সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ্, মালিকুল কায়িনাত, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক
, ১৮ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৭ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ২২ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম মুবারক- সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আয়িশাহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ভাগিনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত নাম মুবরক অনুযায়ী উনাকে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আব্দিল্লাহ আলাইহাস সালাম’ সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক হাদিয়া করা হয়। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আত্ব ত্বাহিরাহ, আত্ব ত্বইয়্যিবাহ্, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আছ ছিদ্দীক্বাহ, হুমায়রা, মালিকুল জান্নাহ, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ, মালিকুল কায়িনাত ইত্যাদি উনার সম্মানিত ও পবিত্র লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত পিতা- আফদ্বলুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিতা মাতা- সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রুমান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ৪র্থ বৎসর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৪ঠা শাওওয়াল শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন সম্মানিত ও পবিত্র কুরাইশ বংশের বনী তামীম গোত্রের। তিনি মহাসম্মানিত পিতা উনার দিক দিয়ে ঊর্ধ্বতন ৮ম পুরুষ এবং মহাসম্মানিতা মাতা উনার দিক দিয়ে ঊর্ধ্বতন ৯ম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসব মুবারক উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন,
اٌرِيْتُكِ فِى الْمَنَامِ ثَلَاثَ لَيَالٍ يَجِيءُ بِكِ الْمَلَكُ فِي سَرَقَةٍ مِنْ حَرِيْرٍ فَقَالَ لِىْ: هٰذِهِ امْرَاَتُكَ فَكَشَفْتُ عَنْ وَجْهِكِ الثَّوْبَ فَإِذَا أَنْتِ هِىَ. فَقُلْتُ: إِنْ يَكُنْ هٰذَا مِنْ عِنْدِ اللهِ يُمْضِ
অর্থ: “আপনাকে তিন রাতে স্বপ্নযোগে আমাকে দেখানো হয়েছে। একজন সম্মানিত হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি আপনাকে রেশমী কাপড় মুবারক-এ জড়িয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ নিয়ে আসেন এবং বলেন, ইনি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যাওযাতুম মুকাররমাহ অর্থাৎ ইনি হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম। তখন আমি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহ্মাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চেহারা মুবারক) থেকে কাপড় সরিয়ে দেখলাম, আপনিই। অতঃপর আমি বললাম, তা যদি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই পূর্ণ হবে।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
অপর বর্ণনায় রয়েছেন,
هٰذِهٖ زَوْجَتُكَ فِى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ
অর্থ: “তিনি দুনিয়াতে ও আখিরাতে আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যাওযাতুম মুকাররমাহ অর্থাৎ ইনি হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১০ম বৎসর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২১শে শাওওয়াল শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান আক্বদ মুবারক সম্পন্ন মুবারক করেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪৯ বছর ৭ মাস ৯ দিন আর উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৬ বছর ১৭ দিন। সুবহানাল্লাহ!
আর ১লা হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২১শে শাওওয়াল শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ তুলে নেন, যা উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ দিবস হিসেবে পরিচিত। সুবহানাল্লাহ! তখন উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৯ বছর ১৭ দিন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক ছিলেন ৫০০ দিরহাম। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২১শে শাওওয়াল শরীফ উনাকে ‘আন্তর্জাতিক বাল্যবিবাহ মুবারক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! এই মুবারক দিনটি কুল-কায়িনাতের জন্য বিশেষ রহমত, বরকত, সাকীনা ও নাজাত লাভের কারণ। পাশাপাশি ঈদ বা খুশি প্রকাশের বিশেষ দিন। এ মুবারক দিন উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে মাহফিলের আয়োজন করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সাওয়ানেহ উমরী মুবারক আলোচনা করা এবং সেখান থেকে ইবরত-নছীহত হাছিল করা সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া মুতাবিক বাল্যবিবাহ খাছ সুন্নত আর বিরোধীতা করা কাট্টা কুফরী।
উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
كُنْتُ اَنَامُ بَيْنَ يَدَىْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرِجْلَاىَ فِىْ قِبْلَتِهٖ فَاِذَا سَجَدَ غَمَزَنِـىْ فَقَبَضْتُّ رِجْلَىَّ وَاِذَا قَامَ بَسَطْـتُّهُمَا
অর্থ: “আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে ঘুমাতাম আর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) দু’খানা উনার সম্মানিত ক্বিবলা মুবারক বরাবর থাকতো। তাই তিনি যখন (রাতে সম্মানিত নামায মুবারক পড়ার সময়) সম্মানিত সিজদা মুবারক করতেন, তখন তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দিয়ে আমার সম্মানিত ও পবিত্র ক্বদম মুবারক সরিয়ে দিতেন। আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) সঙ্কোচিত করে নিতাম। আর যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ক্বিয়াম মুবারক করতেন (সম্মানিত নামায মুবারক-এ দাঁড়াতেন), তখন আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) প্রসারিত করতাম।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুয়াত্ত্বা শরীফ, নাসায়ী শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল মুহব্বত মুবারক, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক উনার বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছেন। সুবহানাল্লাহ! যেখানে সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা বেকারার-পেরেশান কিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া যায়, কিভাবে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি মুবারক) নেয়া যায়, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখ্র মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি মুবারক) নেয়া যায়, আর সেখানে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে সম্মানিত নামায মুবারক আদায় করার সময় উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) নিজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দ্বারা সরিয়ে দিয়ে সম্মানিত সিজদা মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক কতো বেমেছাল তা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
বনী মুছত্বলিক্বের জিহাদ থেকে প্রত্যাবর্তনের সময় আফদ্বলুন নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক উনার খিলাফ মিথ্যা অপবাদ রটনা করে মুনাফিক্ব সর্দার উবাই ইবনে সুলূল (যার মূল নাম: আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালূল) লা’নাতুল্লাহি আলাইহি এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা। না‘ঊযুবিল্লাহ! যা ইফকের ঘটনা হিসেবে সকলের মাঝে মশহূর। তখন স্বয়ং যিনি খ¦ালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজে ‘সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ’ উনার ১১ থেকে ২০ মোট এই ১০খানা সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ এবং পরবর্তীতে আরো ৬ খানাসহ আরো অনেক সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল মুবারক করে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের বিষয়টি সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের নিকট স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যার কোনো মেছাল বা তুলনা নেই। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
لَا تُؤْذِيْـنِـىْ فِـىْ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْـنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا اَلصِّدِيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَاِنَّ الْوَحْىَ لَـمْ يَأْتِـنِـىْ وَاَنَا فِـىْ ثَوْبِ امْرَاَةٍ اِلَّا اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْـنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا اَلصِّدِيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: “আপনারা আমাকে উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার ব্যাপারে কষ্ট দিবেন না। কেননা, একমাত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি ছাড়া আর কোনো উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে একই চাদর মুবারক-এ অবস্থানকালে আমার কাছে ওহী মুবারক নাযিল হননি।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন,
يَا بُنَيَّةُ اَلَا تُـحِبِّـيـْنَ مَا اُحِبُّ قَالَتْ بَلٰى قَالَ فَاَحِبِّـىْ هٰذِهٖ
অর্থ: “হে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত আলাইহাস সালাম, আমি যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করি, আপনিও কি উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করবেন না? তিনি বললেন, হ্যাঁ- অবশ্যই। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, তাহলে আপনি উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করুন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ, উম্মু আবীহা, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সরাসরি সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করার জন্য। সুবহানাল্লাহ! অথচ অন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “উম্মু আবীহা, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক অর্থাৎ পবিত্র নূরুল মুজাসসাম (জিস্ম) মুবারক উনার সম্মানিত নূর মুবারক অর্থাৎ পবিত্র গোশত মুবারক উনার একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাই যে ব্যক্তি উনাকে অসন্তুষ্ট করলো, সে মূলত আমাকেই অসন্তুষ্ট করলো।” নাঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! কেউ যদি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক পেতে চায়, তার জন্য ফরযে আইন হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাকে মুহব্বত মুবারক করা। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক ব্যতীত কেউ কস্মিনকালেও মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী মা’রিফাত-মহব্বত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে পারবে না।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আযহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হুদা মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাথা মুবারক) রেখে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আপনারা আমার পর সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হওয়া ব্যতীত সমস্ত প্রকার ইলম উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবেন।” সুবহানাল্লাহ!
মূলত, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার কাছ থেকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারাসহ সমস্ত কায়িনাতবাসী ইলম মুবারক অর্জন করেছেন। উনার পুরো জিন্দেগী মুবারকই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত। তবে রাবীগণ উনার থেকে মাত্র ২২১০ খানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ সংগ্রহ করতে পেরেছেন অর্থাৎ রাবীগণ উনার থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ সংগ্রহ করে নিজেদেরকে ধন্য করেছেন। সুবহনাল্লাহ!
তিনি ৫৮ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৭ই রমাদ্বান শরীফ লাইলাতুল আহাদ শরীফ সম্মানিত তারাবীহ নামায উনার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৬৬ বছর ১১ মাস ১৩ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ উনার মধ্যে অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার একমাত্র একক ও অদ্বিতীয় হাক্বীক্বী পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম হচ্ছেন- আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই কেউ যদি উনার হাক্বীক্বী মুহাব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চায়, তাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছেন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনার সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা। সুবহানা হযরত উম্মুল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহা ওয়া সাল্লাম!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার নছীহত মুবারক:
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহিলাদের জামায়াতের জন্য মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (২)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৮)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শোকরগোযারী দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায় শোকর গোযার না করলে নিয়ামত বন্ধ হয়
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শোকরগোযারী দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায় শোকর গোযার না করলে নিয়ামত বন্ধ হয়
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শিরক কি? শিরক সম্পর্কে আলোচনা
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
“মানুষের পেট কবরের মাটি ছাড়া অন্য কিছু দ্বারা পূর্ণ হবে না”
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পুরুষদের ন্যায় মহিলাদেরও দ্বীনী তা’লীম গ্রহণ করা ফরযে আইন
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
জন্মের তৃতীয় মাসে যে বিষয়গুলো লক্ষণীয়
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জমিনে ফিতনা-ফাসাদের বড় একটা কারণ বেপর্দা-বেহায়া নারী
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)