সত্য স্বপ্ন মুবারক বিশ্বাস করা ফরয এবং অবিশ্বাস করা কুফরী
, ০৫ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৬ হাদি ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ২৬ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রি:, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
(২) হযরত ইমাম বূছীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এবং উনার রচিত বিশ্বখ্যাত কবিতা শরীফ ‘ক্বাছীদায়ে বুরদাহ্ শরীফ’ সম্পর্কে জানে না, পৃথিবীর বুকে এরূপ লোকের সংখ্যা খুব কমই রয়েছে। তিনি ছিলেন সর্বজনমান্য বিশ্বখ্যাত ইমাম, মুজতাহিদ ও আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া তিনি ছিলেন অনেক বড় একজন কবি। তিনি জীবনে অনেক কবিতা রচনা করেছেন। তবে ‘ক্বাছীদায়ে বুরদাহ্ শরীফ’ নামক কবিতা শরীফই উনাকে অমর করে রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম বূছীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একসময় পক্ষাঘাতে আক্রান্ত এবং সম্পূর্ণ অচল হয়ে বিছানায় পড়ে থাকেন। অনেক চিকিৎসার পরেও তিনি আরোগ্য লাভ করেননি। এ সময় তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করে একখানা ক্বাছীদাহ্ শরীফ লিখেন এবং এই ক্বাছীদাহ্ শরীফ উনার উছিলায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে রোগমুক্তির প্রার্থনা করার নিয়ত করেন। ক্বাছীদাহ্ শরীফ রচনা সমাপ্ত হলে তিনি এক জুমু‘আহ্ শরীফ রাতে পাক-পবিত্র হয়ে এক নির্জন ঘরে প্রবেশ করেন এবং গভীর মনোযোগের সাথে মুহব্বতে গরক্ব হয়ে উক্ত ক্বাছীদাহ্ শরীফখানা আবৃত্তি করতে থাকেন। আবৃত্তি করতে করতে তিনি একসময় ঘুমিয়ে পড়েন। এ অবস্থায় তিনি স্বপ্নে দেখেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেখানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছেন এবং সমগ্র ঘর নূরে নূরানী হয়ে গেছে । হযরত ইমাম বূছীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন এবং স্বপ্নেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ক্বাছীদাহ্ শরীফখানা পাঠ করে শুনাতে থাকেন। আবৃত্তি করতে করতে যখন ক্বাছীদাহ্ শরীফ উনার শেষের দিকের একখানা ছন্দ মুবারক পর্যন্ত পৌঁছান যেখানে লেখা ছিলেন- ‘كَمْ اَبْرَاَتْ وَصِبًا بِاللَّمْسِ رَاحَتُهٗ (কাম আবরাআত ওয়াছিবান বিল্লামসি রাহাতুহূ) অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র স্পর্শ মুবারক কত চির রুগ্ন ব্যক্তিকে নিরাময় করেছেন’। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দিয়ে হযরত ইমাম বূছীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সমগ্র শরীর মুবারক মুছে দেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যন্ত খুশী হয়ে নিজের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুজাসসাম মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জিসিম বা শরীর মুবারক) উনার নকশাদার ইয়ামানী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চাদর মুবারক দিয়ে হযরত ইমাম বূছীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ঢেকে দেন। তারপর উনার স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়। তিনি ঘুম থেকে উঠে দেখেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অদৃশ্য হয়ে গেছেন। আর হযরত ইমাম বূছীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্পূর্ণ রোগমুক্ত এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রদত্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চাদর মুবারকখানা উনার গায়ে জড়ানো। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করলেন।
হযরত ইমাম বূছীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সকালে উঠে আমি বাড়ি থেকে বের হলাম। আমার স্বপ্নের ব্যাপারে আমি কাউকে কিছু বলিনি। পথিমধ্যে কয়েকজন বুযূর্গ ব্যক্তি উনাদের সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো। উনাদের মধ্যে একজন বুযূর্গ ব্যক্তি আমাকে বললেন- ‘আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করে যেই ক্বাছীদাহ্ শরীফ রচনা করেছেন, আমাকে তা দিন।’ হযরত ইমাম বূছীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন- ‘আমি তো এই বিষয়ে অনেক ক্বাছীদাহ্ শরীফ লিখেছি। আপনি কোন ক্বাছীদাহ্ শরীফখানা চাচ্ছেন? বুযূর্গ ব্যক্তি ক্বাছীদায়ে বুরদাহ্ শরীফ উনার প্রথম ছন্দ মুবারকখানা আবৃত্তি করে বললেন- এই ক্বাছীদাহ্ শরীফখানা।
হযরত ইমাম বূছীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আশ্চর্য হয়ে বললেন- ‘আপনি এই ক্বাছীদাহ্ শরীফখানা কোথায় শুনলেন? আমি তো এই ক্বাছীদাহ্ শরীফখানা এখনো কাউকে বলিনি।’ বুযূর্গ ব্যক্তি বললেন- ‘মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! গতরাতে আপনি যখন এই ক্বাছীদাহ্ শরীফখানা স্বপ্নে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আবৃত্তি করে শুনাচ্ছিলেন, তখন আমি সেখানে উপস্থিত থেকে তা শুনছিলাম। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি তখনই এই ক্বাছীদাহ্ শরীফখানা উনার বিশেষ বান্দাগণ উনাদের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন।’
এভাবে অতিঅল্প সময়ের মধ্যে এই ক্বাছীদাহ্ শরীফখানা এবং সম্মানিত কারামত মুবারক উনার সংবাদ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েন। তখন থেকে আজ পর্যন্ত সারা পৃথিবীতে অত্যন্ত মুহব্বত এবং সম্মানের সাথে এই ক্বাছীদাহ্ শরীফখানা পঠিত এবং সমাদৃত হয়ে আসছেন। বিভিন্ন ভাষায় রচনা আকারে এবং কবিতা আকারে এই ক্বাছীদাহ্ শরীফ উনার অনেক অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছেন।
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক বলার সময় নূর মুবারক বিচ্ছুরিত হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত ত্বীব মুবারক থেকে নূর মুবারক সৃষ্টি হওয়া
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বুলন্দী শান মুবারক সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট কতিপয় আয়াত শরীফ (১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক ক্বায়িম হওয়ার অর্থই হলো দুনিয়ার যমীন ইনছাফ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরুল মুজাসসাম মুবারক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক উনার নূরের আলোতে পুরো পবিত্র হুজরা শরীফ আলোকিত হওয়া
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বর্তমান সময়টা হচ্ছে সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার নির্দিষ্ট সময়
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৫)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত যায়িদ বিন হারেছাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বেমেছাল মুহব্বত মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুধ ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত মাসরূহ্ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৪)
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার গুরুত্ব এবং আবশ্যকতা
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলেন না (৩)
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)