সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩২)
(বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)
, ২৯ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৫ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ০৩ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১৮ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র হারামাইন শরীফাইন যিয়ারত:
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অত্যন্ত আদব-ইহতিরাম, গভীর মুহব্বত, তা’যীম-তাকরীমের সাথে পবিত্র কা’বা শরীফে হাজির হলেন। মাহবূব মুরীদ, মাশুকে মাওলা, সাইয়্যিদুনা হযরত কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ উভয়ে পবিত্র উমরা পালন করলেন। পবিত্র হজ্জের পূর্ব পর্যন্ত সম্মানিত নামাযের সময়গুলো ব্যতীত সব সময়ে মহান আল্লাহ পাক উনার স্মরণে মুরাকাবা, মুশাহাদায় নিমগ্ন থাকতেন।
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একদিন গায়েবী (অদৃশ্য) আওয়াজ শুনতে পেলেন, হে মুঈনুদ্দীন! রহমতুল্লাহি আলাইহি আমি আপনার উপর খুবই সন্তুষ্ট। আমি আপনার প্রাপ্য নিয়ামতরাজি পূর্ণ করে দিলাম। আপনার যা কিছু চাওয়ার আছে চাইতে পারেন। আমি আপনাকে সব নিয়ামতই দিবো। আপনার কোনো আরজি অপূর্ণ থাকবে না।
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই অদৃশ্য আওয়াজ শুনতে পেয়ে ইতমিনান হলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফে বেশুমার শুকরিয়া আদায় করলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে, আবেগে আপ্লুত হয়ে দুহাত মুবারক তুলে প্রার্থনা করলেন, হে বারে ইলাহী! মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন, আমার সিলসিলায় যারা দাখিল হয়েছে এবং হবে তাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিন। আপনার সম্মানিত মা’রিফাত- মুহব্বত মুবারক দান করুন।
সাথে সাথে গায়েবী (অদৃশ্য) আওয়াজ আসলো-
غفرت لك ولمن توصل بك بواسطة او بغير واسطة الى يوم القيامة
অর্থ: “আপনাকে ক্ষমা করেছি। কোনো মধ্যস্থায় হোক কিংবা বিনা মধ্যস্থতায় হোক ক্বিয়ামত পর্যন্ত যারা আপনাকে উসীলা বানাবে তথা আপনার সম্মানিত তরীক্বা মুবারক গ্রহণ করবে, তাদের সবাইকে ক্ষমা করেছি। আর আমার পবিত্র মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারক তাদেরকে দান করেছি। ” সুবহনাল্লাহ!
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ শুকরিয়া আদায় করলেন। পবিত্র হজ্জের সময় নিকটবর্তী হলো। তিনি উনার মাহবুব মুরীদ হযরত খাজা কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে সাথে নিয়ে ইহরাম বাঁধলেন। পবিত্র হজ্জের সকল কার্যাদি সুসম্পন্ন করতঃ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে পবিত্র দীদার মুবারক পাওয়ার জন্য পবিত্র মদীনা শরীফ উনার দিকে রওয়ানা হলেন।
তিনি প্রথমে পবিত্র মসজিদে কুবাতে গিয়ে অবস্থান গ্রহণ করলেন। সেখানে আদব-ইহতিরাম ও মুহব্বতের সাথে কয়েকদিন অবস্থান করলেন। উনার ইচ্ছা ছিল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারকের ইন্তিজার। নির্দেশ মুবারক পেলে পবিত্র রওযা শরীফে হাজির হবেন। আর এদিকে তো পবিত্র যিয়ারত মুবারক লাভের জন্য ইশকের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলতেছিল। অপেক্ষার দিন শেষ হলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মসজিদে নববী শরীফে আসার জন্য নির্দেশ মুবারক দান করলেন। তিনি একটুও দেরি করলেন না। সাথে সাথে মসজিদে নববী শরীফে হাজির হলেন। সালাম দিলেন। মনের কামনা-বাসনা নিবেদন করলেন। (খাজা গরীবে নেওয়াজ পূর্ণাঙ্গ জীবনী-১০৭)
কোনো কোনো গ্রন্থকার লিখেছেন, এই সফরকালে সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মসজিদে নববী শরীফে তিন মাস পর্যন্ত অত্যন্ত আদব-ইহতিরাম, গভীর মুহব্বত ও তা’যীম-তাকরীমের সাথে রিয়াদ্বত-মাশাক্কাতে অতিবাহিত করেছেন। আর নির্ধারিত সময়ে পবিত্র মদীনা শরীফের অধিবাসী এবং অন্যান্য দেশ হতে আগত মুরীদ, মু’তাক্বিদ, আশিকীন-মুহিব্বীনদেরকে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দর্স দিতেন। পবিত্র হাদীছ শরীফে উনার গভীর জ্ঞান, অতুলনীয় দক্ষতা এবং রূহানিয়াতের কথা অতি অল্পসময়ে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়লো। ফলে ইরাক, ইরানসহ বিভিন্ন স্থান হতে ইলিম পিপাসু এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পবিত্র মা’রিফাত, মুহব্বত, রেযামন্দি, সন্তুষ্টি তালাশকারীগণ উনার দর্সে সমবেত হতে থাকেন। উনার সুমধুর কণ্ঠে পবিত্র হাদীছ শরীফের অভূতপূর্ব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ শুনে, এবং নূরানী চেহারা মুবারক দেখে বিমোহিত ও আকৃষ্ট হয়ে উনার কাছে বাইয়াত হন। উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ইশকের সুধা পান করে ধন্য হন। (চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)