মহিলাদের পাতা
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ১২ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১২ হাদি আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১১ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রি:, ২৮ চৈত্র, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
(ধারাবাহিক)
হযরত আবুল বাশার আদম আলাইহিস সালাম উনার থেকে শুরু করে যারা জমিনে এসেছেন তাদের মধ্যে একমাত্র হযরত আবুল বাশার আলাইহিস সালাম তিনিই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতী হাতে তৈরী। উনার পর থেকে যারা এসেছেন তাদের প্রত্যেকেরই পিতা-মাতা রয়েছে। অবশ্য হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম তিনি এর ব্যতিক্রম এবং হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কেবল মাতা ছিলেন, কিন্তু পিতা ছিলেন না।
পিতা-মাতার হক্ব আদায় করার দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রত্যেক সন্তানেরই। যে যতটুকু হক্ব আদায় করবে সে ঠিক ততটুকুই ফায়দা হাছিল করবে।
এ প্রসঙ্গে বলা হয় যে, হযরত ওয়ায়িছ আল কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি, যার শানে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন- خَيْرُ التَّابِعِيْنَ “তিনি উত্তম তাবেঈন”।
তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পর শ্রেষ্ঠ মর্যাদা অর্জন করেছেন। যেমন বলা হয়-
اَفْضَلُ النَّاسِ بَعْدَ الْاَنْبِيَاءِ حَضْرَتْ اَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيْقُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَاَفْضَلُ النَّاسِ بَعْدَ اَصْحَابِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرُ التَّابِعِيْنَ اَلْوَيْسُ الْقَرْنِى رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ
নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হচ্ছেন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি। এজন্য উনাকে আফদ্বালুন নাস বলা হয়ে থাকে। ঠিক তদ্রুপ বলা হয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পরে শ্রেষ্ঠ মানুষ হচ্ছেন হযরত ওয়ায়িছ আল কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ” সুবহানাল্লাহ!
যাকে খইরুত তাবেয়ীন বলা হয়েছে। যাঁর সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন যে, আমি ইয়েমেন থেকে (ইয়েমেনের একটা প্রদেশের নাম হচ্ছে “করন”। এছাড়া হযরত ওয়ায়িছ আল কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দাদার নাম ছিলো “করন”। সেই হিসেবে উনাকে কারনী”, ওয়ায়িছ আল কারনী বলা হতো। ) মহান আল্লাহ পাক উনার ঘ্রাণ পাই। ” অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতের ঘ্রাণ পাই। সেই হযরত ওয়ায়িছ আল কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে উনার দাঁন্দান মুবারকগুলি ভেঙ্গে ফেলেছিলেন কিন্তু উনি সাক্ষাত করতে পারেননি।
কিতাবে উল্লেখ করা হয়, হযরত ওয়ায়িছ আল কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একবার এসেছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাক্ষাত করার জন্য। কিন্তু উনার মা বলে দিয়েছিলেন তুমি সরাসরি দীদার মুবারক লাভের জন্য উনার হুজরা শরীফে যাবে। যদি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাৎ না পাও তাহলে ফিরে আসবে।
হযরত ওয়ায়িছ আল কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এসে সাক্ষাৎ না পেয়ে ফিরে গিয়েছেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বাইরে কোথাও ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন উনার ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করলেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা তখন বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! হযরত ওয়ায়েছ আল কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যদি আপনার এত মুহব্বতের দাবীদার হয়ে থাকেন অথবা উনার অন্তরে যদি এত মুহব্বত থেকেই থাকে তাহলে তিনি কেন আপনার সাক্ষাতে আসেন না?
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন যে, দেখুন, উনার মুহব্বত রয়েছে সত্যিই, তবে তিনি আসতে পারেন না, আমার এখানে আসতে উনার একটা বাধা রয়েছে। উনার মুহব্বত রয়েছে সত্যিই তবে তিনি আসতে পারেন না, তার একটা কারণ রয়েছে। সেটা হচ্ছে উনার মা রয়েছেন। মায়ের খিদমত করার মতো আর কোন মানুষ নেই। একমাত্র উনি রয়েছেন। তিনি যদি চলে আসেন তাহলে উনার মা কষ্ট পাবেন। একমাত্র মায়ের সন্তুষ্টি ও খিদমতের জন্য তিনি আমার সাক্ষাতে আসতে পারতেছেন না।
যার কারণে উনার মা উনার জন্য দোয়া করেছেন। উনার মা যে দোয়া করেছেন, সেই দোয়ার বদৌলতে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ফযীলত দিয়েছেন, বুযুর্গী, সম্মান দিয়েছেন। যার কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও উনার সম্পর্কে বলে গেছেন এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকেও বলেছেন, যদি কখনও উনার সাক্ষাত পান তবে উনার কাছে দোয়া চাবেন।
বলা হয়, পরবর্তীতে উনি হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার যামানায় বা খিলাফতকালে উনার সাথে সাক্ষাত করতে এসেছিলেন। এসে উনি কুফাতে অবস্থান করতেছিলেন। অতঃপর হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সাথে উনি সিফ্ফীনের যুদ্ধে শরীক হয়ে শাহাদাৎ বরণ করেন। হযরত ওয়ায়িছ আল কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মায়ের খিদমতগার ছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক করেছেন, সাক্ষাত মুবারক না করা সত্তে¦ও। সুবহানাল্লাহ!
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহিলাদের জন্য হাত, পা ও চেহারা আবৃত করে ঘর থেকে বের হওয়া ফরজ। খোলা রেখে বের হওয়া হারাম, জায়েয বলা কুফরী (৯)
২৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত মীলাদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক
২৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উত্তম মেয়ে বা মহিলা কারা
২৫ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র দরুদ শরীফ পাঠকারীর জন্য রয়েছে বেমেছাল নিয়ামত মুবারক
২৫ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু মুজাদ্দিদে আযম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক শানে: কুল কায়িনাতের সকলের জন্য তিনি উসওয়াতুন হাসানাহ
২৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত পরিচিতি মুবারক
২৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
২৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র, সর্বশ্রেষ্ঠ ছদকায়ে জারিয়া
২২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হাশরের ময়দানে যে ৫টি প্রশ্নের উত্তর দিতেই হবে
২২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বেমেছাল মহাসম্মানিত শান মুবারক উনার অধিকারী হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা
২১ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দুনিয়ার লোভ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়
২০ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত মীলাদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক
১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)