মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ কেন শুধু সৌদি আরবের খিদমত জিম্মায় থাকবে ? (১)
, ১৭ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০২ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৬ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) আপনাদের মতামত
ইতিহাস বলে, সৌদ পরিবারে আদি বাস কখনই মক্কা শরীফ বা মদীনা শরীফ নয়, এদের আদিভূমি নজদের দিরিয়া অঞ্চলে। পবিত্র মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফে নিয়মিত আক্রমণ, ধ্বংসযজ্ঞ ও লুটতরাজ চালানো এই মরুদস্যু পরিবারের পুরাতন অভ্যাস। এর আগেও ১৮০৩-০৪ সালে এরা পবিত্র মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। বহু মুসলিমকে হত্যা করে। সাহাবীগণের পবিত্র মাজার শরীফ গুড়িয়ে দেয়। এমনকি পবিত্র রওজা শরীফ উনার ছায়াদানকারী মিম্বরগুলোও এরা ভেঙে ফেলে! নাউযুবিল্লাহ। ১৮১৮ সালে উসমানীয় খলিফা এসব সৌদ কুলাঙ্গারদের গ্রেফতার করে মৃত্যুদ- দিয়েছিলো।
১৯২৫ সালে আবারও আরবের হেজাজ দখল করে নেয় সৌদ পরিবার। এরপর নিজেদের পরিবারের নাম পবিত্র হেজাজের নামের আগে জুড়ে দেয়, ফলে হেজাজ হয়ে যায় সৌদি আরব। ক্ষমতা দখলের পর তারা পবিত্র জান্নাতুল বাকি শরীফে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং হযরত সাহাবীগণের মাজার শরীফের গম্বুজগুলো বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। নাউযুবিল্লাহ। আজ থেকে ১০০ বছর আগে পবিত্র জান্নাতুল বাকী শরীফের যে দৃশ্য পাওয়া যায়, সেখানে মাজার শরীফের সুন্দর দৃশ্য দেখা যায়।
মূলত এমন মানুষের খিদমত জিম্মায় পবিত্র মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ থাকা উচিত, যারা এই দুই পবিত্র মসজিদের সম্মান মর্যাদা অনুসারে আদব বজায় রাখতে পারবে। কিন্তু সৌদ পরিবারের যে ইতিহাস পাওয়া যায়, তা পবিত্র দুই মসজিদের সাথে চরম বেয়দাবী এবং পবিত্র হারাম শরীফে রক্তপাত ও লুটতরজের ইতিহাস। সে অনুসারে তারা কিভাবে এই দুই পবিত্র স্থানের খিদমতের জিম্মা লাভ করতে পারে?
শুধু এতটুকুই নয়, সৌদি আরবের ক্ষমতা নিয়ে সৌদ পরিবারের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব হয়, তার প্রভাবে হাজীদেরকেও জীবন দিতে হয়। ২০১৫ সালে বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের স্থলে সালমান বিন আবদুল আজিজ ক্ষমতায় আসলে তাদের পরিবারের মধ্যে ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দ্ব দৃশ্যমান হয়। সেই বছরই মসজিদ আল হারামে রহস্যজনকভাবে ক্রেন ভেঙ্গে পড়লে ১১৮ জন হাজী শহীদ হন এবং ৩৯৪ জন আহত হন। এর মাত্র ২ সপ্তাহ পর হজ্জ চলাকালে পবিত্র মক্কায় যুবরাজ বিন সালমানের গাড়ি বহরের কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ হয়ে যায়, এতে ভীড়ের চাপে পদদলিত হয়ে অসংখ্য হাজী শহীদ হোন। সৌদি সরকারী হিসেবে হাজীর মৃত্যুর সংখ্যা ৭৬৯ জন দাবী করা হলেও, এপি (অ্যাসোসিয়েট প্রেস) সেই সংখ্যা ২৪১১ জন বলে হিসেব প্রকাশ করে। এতে স্পষ্ট হয়, কথিত খাদেম দাবীকরা সৌদ পরিবারের হাতে সম্মানিত হাজীরা মোটেও নিরাপদ নন।
সৌদি সরকার হজ্জ বা ওমরাহ করার জন্য প্রতি হাজী থেকে একটি নির্দ্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নেয়। সম্প্রতি এ অর্থের পরিমাণ তারা বেশ বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি বছর যে পরিমাণ লোক হজ্জ করে, তাতে হজ্জ ও ওমরাহকারীদের থেকে বিপুল পরিমাণ লাভবান হয় সৌদি সরকার। সৌদি সরকার হাজীদের থেকে অর্থ ছাড়া দিতে চায় না, এতে হাজীদের অনেক কষ্ট হয়। অথচ তারাই খেলাধূলা, নাইটক্লাব, সিনেমা হল আর কনসার্টের জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে, বিধর্মী খেলোয়াড়দের পেছনে বস্তা বস্তা টাকা অপচয় করে, যা সত্যিই দৃষ্টিকটু।
-মুহম্মদ গোলাম সামদানি।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলমানদের দমিয়ে রাখতেই ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ বুলি
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
এ সকল মুখোশধারীদের আসল পরিচয় অনেকেরই অজানা!
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
১০ ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যুব সমাজকে খেলাধুলার প্রতি ঝুঁকিয়ে দেয়া একটি ভয়াবহ চক্রান্ত
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, তাহলেই রাজধানী হবে সমস্যামুক্ত
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুলুমতন্ত্র থেকে খালিছ ইস্তিগফার-তওবা করুন
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
উপজাতিদের যেভাবে উস্কানি দিচ্ছে এনজিওগুলো
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিন্দুদের পূর্বপুরুষরাও একসময় মুসলমান ছিলো
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাবার খাবেন কোথায়?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রক্তাক্ত ইতিহাস, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জায়নবাদী ইহুদী পরিকল্পনার গোপন দস্তাবেজ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মীরা কখনোই চায়নি, এখনও চায় না মুসলমানদের উন্নতি
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)