মুসলিম ঐতিহ্যের দেশ মালি
, ১২ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২১ মে, ২০২৪ খ্রি:, ০৭ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পাঁচ মিশালী
১৪ শতাব্দীতে ইউরোপে যখন দুর্ভিক্ষ আর খাদ্যাভাবে লাখ লাখ মানুষ মারা যায়, তখন খাবারের অভাব কি মালির লোকজন তা জানত না। আর ইতিহাসে গত এক হাজার বছরের মধ্যে সবচেয়ে ধনবান যে ব্যক্তি ছিলেন মালির মুসলিম রাজা ‘মানসা মুসা।’
উপনিবেশ মালির এই দুরবস্থার জন্য দায়ী। এক সময়কার বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্স ১৯০৪ সালে মালি দখল করে নেয়। পরে ১৯৬০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ফরাসি উপনিবেশের কবল থেকে স্বাধীনতা লাভ করে মালি। এরপরও ফ্রান্স মালির আর্থ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রভাব বজায় রাখে। বিশেষ করে ইউরেনিয়াম ও স্বর্ণসহ অন্যান্য খনিজসম্পদের ভা-ারের সবই যায় ফ্রান্সের গোলায়। ‘স্বাধীনতা’ লাভের পরও নানা চুক্তির আওতায় মোট জাতীয় সম্পদের ৮৫ ভাগ যায় প্যারিসে। আর ১৫ ভাগ থাকে মালির জনগণের জন্য। যদি কেউ বিদ্রোহ করে? তবে ফ্রান্সের সেনাবাহিনী চলে আসে ‘সন্ত্রাসবাদ দমন’ করতে! এই হলো রাজনীতি আর উপনিবেশবাদের ফলাফল। আর মালি দরিদ্র হওয়ার কারণ। অর্থাৎ লুটেরা কাফির বাহিনী একটি মুসলিম দেশের জাতীয় সম্পদ কুক্ষিগত করে নিজেরা ধনী সাজে। মুসলমানদের সম্পদ আত্মসাৎ করে নিজেদের বিভৎস রূপ আড়াল করার অপচেষ্টা চালায়। শুধু যবন, ব্লেচ্ছ, অস্পৃষ্ট ফ্রান্সই নয়, সমগ্র কাফির বিশ্ব মুসলমানদের সমস্ত কিছু চুরি বা লুটপাট করে নিজেরা স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকার জোর দাবি করে। তারা এই আফ্রিকার মুসলিম দেশ মালি থেকেও প্রায় অর্ধশতাব্দিরও বেশী সময় ধরে শোষণ করে দরিদ্র ও দুর্ভিক্ষপ্রবণ রাষ্ট্রে পরিণত করে।
মালির রাজধানীর নাম বামাকো। ১৯৬০ সালে মালি স্বাধীনতা লাভ করে। ১২ লাখ ৪০ হাজার ১৯২ বর্গকিলোমিটার দেশের জনসংখ্যা প্রায় দুই কোটি। মালির অধিকাংশ মানুষ মুসলমান।
১৯৬০ সালে স্বাধীন হলেও দেশটি স্বৈরশাসনের কবলে পড়ে। ১৯৯১ সালে মালি স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত হয় সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। ১৯৯২ সালে অনুষ্ঠিত হয় গণতান্ত্রিক নির্বাচন। ২০১১ সাল থেকে দেশটিতে জাতিগত বিদ্রোহ দেখা দেয়। পরে নানা ঘটনা পরিক্রমা শেষে ২০১২ সালের ২২ মার্চ সামরিক শাসন জারি করা হয়। পরিস্থিতি তাতেও শান্ত হয়নি। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির দরুণ মালি সরকার ফ্রান্স সেনাবাহিনীর সাহায্য চায়, জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করে। বাংলাদেশ থেকেও ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে মালিতে প্রথম শান্তিরক্ষী পাঠানো হয়।
মালি মুসলিম ঐতিহ্যের দেশ। এর প্রতিটি শহরেই রয়েছে নান্দনিক মসজিদ। সব মসজিদেরই রয়েছে ঐতিহাসিক গৌরবময় অধ্যায়। যেমন মালির ডিজেনি শহরে ১২০০ থেকে ১৩০০ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে তৈরি হয়েছিল বড় মসজিদ নামে পরিচিত মাটির মসজিদটি। এটি আফ্রিকার অন্যতম নিদর্শন। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা এই শহরের মসজিদগুলো বেশ জনপ্রিয়। ইট-কাদার তৈরি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মসজিদ এটি।
মালিতে প্রতি চার জনে তিন জন বাস করেন দারিদ্র্যসীমার নিচে। গড়ে প্রতি চার জনের তিন জন অশিক্ষিত। আয়তনে বাংলাদেশের আটগুণ হলেও মালিতে বিশ্ববিদ্যালয় মাত্র একটি। কয়েকশ বছর আগে মুসলিম শাসনের সময় ছিল কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়।
আফ্রিকায় ইসলামের প্রচার-প্রসারে মালির গুরুত্ব ও অবদান অপরিসীম। এখন দরিদ্র হলেও এর ইতিহাস হারিয়ে যায়নি। পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিমদের জীবনে এই ইতিহাস এখনো জীবন্ত এবং বিশ্বে মালি যে ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছে তা আজও অব্যাহত।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বদলে যাচ্ছে রসায়নের শত বছরের পুরনো সূত্র
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাতাস থেকে সরাসরি পুষ্টি পেতে পারে মানবদেহ : গবেষণা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উৎপাদন বাড়াতে ছাঁটাই করা হয় চা গাছ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্দি-কাশি দূর করতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মধুর গুণাগুণ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সর্দি-কাশি দূর করতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মধুর গুণাগুণ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশের যে গ্রামের জনসংখ্যা চারজন!
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ডাবের পানি খেলে শরীরে কি হয়? ডাবের পানির উপকারিতা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ধানের গোলা এখন কেবলই স্মৃতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
১০ হাজার ফুট ওপর থেকেও যেভাবে শিকার দেখতে পায় ঈগল
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওজন আর রক্তচাপ কমায় বিটের রস! বাড়ায় স্মৃতিশক্তি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবালের সন্ধান মিললো প্রশান্ত মহাসাগরে
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
স্ট্রবেরি খেলে শরীরে যা ঘটে
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)