বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
, ০১ লা জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৭ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ০৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৯ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
حب الوطن من الإيمان
“দেশের মুহব্বত সম্মানিত ঈমান উনার অঙ্গ।”সুবহানাল্লাহ!
তাই একজন মুসলমানের জন্য ঈমানী দায়িত্ব হচ্ছে- দেশের সার্বিক কল্যাণ কামনা করা এবং এজন্য কোশেশ করা।
আর এই ঈমানী দায়িত্ববোধ থেকেই মুসলমানগণ জান-মাল সমস্ত কিছু কুরবান করে দিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে বৃটিশদেরকে বিতাড়িত করেছেন। তারপর ভারতের শোষণ থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিন্তু এদেশবাসী শোষণের যাতাকল থেকে মুক্তি পায়নি। ফলে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযোদ্ধের সূচনা হয়। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু বিনিময়ে এদেশবাসী কি পেয়েছে? বৃটিশ শোষণের অবর্তমানে ভারতের শোষণ, ভারতের শোষণের অবর্তমানে পাকিস্তানের শোষণ, পাকিস্তানের শোষণের অবর্তমানে গণতান্ত্রিক যালিম শাসকদের শোষণ। শুধু একের পর এক শাসকের পরিবর্তন হয়েছে এবং যুলুমের ধরণ পরিবর্তন হয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। এদেশবাসী কখনও তাদের কাঙ্খিত ইনছাফ বা সু-শাসন পায়নি; বরং একের পর যুলুম-নির্যাতনের যাতাকলে নিষ্পেষিত হয়েছে এবং হচ্ছে। আর এটাই স্বাভাবিক। কারণ এদেশবাসী অনেক বড় একটা ভুল করেছে। আর তা হচ্ছে- তারা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশিত শাসনব্যবস্থা ‘খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক’ বাদ দিয়ে কাফিরদের প্রবর্তিত শাসন ব্যবস্থা গণতন্ত্রকে আঁকড়িয়ে ধরেছে। অথচ গণতেন্ত্রর অপর নাম হচ্ছে যুলুমতন্ত্র। তারা যতদিন পর্যন্ত এ যুলুমতন্ত্রকে আঁকড়িয়ে ধরে রাখবে, ততদিন পর্যন্ত যুলুম-নির্যাতনের যাতাকলে নিষ্পেষিত হতেই থাকবে। তাই দেশবাসী সকলের উচিত হারাম গণতন্ত্র বাদ দিয়ে ‘খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক’ উনার জন্য কোশেশ করা। তবেই তারা প্রকৃত শান্তি ও ইনছাফ লাভ করতে পারবে। কারণ খিলাফতের অপর নাম শান্তি ও ইনছাফ। খিলাফত ক্বায়িম হওয়ার অর্থ হলো দুনিয়ার যমীনটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া। এ প্রসঙ্গে দ্বিতীয় খলীফা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার মশহূর ক্বওল শরীফ- “আমার খিলাফতকালে সুদূর ফুরাতের তীরে যদি একটি কুকুরও না খেয়ে মারা যায়, তাহলে এজন্য আমাকে কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট জবাবদিহি করতে হবে।” সুবহানাল্লাহ!
এর মানে বুঝা গেলো যে, উনার খিলাফত কালে মানুষ এবং জিন তো পূর্ণ নিরাপত্তা, পূর্ণ শান্তি, পূর্ণ ইতমিনান পেয়েছিলোই; শুধু তাই নয়, এমনকি পশু-পাখীরাও পেয়েছে পূর্ণ নিরাপত্তা, পূর্ণ শান্তি, পূর্ণ ইতমিনান। উনার খিলাফত কালে মানুষ তো দূরের কথা কোনো পশু-পাখিও না খেয়ে মারা যায়নি। সুবহানাল্লাহ!
তৃতীয় খলীফা, আমীরুল মু’মিনীন হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে মুসলমান উনারা এতো অধিক সুখ-শান্তি, আরাম- আয়েশ, স্বচ্ছলতা ও প্রাচুর্যতার মধ্যে ছিলেন যে, তখন যাকাত গ্রহণ করবেন এমন কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যেতো না।
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, “তখন মুসলমান উনাদের এতো অধিক স্বচ্ছলতা ছিলো যে, উনারা পৃথিবীর সবচেয়ে দামী কাপড়, কাত্তানের কাপড় দিয়ে নাক মুবারক পরিষ্কার করতেন।” সুবহানাল্লাহ!
এর নামই খিলাফত। সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আস সাফফাহ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যদি এই দেশে ইনছাফ প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাহলে সোনার বাংলাকে স্বর্ণ দ্বারা পরিপূর্ণ করে দেয়া সম্ভব।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “এই দেশে কোনো কিছুর অভাব নেই। অভাব হচ্ছে শুধু ইনছাফগার শাসকের। বাংলাদেশে যেই সম্পদ রয়েছে তার যথাযথ ব্যবহার করলে, বাংলাদেশের মানুষ টাকার উপর গড়াগড়ি করতে পারবে, টাকার উপর ঘুমাতে পারবে এবং স্বর্ণের পাত বিছিয়ে তারা শয়ন করতে পারবে।” সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অর্থই হলো পৃথিবীটা জান্নাতে পরিণত হয়ে যাওয়া। সুবহানাল্লাহ! তাই এদেশবাসী যদি যুলুম-নির্যাতনের যাতাকলে নিষ্পেষণ থেকে চির তরে মুক্তি পেতে চায় এবং প্রকৃত শান্তি, ইনছাফ ও সমৃদ্ধি লাভ করতে চায়, তাহলে সবার দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে ইহুদী-নাছারাদের প্রবর্তিত হারাম গণতন্ত্র বাদ দিয়ে খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্ মুবারক উনার জন্য কোশেশ করা এবং ১০ম খলীফা হযরত আস সাফফাহ্ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) উনার নীচে জমায়েত হওয়া।
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে ক্ববূল করুন। আমীন!
মুহাদ্দছি মুহম্মদ মুঈনুদ্দীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৫)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মুহব্বত ঈমান, আর উনাদের সমালোচনা করা লা’নতগ্রস্ত হওয়ার কারণ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন (৪)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)