উপর প্রায় ৫/৬ বছর আগে থেকেই দুষ্ট জ্বিনের প্রভাব ছিল। সে কখনো দূর থেকে কখনো কাছ থেকে ভয় দেখাতো। কিন্তু, মারাত্মক কোন ক্ষতি না করায় পীরবোন বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেননি। দুই বছর পূর্বে উনার বিবাহ হয়। বিবাহের পর পরই উনার সমস্যা বেড়ে যায়। যেমন, রাতে ঘুমের মধ্যে ভয় পাওয়া, ঘুমের ঘোরে উঠে বারান্দায় চলে যাওয়া, ঘুমে বিভিন্ন দুঃস্বপ্ন দেখা, সজাগ থাকা অবস্থায়ও কিছু দেখতে পাওয়া, একা একা ঘরে থাকতে পছন্দ করা, অন্ধকার ঘরে থাকা, অতিরিক্ত বদ মেজাজি হয়ে ওঠা ইত্যাদি। অর্থাৎ বিবাহের পরেই স্বাভাবিক জীবনে অনেক অস্বাভাবিক আচরণ ফুটে ওঠে। যা নিয়ে উনার পরিবারের সকলেই খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন। এক পীরবোনের নিকট তিনি আরবী পড়তেন, বয়স্কা যেত দুষ্ট জ্বিন আরবী পড়া সহ্য করতে পারতো না। অনেক সময় দেখা যেত, পড়ার সময় উনার মুখ বাঁকা হয়ে আসতো। কথা জড়িয়ে জড়িয়ে আসতো। এমনকি, যে পীর বোন আরবী পড়াতেন; জ্বীন তাকেও ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে কিন্তু সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার উছীলায় মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ পীর বোনকে কুদরতিভাবে হিফাযত করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
পরবর্তীতে যখন সমস্যা দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছিল তখন তিনি একজন পীর বোনের পরামর্শে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক ছোহবতে এসে সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি তেল, পানি, কালোজিরা নিয়ে আসতে বলেন এবং সেগুলোতে ফুঁ মুবারক দিয়ে পড়িয়ে দেন, সাথে একটি তাবীজ মুবারকও দেন। আর নির্দেশ মুবারক দেন, “একাধারে ৪০ দিন গোসলের পূর্বে পড়া তেল মালিশ করতে হবে, গোসলের পানির সাথে প্রতিদিন পড়া পানি মিশিয়ে গোসল করবে, নিয়মিত ইশা ও ফজর বা’দ দুরূদ শরীফ পাঠ করবে, সর্বদা পাছ-আনফাছ যিকির তথা শ্বাস-প্রশ্বাসের যিকির করবে, চুল ছেড়ে মাথায় কাপড় ছাড়া থাকবেনা, একা একা ঘরে থাকবেনা, এই তাবীজটি সর্বদা সাথে (গায়ে) রাখবে। এই নিয়মে একাধারা ৪০ দিন চলবে; তাহলে ইনশাআল্লাহ ঠিক হয়ে যাবে। যদি এক দিনও ছুটে যায়; তাহলে পুনরায় নতুন করে গণনা শুরু করতে হবে।”
উক্ত পীরবোন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার পরামর্শ মুবারক অনুযায়ী চলতে থাকেন। আমল করার দিনগুলোতে দুষ্ট জ্বিন কাছে আসতে পারতো না, তবে দূর থেকে ভয় দেখাতো। এ বিষয়টি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে জানালে তিনি বলেন, “এই জ্বিন অনেক দিন আগে থেকেই তোমার সাথে আছে। তাই ছাড়তে সময় লাগবে। সহজেই ছাড়তে চাইবে না। আর বাইয়াত গ্রহণ করার পাশাপাশি আমলগুলো নিয়মিত যথাযথভাবে করতে পারলেই তার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। আর তুমি যেহেতু এখন আমল করছো তাই তোমার কাছে আসতে পারছেনা, দূর থেকে ভয় দেখাচ্ছে।” মুবারক নির্দেশ মোতাবেক তিনি নিয়মিত আমলগুলো করতে থাকেন। এভাবে, ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থতা লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এর কিছুদিন পরে তিনি ঘুমের মধ্যে দুষ্ট জ্বিনকে স্বপ্নে দেখেন। অত্যন্ত কালো এবং ভয়ঙ্কর ছূরতে দেখতে পান। তিনি যে বিছানায় ঘুমাতেন; সেখানে পাশেই একটি জানালা ছিল। জ্বিনটি সেই জানালা দিয়ে উনার রুমে ঢুকে পড়ে এবং রুমে ঢুকতেই সেটা সাপে পরিণত হয়ে যায়। এরপরে সাপটি ধীরে ধীরে উনার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। তখন তিনি খুব ভয় পেয়ে যান এবং সেই মুহূর্তে কি করবেন তা বুঝতে পারছিলেন না। হঠাৎ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার কথা স্মরণ হয়, সাথে সাথেই তিনি উনাকে ডাকতে থাকেন। এরপর তিনি দেখতে পান, সাপটি উনার কাছাকাছি এসে ফণা তুলে নিজে নিজেই মরে যায়। এ ঘটনা বর্ণনা করে উক্ত পীরবোন বলেন, “এটি মূলত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার খাছ ‘ই’জায মুবারক। কারণ, আমি দীর্ঘদিন যাবত এ সমস্যার সম্মুখীন ছিলাম আর উনার কাছে আসার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই উনার নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী চলার কারণে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাই। উনার দোয়া মুবারক, ফুঁ মুবারক এবং উনার দেয়া নির্দেশ মোতাবেক চলার পরে জ্বিন আর আমাকে বিরক্ত করেনি। তাছাড়া আমি উনার ইলমে গইব দেখে খুব অবাক হই। কারণ আমি যখন উনার নিকট আমার ঘটনা বলা শুরু করি সাথে সাথেই তিনি আমার সাথে পূর্বে যা ঘটেছে এবং পরবর্তীতে যা ঘটতে পারে তা নিজেই বলে দিয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানা হযরত উম্মিল উমাম আলাইহাস সালাম!
-ত্বলায়াল বুশরা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফের বিশ্বে নারীরা শুধু কি এখন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে?
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একজন দ্বীনদার পরহেযগার আল্লাহওয়ালী মহিলা উনার পর্দা পালনের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ মহিলা জামাত নাজায়িজ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শৈশবকাল থেকেই সন্তানকে দ্বীনদার হওয়ার শিক্ষা দান করতে হবে
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিতা মহিলা আউলিয়া-ই কিরাম উনাদের পরিচিতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বচক্ষে দেখা কিছু কথা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পারিবারিক তা’লীমের গুরুত্ব ও তারতীব
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ : মেথি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খাবার বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের প্রথম মাস
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে মু’মীনদের জীবন গড়ে তোলা দায়িত্ব-কর্তব্য
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)