হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বদ মাযহাব, বদ আক্বীদা ও বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (২০)
, ০৫ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ১১ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২৭ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ফযীলত ও মর্যাদা:
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ এতই বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত ও মর্যাদা-মর্তবার অধিকারী যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে শ্রেষ্ঠ উম্মত বলেছেন। যেমন- পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “আপনারাই শ্রেষ্ঠ উম্মত। মানবজাতির কল্যাণে আপনাদের আবির্ভাব। আপনারা সৎকাজের আদেশ দেন, অসৎকাজে নিষেধ করেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার উপর ঈমান রাখেন। ” (সূরা আলে ইমরান শরীফ-১১০)
“তাফসীরে মাযহারীতে” উক্ত আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, “আপনারাই শ্রেষ্ঠ উম্মত বলতে খাছ করে সরাসরি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদেরকে বুঝানো হয়েছে। ”
“তাফসীরে মাযহারীতে” উক্ত আয়াত শরীফের শানে নুযূল সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে যে, মালিক ইবনে জঈফ এবং ওহাব বিন ইয়াহুদ নামের দু’জন ইহুদী ছিল। তারা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত মুয়ায বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত সালিম বিন মাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত আবূ হুজাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললো, আমরা আপনাদের চেয়ে উত্তম এবং আমাদের ধর্ম আপনাদের দ্বীন অপেক্ষা উত্তম। ইহুদীদের এ কথার জবাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে জানিয়ে দিলেন যে, সকল উম্মতের মধ্যে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণই হলেন সর্বাধিক ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা ও সম্মানের অধিকারী।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “আর আমি আপনাদেরকে মধ্যপন্থী উম্মত হিসেবে মনোনীত করেছি। (যাঁরা প্রত্যেক দিক থেকে খুবই মধ্যম পন্থায় রয়েছেন) যেন আপনারা মানবজাতির জন্য সাক্ষী হতে পারেন। ” (সূরা বাক্বারা শরীফ-১৪৩)
উল্লিখিত আয়াত শরীফে মধ্যপন্থী উম্মত বলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে বুঝানো হয়েছে।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ নেক আমল, পুতঃপবিত্র চরিত্র মুবারক এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর নিঃশর্তে আনুগত্য প্রকাশের মাধ্যমে যে বিশাল মর্যাদার অধিকারী হয়েছেন তার একটি মূল কারণ হলো- হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার ঐকান্তিক ইচ্ছা ও প্রত্যক্ষ মনোনয়ন। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আপনি বলুন, সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। আর সালাম (শান্তি) ঐ সকল লোকদের (অর্থাৎ ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের) প্রতি, যাঁদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি মনোনীত করেছেন। (সূরা নমল শরীফ-৫৯)
অতএব উপরোক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা যে বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা ও সম্মানের অধিকারী হয়েছেন এটা সম্পূর্ণই মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা উনাদেরকে খাছভাবে ফযল-করম ও মনোনয়ন দান করার কারণেই। সুতরাং যদি সেটাই হয়ে থাকে, তাহলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করার অর্থই হলো মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরই সমালোচনা করা। নাঊযুবিল্লাহ!
আর যে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সমালোচনা করলো সে কাট্টা কাফির, চির জাহান্নামী। নাঊযুবিল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৯)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক (৪)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (১)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)